পুঁজিবাজারের গতিবিধি নির্ভর করে বড় হোল্ডিংয়ের উপর

পুঁজিবাজারের গতিবিধি নির্ভর করে বড় হোল্ডিংয়ের উপর। প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ভাবনার উপর মার্কেটের গতি প্রকৃতি নির্ভর করে। বাজার সব সময় সাধারণ চিন্তার উল্টো থাকে। ক্লোজিং কোনো বিষয় নয়,শেয়ারের যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে, বিনিয়োগ করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ – দেশের পুঁজিবাজারের বর্তমান প্রেক্ষাপটে মতামত জানতে চাইলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের পরিচালক শাকিল রিজভি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গত ৩০ বছরের অভিজ্ঞতায় এ বছরেই বেশি শুনছি জুন ক্লোজিং-ডিসেম্বর ক্লোজিং নির্ভর করে মার্কেট মুভমেন্ট হচ্ছে না, কেন? আগে কখনো এতো বেশি শুনিনি। ক্লোজিং নির্ভর না হয়ে, বুঝে শুনে কোথায় বিনিয়োগ করলে নিরাপদ, যৌক্তিক ও বেশি লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানেই বিনিয়োগ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। জুন ক্লোজিংয়ে শেয়ারের দামও বাড়তে পারে। তবে ডিসেম্বর ক্লোজিংয়ের সময় শেয়ারের দাম কমতেও পারে, যদি ডিভিডেন্টের সময় অতি মূল্যায়িত হয়।

তিনি আরো বলেন, শেয়ারের প্রাইস যখন কমে যায়, টাকার প্রবাহ তখন সেদিকেই যায়। যে খাতের শেয়ারের দর যখন বেশি কমে, তখন বিনিয়োগ সেই খাতে যায়, এটাই হলো সহজ নিয়ম। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখেছি যারা অধৈর্য কিংবা পেনিকড হয়ে কম দামে শেয়ার বিক্রি করে, তাদের শেয়ারগুলো চলে যায় ধৈর্যশীল বিনিয়োগকারীদের কাছে। এই অস্থিরতার কারণেই মার্কেট এতো উঠা-নামা করে,তাই আতংকিত না হয়ে বুঝে শুনে বিনিয়োগ করে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। মার্কেট উঠানামা, পুঁজিবাজারের এক ধরনের সৌন্দর্য। এটা তো একদরের দোকান নয়, মার্কেটে অস্থিরতা থাকবেই কিন্তু যিনি ধৈর্যশীল এবং যৌক্তিক দামে শেয়ার কিনতে পারবেন, তিনি লাভবান হবেন। যারা না বুঝে তাড়াহুড়া করে, শেয়ার কিনেন তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হন।

তিনি বলেন, অধিকাংশ মানুষেরই দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ করে ডিভিডেন্ড নিবেন এমন মানসিকতা থাকে না। অল্প সময়ের জন্য ট্রেড করতে আসেন তারা। আর তখনই ট্রেন্ড ধরতে না পারলে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলে যান। এ সময় সেল প্রেসার আর দর কমতে থাকে। তখন হতাশ হয়ে কম দামে শেয়ারগুলো, বড় বিনিয়োগকারীর হাতে দিয়ে চলে যান। বেশির ভাগ মানুষ আসে ট্রেড করতে বিনিয়োগের জন্য নয়। ট্রেড করার জন্য অনেক কিছু জানতে হয়,সহজ নিয়ম হচ্ছে, কম দামের সময় শেয়ার কেনা এবং দাম বাড়লে বিক্রি করা। বছরের সর্বনিম্ন দামে কেনা এবং লাভ হলে বিক্রি করা। পুঁজিবাজারে দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগকারীই লাভবান হন আর ডে-ট্রেডাররা ক্ষতিগ্রস্ত হন। শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগের পর অধিকাংশ মানুষের লাভের প্রত্যাশা বেড়ে যায়।

পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করতে কী করা উচিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করতে হলে নতুন বড় কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করতে হবে। বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী নিজের ভুলটা স্বীকার করতে চায় না। ২০ টাকার শেয়ার ২০০ টাকায় কিনে, ভুল করেছে সেটা মানতে চায় না। আবার অন্যদিকে তাকিয়ে সময়ও নষ্ট করে অনেকে। অন্য কারো পোর্টফোলিওর দিকে না তাকিয়ে, জেনে-বুঝে বিনিয়োগ করলে,অবশ্যই ভালো করা সম্ভব। বিনিয়োগে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে, না হলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে বলে মন্তব্য করেন এই অভিজ্ঞ পুঁজিবাজার স্টেক হোল্ডার।