খুশি মনে কর্মস্থলে খাবার পৌঁছে দেয়াই তাদের কাজ

প্রতিদিন মানুষকে জীবন-জীবিকার তাগিদে কর্মস্থলে ছুটতে হয় এবং ব্যস্ত সময়ের মধ্যেই নিয়ম করে খাবার খেতে হয়।

যারা সাথে করে খাবার নিয়ে আসেন তাদের দুপুরে খাবারের জন্য চিন্তা করতে হয় না। আবার ব্যস্ততার কারণে যারা বাড়ির রান্না করা খাবার সাথে আনতে পারেন না তাদেরকে হোটেলের খাবারের ওপর নির্ভর করতে হয়। এতে শারীরিক-অর্থনৈতিক দুটোই ক্ষতি। তাই দুপুরের খাবার নিয়ে একরকম সমস্যায় থাকেন কর্মজীবীরা।

এই সমস্যা সমাধানে বেশ কিছুদিন ধরে বাড়িতে রান্না করা প্রিয়জনদের খাবার কর্মস্থলে পৌঁছে দিচ্ছে কিছু এজেন্সি। তাদেরকে মাস শেষে কিছু টাকা দিলেই হয়। শুধু এজেন্সি না, ব্যক্তি উদ্যোগেই এখন অনেকেই এ কাজটি করছেন।

প্রথম দিকে রাজধানীতে এ ব্যবস্থা শুরু হলেও আস্তে আস্তে তা অন্য শহরে ছড়িয়ে পড়ছে। যশোরও এই সেবা থেকে বাদ পড়েনি। অফিসপাড়া বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুপুরের আগেই পৌঁছে যাচ্ছে খাবারের ভ্যান। নাম খাবারের গাড়ি। যে গাড়িতে সাজানো আছে সারিসারি খাবারের টিফিন বক্স। নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিনিময়ে এমন সেবা দিচ্ছেন তারা।

যশোর শহরের শংকরপুর, বিরামপুর, শহরতলীর ভেকুটিয়া, নওদাগাঁর কয়েকজন বেশ কয়েক বছর আগে এই কাজ শুরু করেন। রোজগারের পাশাপাশি সেবা দেয়ার মানসিকতা নিয়ে তারা এ কাজে নামেন। রোদ, বৃষ্টি, ঝড়, শীত উপেক্ষা করে তাদের এ কাজ করতে হয়।

বেলা ১১টা বাজার সাথে সাথে তারা শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন বাসা এবং বাড়ি থেকে খাবার ভর্তি টিফিন বক্স সংগ্রহ করে নেন। দুপুর ২টার আগেই অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেন।

ভেকুটিয়ার আলী হোসেন প্রায় বছর দুয়েক আগে খাবার পৌঁছানোর কাজ শুরু করেছেন। প্রতিদিন নির্দিষ্ট জায়গায় ৫০-৬০টি খাবারের বাটি পৌঁছে দেন। সেবা গ্রহীতার কাছ থেকে মাসে ২৫০-৩০০ টাকা করে নেন। ভেকুটিয়া, বড় ভেকুটিয়া, সুজলপুর, কদমতলা, খোলাডাঙ্গার বিভিন্ন বাড়ি ও বাসা থেকে খাবার সংগ্রহ করে পৌঁছে দেয়া অনেকটা কষ্ট হলেও বাড়িতে রান্না করা খাবার পৌঁছে দিতে পেরে দারুণ খুশি আলী হোসেন।

আলী হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন ৫০-৬০টি বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আবার তা পৌঁছে দেয়া কষ্টকর।’

বিরামপুরের নুরু মিয়া বলেন, ‘ব্যস্ততা থাকলেও এ কাজের মধ্যে এক রকম মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়।’

আলী হোসেন, নুরু মিয়ার মতো শাহীন আলম, আব্দুল আলী সবাই প্রায় একই কথা বলেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে খাবার সংগ্রহ করে শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, পৌর হকার্স মার্কেট, ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন অফিস, মাইকপট্টির বিভিন্ন দোকান, আদ-দ্বীন হাসপাতালসহ শহরের বিভিন্ন মার্কেটে পৌঁছে দেয়া হয়।

সেবা গ্রহীতা ব্যবসায়ী আব্দুল্লা আল মামুন জানান, বাড়িতে রান্না করা এসব খাবার তৃপ্তি সহকারে খেয়ে সুস্থভাবে কাজ করা যায়। শরীর খারাপেরও আশঙ্কা থাকে না।

তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/শারমিন আক্তার