দুর্নীতির অভিযোগে সিইসিসহ সংশ্লিষ্ট কমিশনারদের পদত্যাগ চায় টিআইবি

জাতীয় সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনের জন্য প্রশিক্ষণের নামে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের সংবাদে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সেই সাথে সংস্থাটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ইসির সুনাম ও মর্যাদা পুনরুদ্ধারের স্বার্থে অভিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) অন্যান্য কমিশনার ও পদস্থ কর্মকর্তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ এবং উত্থাপিত অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জবাবদিহি নিশ্চিতের জোর দাবি জানিয়েছে।

মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক ও অন্যান্য পদস্থ কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ‘বিশেষ বক্তা’, ‘কোর্স উপদেষ্টা’ ও ‘কোর্স পরিচালক’ হিসেবে বিপুল অংকের অর্থ ‘সম্মানী’ ও ‘ভাতা’ হিসেবে গ্রহণ করেছেন বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে টিআইবি হতাশ ও উদ্বিগ্ন।

সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সিইসি ও অন্যান্য কমিশনারসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির পদস্থ কর্মকর্তাদের এ ধরনের কার্যক্রম সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অনভিপ্রেত। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে পুরো একটি কমিশনের পদস্থ প্রায় সব কর্তাব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ নজিরবিহীন।

‘এছাড়া, এ ধরনের প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ না করেই সম্পৃক্ততার নামে জনগণের করের অর্থ আদায় একদিকে রীতিমতো আইনের গুরুতর লঙ্ঘন, ক্ষমতার অপব্যবহার ও সুস্পষ্ট দুর্নীতি, অপরদিকে যোগসাজশের মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধা অর্জনের বিস্ময়কর নজির,’ যোগ করেন তিনি।

তার মতে, এ অনৈতিক ঘটনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বালিশ দুর্নীতিকেও ম্লান করে দিয়েছে।

ইসির মতো রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের পদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পুরো কমিশনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে উল্লেখ করে ড. জামান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সাংবিধানিক মর্যাদা পুনরুদ্ধারের স্বার্থে গুরুতর অনিয়ম ও নৈতিক স্খলনের জন্য সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল হিসেবে দায় গ্রহণ করে সিইসি এবং অন্য কমিশনারদের অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত সব অভিযোগের যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে অনিয়ম ও দুর্নীতির জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করা।

সাম্প্রতিক বিভিন্ন নির্বাচনে ইসি জনপ্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, এমন সময়ে কমিশনের কর্তাব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনজনিত এমন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পুরো কমিশনের জন্য আস্থার সংকট আরও ঘনীভূত করল।

‘অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থেই সিইসি এবং কমিশনারদের অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে এবং তদন্তের মাধ্যমে জড়িত প্রত্যেককেই জবাবদিহির আওতায় এনে প্রতিষ্ঠানটির সাংবিধানিক মর্যাদা ও সুনাম পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট হতে হবে,’ যোগ করেন ড. জামান।

আজকের বাজার/লুৎফর রহমান