খুলনায় একদিনে ৩ ধর্ষণ, অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন

খুলনা মহানগরীর খালিশপুরে চতুর্থ শ্রেণির দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার মাহেন্দ্র চালক হিরু মৃধা (৫০) বাস্তুহারা কলোনী এলাকার মজিদ মৃধার ছেলে।

মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে সোমবার রাতে তার বিরুদ্ধে খালিশপুর থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়। ধর্ষণের শিকার ছাত্রীদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়েছে।

অপরদিকে খুলনা মহানগরীর মোহাম্মদনগর এলাকায় তিন বছরের শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার মো. ইউনুস মোল্লা (৪০) মোহাম্মদনগর শোভা গলিতে ভাড়া বাসায় থাকেন।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

জানা যায়, ২৫ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে শিশুটি মোহাম্মদনগরে একটি চায়ের দোকানে মায়ের কাছে বসে খেলা করছিল। এ সময় ইউনুস মোল্লা শিশুটিকে নিয়ে ঘুরে আসার কথা বলে তার বাসায় নিয়ে যায়। পরে রাত ৯টার দিকে তাকে মা-বাবার কাছে দিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে শিশুটি কান্নাকাটি করতে থাকে। তার মাকে বলে কাকু আমাকে ব্যথা দিছে। এ ঘটনা এলাকাবাসীদের জানালে তারা ইউনুস মোল্লাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে।

এদিকে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা।

খালিশপুর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক গোলাম মোস্তফা জানায়, বিভিন্ন সময় খাওয়ার লোভ ও ভয় দেখিয়ে দুই ছাত্রীকে আলাদাভাবে ধর্ষণ করত হিরু মৃধা। সোমবার রাতে বিষয়টি এক ছাত্রী তার মাকে জানালে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে খালিশপুর থানায় মামলা হলে পুলিশ হিরুকে গ্রেপ্তার করে। আর মোহাম্মদনগরে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে ধর্ষক ইউনুস মোল্লাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে লবণচরা থানায় মামলা দায়ের করেন।

নারী নেত্রী অ্যাডভোকেট শামিমা সুলতানা শিলু বলেন, ‘একটি ঘটনারও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে অপরাধ প্রবণতা কমে যেত। কিন্তু মামলার দীর্ঘ সূত্রিতা ও বিশেষ করে বস্তি এলাকার অভিভাবকরা সচেতন না থাকায় ওই পরিবারের দুঃখজনক ঘটনা ঘটছে।’

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘খুলনায় মাদক, অশ্লীলতার সংস্কৃতি ও সামাজিক অবক্ষয় অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। সেই সাথে রয়েছে মামলার দীর্ঘ সূত্রিতায় অপরাধ করার পরও শাস্তি না হওয়া।’

এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন আরও দৃঢ় করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।