নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার

বাংলাদেশ জাহাজ শ্রমিক ফেডারেশনের ১৪ দফা ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের ১১ দফা দাবিতে ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে নৌযান শ্রমিকরা। তারা ১১ দফা দাবি আদায়ের আশ্বাসে আজ শনিবার রাতে এক ঘোষণায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন।

শনিবার রাতে শ্রম অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর আগামী মার্চের মধ্যে ১১ দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন লঞ্চ মালিক ও শ্রমিক নেতারা।

কিন্তু আগে কয়েক দফা আশ্বাসের পরও কেন বাস্তবায়ন হচ্ছে না নৌযান শ্রমিকদের দাবিগুলো—তা জানতে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক আশিকুল আলম বলেন।

এর আগে মজুরি বৃদ্ধি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি বন্ধ করাসহ কয়েকটি দাবিতে হাজার হাজার নৌযান শ্রমিক শুক্রবার মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের ৫ নম্বর খেয়াঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্মঘটের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার। আগের আরেকটি মানববন্ধন থেকে ২৯ নভেম্বরের মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়নে আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন নৌযান শ্রমিকরা।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের ঘোষিত ১১ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারীদের খোরাকি ভাতা ফ্রি করতে হবে ও ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা করতে হবে। মাস্টার ড্রাইভারশিপ পরীক্ষায় ও ডিপিডিসি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সব প্রকার অনিয়ম বন্ধ করতে হবে এবং কোর্স চলাকালে শ্রমিকদের ছুটি বাধ্যতামূলক করতে হবে। নৌ শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসালয় করতে হবে। নৌপথে মোবাইল কোর্টের নামে হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নৌ শ্রমিকের মৃত্যু হলে ১২ লাখ টাকা মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

ধর্মঘটের কারণে অভ্যন্তরীণ নৌপথে সকল ধরনের নৌযান চলাচল এবং চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। অভ্যন্তরীণ নৌপথ ও সমুদ্রবন্দরে মালামাল পরিবহন বন্ধ থাকায় ৩০ লাখ টনের বেশি মালামাল বিভিন্নস্থানে আটকা পড়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বিশেষ করে চট্টগ্রাম এবং মোংলা সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম অচল হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্টরা বড় ধরনের অর্থনৈতিক ধাক্কায় পড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া নৌপথে যাত্রী পরিবহনেও দেখা দিয়েছে সংকট। কয়েকজন যাত্রী এমন কথাই বলছিলেন। দেশে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহনের বিরাট একটি অংশ নৌপথের ওপর নির্ভরশীল।

আজকের বাজার/লুৎফর রহমান