অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং ধসে সিরিজে ফিরলো ইংল্যান্ড

১৪৯ রানে ৮ উইকেট পতনের পর দুই টেল-এন্ডার স্যাম কারান-আদিল রশিদের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ২৩১ রানের পুঁজি পায় স্বাগতিক ইংল্যান্ড। ২৩২ রানের লক্ষ্য স্পর্শ করতে ৩০ দশমিক ৪ ওভারে ২ উইকেটে ১৪৪ রান করেও ফেলে অস্ট্রেলিয়া। অর্থাৎ, শেষ ১১৬ বলে ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ৮৮ রানের প্রয়োজন ছিলো অসিদের। এই সহজ কাজটাই করতে পারলো না অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ড পেসারদের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে ২০৭ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা। ফলে ২৪ রানে দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে সিরিজে সমতা আনলো ইংল্যান্ড। তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা বিরাজ করছে। সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ১৯ রানে জিতেছিলো অস্ট্রেলিয়া।
ম্যানচেষ্টারে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। ২৯ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের বিদায়ে দলের হাল ধরেছিলেন জো রুট ও অধিনায়ক ইয়োইন মরগান। জুটিতে ৬১ রানের বেশি করতে পারেননি তারা। রুট-মরগানের জুটিটি ভাঙ্গেন অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার এডাম জাম্পা। ৭৩ বলে ৩৯ রান করে জাম্পার প্রথম শিকার হন রুট।
দলীয় ৯০ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে রুটের বিদায়ের পর ১৪৯ রানে অষ্টম উইকেট হারিয়ে মহাবিপদে পড়ে ইংল্যান্ড। জশ বাটলার ৩, মরগান ৫২ বলে ৪২, স্যাম বিলিংস ৮, ক্রিস ওকস ২৬ রান করে ফিরেন।
৪১তম ওভারে অষ্টম উইকেট পতনে দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃস্টি হয় ইংল্যান্ডের। কিন্তু কারান-রশিদ ব্যাট হাতে চমক দেখান। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের উপর পাল্টা আক্রমন করেন তাদের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরান কারান-রশিদ।শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৩১ রানের সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা।
নবম উইকেটে ৫৭ বলে ৭৬ রান যোগ করেন কারান ও রশিদ। কারান ৫টি চারে ৩৯ বলে ৩৭ এবং রশিদ ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৬ বলে অপরাজিত ৩৫ রান করেন। অস্ট্রেলিয়ার জাম্পা ৩টি ও মিচেল স্টার্ক ২টি উইকেট নেন।
২৩২ রানের টার্গেটে শুরুতে বিপদে পড়ে অস্ট্রেলিয়াও। ৩৭ রানে ২ ব্যাটসম্যান প্যাভিলিয়নে ফিরেন। ডেভিড ওয়ার্নার ৬ ও মার্কাস স্টয়নিস ৯ রান করে ফিরেন। দু’জনই ইংল্যান্ডের পেসার জোফরা আর্চারের শিকার হন। আর্চারকে খেলতে হিমশিম খেয়েছেন ওয়ার্নার। টি-২০ সিরিজে দু’বার ও ওয়ানডেতে দু’বার আর্চারের শিকার হলেন তিনি। এই সিরিজেই নয়, আগ থেকেই আর্চার ভীতি ওয়ার্নারের। এখন পর্যন্ত ১১ ইনিংসে মোট ৭বার আর্চারের শিকার হলেন ওয়ার্নার।
শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়েছেন অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ও মার্নাস লাবুশেন। ১৩৯ বলে ১০৭ রানের জুটি গড়ে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের ভীত গড়ে দেন তারা। ৩১তম ওভারের পঞ্চম বলে লাবুশেনকে আউট করে জুটি ভাঙ্গেন ওকস। ৩টি চারে ৪৮ রান করেন তিনি।
এরপরই তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন-আপ। ১৪৫ রানেই মিচেল মার্শ-ফিঞ্চ, ১৪৭ রানে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বিদায়ে ৬ উইকেটে ১৪৭ রানে পরিণত হয় অসিরা। ২১ বলের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে আর ঘুড়ে দাঁড়াতে পারেনি সফরকারীরা। এরমধ্যে ওকসেরই ছিলো ৩ উইকেট, অন্যটি আর্চারের।
উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি এক প্রান্ত আগলে শেষ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সফল হতে পারেননি তিনি। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তিনি। ৮ বল বাকী থাকতে ২০৭ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া।
অসিদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৩ রান করেন অধিনায়ক ফিঞ্চ। ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ১০৫ বলে নিজের ইনিংসটি সাজান ফিঞ্চ। ইংল্যান্ডের ওকস-আর্চার-কারান ৩টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন আর্চার।
আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (টস-ইংল্যান্ড) :
ইংল্যান্ড : ২৩১/৯, ৫০ ওভারে (মরগান ৪২, রুট ৩৯, কারান ৩৭, রশিদ ৩৫*, জাম্পা ৩/৩৬)।
অস্ট্রেলিয়া : ২০৭/১০, ৪৮.৪ ওভার (ফিঞ্চ ৭৩, লাবুশানে ৪৮, ওকস ৩/৩২)।
ফল : ইংল্যান্ড ২৪ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : জোফরা আর্চার (ইংল্যান্ড)।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা।

আজকের বাজার