আমিরাতে বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধের ৫ বছর

মনিরুজ্জামান
বাংলাদেশিদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা বন্ধের ৫ বছর হয়েছে শনিবার। বিগত ২০১২ সালের ১২ আগস্ট বাংলাদেশের অন্যতম এ শ্রমবাজার বন্ধ হয়।

শুরু থেকে শ্রম মন্ত্রণালয়ের ভিসা বন্ধ থাকলেও এতোদিন দেশটিতে অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের ‘পার্টনার’ ভিসা খোলা ছিল। কিন্তু এখন এ সুযোগ রয়েছে শুধু আজমান প্রদেশে। বাকি বাকি ৬টি প্রদেশে বন্ধ হয়েছে পার্টনার ভিসাও। আর একটি পার্টনার ভিসা করতে বাংলাদেশের ৮-১০ লাখ টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে।

দীর্ঘ অপেক্ষার পরও ভিসা দুয়ার তো খোলেনি উল্টো সব সম্ভানার দুয়ারও বন্ধ হচ্ছে। শ্রম ভিসা বন্ধ থাকলেও খোলা ছিল অভিবাসান মন্ত্রণালয়ের অধীনে সব ভিসা।

২০১৪ সালের জানুয়ারিতে আমিরাত সরকার এক বার্তায় বাংলাদেশিদের ‘অপরাধে জড়িত’ থাকার অভিযোগ তোলে। একই সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসার পরও ভিসার দুয়ার খোলেনি।

যদিও বাংলাদেশি প্রবাসীদের অভিযোগ, অন্যদেশের লোকেরা বাংলাদেশিদের চেয়ে বেশি অপরাধে জড়িত। কিন্তু ¯্রফে বাংলাদেশিরা অপরাধে জড়িত অভিযোগের প্রতিবাদ না করে নিজের দায় এড়াতে চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার। আসলে কূটনৈতিক কারণেই ভিসা খুলছে না।
চলতি বছরের মে মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী। তিনি কিছুটা আশার কথা শুনিয়েছিলেন।
স্থানীয় দূতাবাসের সমাবেশে মন্ত্রী বলেছিলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে ইতিবাচক খবর আসবে। সপ্তাহের মধ্যে খুলবে ভিসা। মন্ত্রী চলে গেলেন তিন মাস হয়ে গেল। কিন্তু কোনো সুখবর নেই।

শারজাহ’র নির্মাণশ্রমিক মাসুদ আহমদ বলেন, বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধ থাকায় এখানকার সব কোম্পানি বাংলাদেশিদের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে আমাদের জুলুম করছে। বেতন বাড়ায় না। অন্যদের বাড়ায়। আমরা বাড়ানোর কথা বল্লে ক্যান্সেলে চলে যেতে বলে। চলে গেলে আমার পরিবারকে কী খেয়ে বাঁচবে।

আবুধাবিতে কারখানা শ্রমিক মনসুর আলম বলেন, সরকারের কাছে অনুরোধ নতুন ভিসা খোলার দরকার নেই। আমরা যারা এখানে আছি তাদের কথা ভেবে অন্তত ভিসা ট্যান্সফারের ব্যবস্থা করা হোক।

শুধু এইটুকুই নয়, এখানকার স্থানীয় গণমাধ্যমেও আছে বাংলাদেশিদের নিয়ে বৈষম্য।

আফজাল সাদেকীন নামে দুবাই প্রবাসী বলেন, পাকিস্তানি, ভারতীয় কেউ অপরাধ করলে শিরোনাম হয় ‘এশিয়ান গ্রেপ্তার’ কিন্তু এখানে বাংলাদেশি কেউ গ্রেপ্তার হলে ‘বাংলাদেশি গ্রেপ্তার’ শিরোনাম হয়।

রেমিটেন্স খাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীরা একসময় শীর্ষে ছিলেন। কিন্তু ভিসা জটিলতায় শ্রমবাজারের সাথে সাথে রেমিটেন্স হারাচ্ছে বাংলাদেশ। এ ব্যাপারে কূটনৈতিক উদ্যোগ জোর না হলে শ্রমবাজার চিরতরে বন্ধ হয়ে যেতে পারে আমিরাতে।

আজকের বাজার: আরআর/ ২৭ আগস্ট ২০১৭