ঢাকা-দিল্লী যোগাযোগের জন্য যৌথ নদী ব্যবস্থাপনার ওপর বিশেষজ্ঞদের গুরুত্বারোপ

বিশেষজ্ঞরা আজ এখানে এক সেমিনারে বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে অভিন্ন নদ-নদীগুলোর যথাযথ ওয়াটারশেড ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিয়েছেন। শিলং ভিত্তিক এশিয়ান কনফ্লুয়েন্সের নির্বাহী পরিচালক সব্যসাচী দত্ত সেমিনারের অর্থনীতি, সংযোগ এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা বিষয়ক কার্য অধিবেশনে বলেন, ‘…একই নদী, একই জল ও একই মাটি, মূলত আমাদের অভিন্ন পরিবেশ রয়েছে।’

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এবং ভারতীয় হাইকমিশন যৌথভাবে সোনারগাঁও হোটেলে “বাংলাদেশ ও ভারত: একটি আশাব্যঞ্জক ভবিষ্যত” শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নাহিম রাজ্জাক, বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির এবং ভারতীয় পর্যবেক্ষক গবেষণা ফাউন্ডেশনের (ওআরএফ) সিনিয়র ফেলো জয়িতা ভট্টাচার্য অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

সব্যসাচী বলেন, সাধারণ নদীসমূহ হিমালয় অঞ্চল থেকে উদ্ভূত এবং বাংলাদেশ ও ভারতের নিচু এলাকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত। অভিন্ন নদীগুলির যৌথ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিনি বলেন, নদীগুলো উজান থেকে প্রচুর পরিমাণে পাথর বহন করে এবং এ কারণেই সমস্যার সমাধানের জন্য উজান এবং ভাটি উভয় অঞ্চলে হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। ভারত ও বাংলাদেশকে একটি পরিবারের মতো উল্লেখ করে, ভারতীয় বিশেষজ্ঞ বলেন, “(আমাদের মধ্যে ) যোগাযোগ স্থাপনের জন্য আমাদের মন ও হৃদয়ের সংযোগ দরকার।” তিনি ভারতের মেঘালয় রাজ্যে অবস্থিত জলপ্রপাত এবং বাংলাদেশের সিলেটের জলাবদ্ধ বনগুলোর বিষয়ে মনোনিবেশ করে যৌথ ইকোট্যুরিজম চালু করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

নাহিম রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে, তাছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের মধ্যে ঐতিহ্যগতভাবে যোগাযোগ রয়েছে। তিনি আরো বলেন, “সংযোগ স্থাপনে আমাদের একে অপরের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে…একে অপরকে সমর্থন করতে হবে”। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক যোগাযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, চীন বড় ধরণের ভূমিকা পালন করে ও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং এ কারণেই প্রত্যেকেরই চীনের সাথে সম্পর্ক থাকতে হবে। রাজ্জাক ভারতে যৌথ সহযোগিতা এবং যৌথ বিনিয়োগের উপর জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদের জন্য উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্যে বিনিয়োগের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।’ ড. মাহফুজ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্য সম্ভাবনা প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। তাই দু’টি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য যোগাযোগ জোরদার করার জন্য এ বিষয়ে অনুসন্ধান প্রয়োজন। উপকূলীয় শিপিংয়ের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত ২০১৮ সালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য উপকূলীয় শিপিংয়ের বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান