টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য পাঁচটি বিষয়ের ওপর আইএমএফ’র গুরুত্বারোপ

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং বর্তমান অবস্থা থেকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে পাঁচটি বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।

ঢাকায় আইএমএফ’র আবাসিক প্রতিনিধি রাজনার গুডম্যানস শুক্রবার এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বার্তা সংস্থা বাসসকে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য, উচ্চ, টেকসই, সামান্য অস্থিতিশীল এবং সামাজিক সূচকের উন্নতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সবোর্চ্চ অবদানকারী বিশ্বের বিশটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এখন শীর্ষে রয়েছে।

তিনি বলেন, আর্থিক অথবা মুদ্রা নীতির ক্ষেত্রে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা দৃঢ় হয়েছে। তিনি বলেন, নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে এবং ২০২৪ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশের মযার্দা লাভে এ বিষয়গুলোর ওপর আরো গুরুত্ব দিতে হবে।

আবাসিত প্রতিনিধি বলেন, কেউ যাতে পিছিয়ে না পড়ে, এ জন্য প্রথমে বাংলাদেশকে ইনক্লুসিভ এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহে আরো গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি বলেন, ব্যয়ে দক্ষতা বিশেষ করে সরকারি বিনিয়োগকৃত প্রকল্পের অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে আরো সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। তিনি জানান, এসক্ষমতা অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঘাটতি ৫৪ শতাংশ। অন্যান্য উদীয়মান দেশ এবং উন্নয়নশীল এশীয় দেশসমূহে এ অবস্থা গড়ে ৩৪ শতাংশ।

আইএমএফ ঢাকা প্রতিনিধি বলেন, বাংলাদেশকে সামাজিক খাতে বিশেষ করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বাড়াতে হবে। এই ব্যয় বৃদ্ধি শুধু দেশের ফিজিক্যাল ক্যাপিটালের জন্যই নয়, দেশের মানব সম্পদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, দেশে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে এবং দেশের উচ্চাভিলাষী উন্নয়ন লক্ষে পৌঁছুতে আরো অর্থ সংগ্রহ করতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়নে ৮৫ শতাংশ অর্থ সংগ্রহ করতে হবে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এবং এরমধ্যে ৪০ শতাংশই আসতে হবে বেসরকারি খাত থেকে।

রফতানি বহুমুখীকরণ করা ছাড়া খুব কম দেশের অগ্রগতি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশসমূহের বাজারে বাংলাদেশের প্রবেশের ক্ষেত্রে রফতানি বহুমুখীকরণের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

আইএমএফ প্রধান বলেন, বাংলাদেশে পরিবহন ও জ্বালানী সেক্টরে আরো বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্টের ক্ষেত্রে অধিক গুরুত্বপূর্ণ উচ্চমূল্য সংযোজন উৎপাদনে। তবে সরকারি অর্থ ব্যয়ে আরো বেশি দক্ষতার প্রয়োজন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে সোলার পাওয়ারসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানী সংগ্রহ এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে স্বল্প খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে, যাতে স্বল্পমূল্যে জলবিদ্যুৎ আমদানি করা থেকে দেশটি সুফল পেতে পারে।

আজকের বাজার/এমএইচ