কৃষিতে ব্যাপক সম্প্রসারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে : কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, কৃষিতে ব্যাপক সম্প্রসারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, “করোনা ভাইরাসের কারণে পৃথিবীতে যদি খাদ্য সংকটের সৃষ্টি হয় তাহলে অনেক দেশে দুর্ভিক্ষ হবে। কাজেই তারজন্য এখন থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগামী আউশ, পাট, গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি এবং পরবর্তী আমন, রবি ফসল, ভূট্টা, শাকসবজি, আলুসহ সবকিছুর জন্যই আমরা ব্যাপক সম্প্রসারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছি।”
আব্দুর রাজ্জাক শুক্রবার দুপুরে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে কৃষকদের মাঝে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে সব সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষকদের পাশে থাকেন। এ কারণেই সরকার কৃষিকে যান্ত্রিকরণের উদ্যোগ নিয়েছে। ধান কাটা, মাড়াই, শুকানো এবং লাগানোসহ সব কিছুই যন্ত্রের মাধ্যমে করা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, কৃষির সকল যন্ত্র বিদেশ থেকে আনা হচ্ছে। কৃষির সবকিছুকেই বাণিজ্যিক ও লাভজনক করা হবে।।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, গত বছর সরকার মাত্র ৪ লাখ টন ধান কিনেছিল। এ বছর সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, খাদ্য মন্ত্রণালয় ৮ লাখ টন খাদ্য সরবরাহ করবে। লটারির মাধ্যমে প্রান্তিক চাষীদের কাছ থেকে এই ধান কেনা হবে। তাতে বাজারের উপর একটু প্রভাব পড়বে। প্রয়োজনে সরকার ৮ লাখ টনকে বাড়িয়ে বেশি ধান কেনার চেষ্টা করবে।
কৃষকরা এবার মোটামুটি ন্যায্য দাম পাবে আশা প্রকাশ করে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই কর্মসুচি নেয়া হয়েছে বাংলাদেশের কৃষিকে যান্ত্রিকরণ করার জন্য। আমরা একটি প্রজেক্ট দিয়েছি, এই প্রজেক্টটি ৩ হাজার ২শ’ কোটি টাকার। আমরা আগামী বছর বিপুল পরিমানে কম্বাইন হারভেস্টার দিতে পারবো। উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদ করা, অর্থকরী ফসল আবাদ করা, শাক, সবজি, ফলমূল এসব ফলনে মানুষ বেশি লাভবান হয়। তাই সেগুলোর দিকে আমরা ঝুঁকেছি।’
মন্ত্রী বলেন, বর্তমান করোনা দুর্যোগে কৃষকদের পাশে রয়েছে সরকার। করোনার কারণে শ্রমিক সংকটে থাকা কৃষকদের জমির পাকা ধান যাতে ঘরে তুলতে সমস্যা না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারাদেশে আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কেটে দিচ্ছেন।
সরকারী উদ্যোগে ভর্তৃকি মুল্যে কৃষকদের কম্বাইন হারভেষ্টার মেশিন দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামীতে হারভেষ্টার মেশিনের পরিমান আরো বাড়ানো হবে। করোনা দুর্যোগে লকডাউনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে তাদের সাহায্য সহযোগিতা করা হচ্ছে। কৃষকরা যাতে ধানসহ উৎপাদিত সকল ফসলের ন্যায্য মুল্য পায় তার ব্যবস্থা করবে সরকার।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমান করোনা দুর্যোগে সকল শ্রেনীর মানুষের পাশে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে সারাদেশে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত আছে। দেশের কোন মানুষ না খেয়ে থাকবে না।
মধুপুর উপজেলা মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম খান আবু, টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খন্দকার শফি উদ্দিন মনি এবং মধুপুর পৌরসভার মেয়র মাসুদ পারভেজ।
পরে মন্ত্রী মধুপুর পৌরসভা প্রাঙ্গণে কর্মহীন গরীব ও দুস্থদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন।