কোটা পদ্ধতি বাতিল, এটা আমার পরিষ্কার কথা: প্রধানমন্ত্রী

কোটা নিয়ে যখন এতকিছু, তখন কোটাই থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীদের বিশেষ বিবেচনায় চাকরি দেওয়া হবে, চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিল। আজ বুধবার জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগদলীয় সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা পদ্ধতি বাতিল, এটা আমার পরিষ্কার কথা। যাতে কারো কোনো সমস্যা না হয়, বারবার যেনো রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন না হয়, বারবার যাতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ না হয়, সেটা বন্ধ করতে আমি এই কোটা পদ্ধতি বন্ধই করে দিতে চাই।

এসময় কোটা সংস্কার নিয়ে চলমান আন্দোলনের তীব্র সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আন্দোলনের নামে যা হচ্ছে তা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। কেউ যদি কোটা না-ই চায়, তাহলে কোটা আমরা বন্ধ করেই দেই।

স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশা করি এতে আপনার আপত্তি থাকার কথা নয়। এ সময় কোটা পদ্ধতি সংস্কারে আন্দোলনকারীদের ক্লাসে ফিরে যেতে বললে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উল্লেখ, কোটা সংস্কার দাবিতে রোববার দুপুরে পূর্বঘোঘিত গণপদযাত্রা শেষে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। পরে রাত ৮টার দিকে তাদের ওপর পুলিশ চড়াও হলে সংঘর্ষ শুরু হয়। সোমবার সকাল পর্যন্ত পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থী আহত হন। এছাড়া শতাধিক আন্দোলনকারীকে আটক করা হয়।

ওই দিন বিকালে সরকারি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে চাকরিতে বর্তমান কোটা পদ্ধতি ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষায়; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাসে আন্দোলন ৭ মে পর্যন্ত স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে আসা কমিটি।

কিন্তু ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সরকারের অস্পষ্ট আশ্বাসে’ আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। তারা কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।

অর্থমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের পর কোটা সংস্কারে প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আগের মতো আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যেতে মঙ্গলবার ফের ঐক্যবদ্ধ ঘোষণা দেয় আন্দোলনকারীরা।

কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা আসতেই হাজার হাজার শিক্ষার্থী ফের রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হতে থাকেন। নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাত ৯টা পর্যন্ত মিছিল আর স্লোগানে তারা গোটা ক্যাম্পাস মুখরিত করে রাখেন।

বুধবারও চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকলে রাজধানী ঢাকাসহ গোটা দেশ কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে।

আজকেরবাজার/এস