দেশেই কম্পিউটার, ল্যাপটপ তৈরি করছে ওয়ালটন

মোবাইল ফোনের পর এবার দেশেই কম্পিউটার ও ল্যাপটপ তৈরি শুরু করেছে ওয়ালটন। গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটনের নিজস্ব কারখানায় তৈরি হবে ইন্টেলের সর্বশেষ প্রজন্মের প্রসেসরযুক্ত ল্যাপটপ। উৎপাদন হবে সাশ্রয়ী মূল্যের বিভিন্ন মডেলের ওয়ালটন ডেস্কটপ এবং মনিটর। আগামী ১৮ জানুয়ারি উদ্বোধনের পর তা বাজারে পাওয়া যাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, কম্পিউটার কারখানার উদ্বোধনের ফলে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে দেশ আরো একধাপ এগিয়ে যাবে। সবার হাতে সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের ডেস্কটপ কম্পিউটার এবং ল্যাপটপ তুলে দেয়া সম্ভব হবে। প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষায় জাতি দক্ষ হয়ে উঠবে। বেকার তরুণ-তরুণীরা প্রোগামিং, ওয়েব ডিজাইন, আউটসোর্সিংসহ ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আয়ের পথ খুঁজে নিতে পারবেন।
ওয়ালটন জানায়, কম্পিউটার কারখানার উদ্বোধনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। এরইমধ্যে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। চন্দ্রায় ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজে সুবিশাল এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে এই কারখানা। এখানে রয়েছে ল্যাপটপ ও কম্পিউটার ডিজাইন ডেভেলপ, গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ, মাননিয়ন্ত্রণ বিভাগ ও পরীক্ষাগার। স্থাপন করা হয়েছে বিশ্বের সর্বাধুনিক জাপানি ও জার্মান প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি।
এরইমধ্যে এসএমটি (সার্ফেস মাউন্টিং টেকনোলজি) সিস্টেমের মাধ্যমে পিসিবি (প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড) এর উপর অতি নিঁখুতভাবে সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম পিন বসিয়ে উচ্চ গুণগতমানের পিসিবিএ বা মাদারবোর্ড তৈরি শুরু হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে প্রয়োজনীয় কাঁচামালের পর্যাপ্ত মজুদ।
প্রাথমিকভাবে, এই কারখানায় মাসে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬০ হাজার ইউনিট ল্যাপটপ, ৩০ হাজার ইউনিট ডেস্কটপ এবং আরো ৩০ হাজার ইউনিট মনিটর। পর্যায়ক্রমে কম্পিউটারের অন্যান্য অ্যাক্সেসরিজসহ পেন ড্রাইভ, কিবোর্ড এবং মাউস উৎপাদনে যাবে ওয়ালটন। কারখানাটিতে
এক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ওয়ালটনের সিনিয়র অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও দেশের অভ্যন্তরীণ মানবসম্পদের উন্নয়নে একের পর এক স্বাপ্নিক উদ্যোগ নিচ্ছে ওয়ালটন। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর ওয়ালটন চালু করেছে দেশের প্রথম মোবাইল ফোন উৎপাদন কারখানা। এবার চালু হচ্ছে কম্পিউটার উৎপাদন কারখানা। পর্যায়ক্রমে আরো আইসিটি এবং আইওটি পণ্য উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে ওয়ালটনের।
তিনি বলেন, দেশীয় কম্পিউটার কারখানা গড়ে ওঠায় এ খাতের আমদানি নির্ভরতা হ্রাস পাবে। রপ্তানি থেকেও বিশাল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ব্যাপকভাবে বিকশিত হবে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার শিল্পের। সর্বোপরি, ওয়ালটনের এই কারখানা হবে হাই-টেক শিল্পের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের জন্য একটি বিশাল মাইলফলক।
আজকের বাজার: সালি / ৩১ জানুয়ারি ২০১৮