পৃথিবী কি কখনো ‘বেগুনী’ রঙের ছিলো?

পৃথিবীর রংটা কেমন? মহাকাশ থেকে তোলা ছবিতে দেখা যায়, পৃথিবীর বেশিরভাগটাই নীল (পানি) আর কিছু অংশ সবুজ (মাটি ও গাছপালা)। কিন্তু সব সময় পৃথিবীর রং এমন ছিলো না। বরং এক সময়ে পৃথিবীর রংটা ছিলো বেগুনী!

পৃথিবী বেগুনী ছিলো, এই তত্ত্বের অবতারণা করেন মলিকুলার বায়োলজির প্রফেসর শিলাদিত্য দাস শর্মা ও অ্যাস্ট্রোলজিস্ট এডওয়ার্ড শুইটারম্যান। তারা দাবি করেন, পৃথিবীতে এক সময়ে সবুজ ক্লোরোফিলযুক্ত জীবনের অস্তিত্ব ছিল না, বরং আলো থেকে শক্তি তৈরি করতে পারে এমন সব এককোষী জীব ছিল যাদের ওপর আলো পড়লে বেগুনী দেখাতো। পুরো পৃথিবীতে এই জীবের অবস্থান ছিলো বলে পৃথিবীটাকেই বেগুনী দেখানোর কথা।

ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব অ্যাস্ট্রোবায়োলজিতে তাদের এই গবেষণার তথ্য প্রকাশিত হয়। গবেষকরা দাবি করেন, রেটিনাল নামের একটি ক্রোমোপ্রোটিন আলোর উপস্থিতিতে শক্তি তৈরি করতে পারে ও এর রং বেগুনী। ক্লোরোফিল যত বেশি শক্তি উৎপাদন করতে পারে, রেটিনাল তা পারে না। তবে ক্লোরোফিলের অস্তিত্বের আগে পর্যন্ত এককোষী জীব এর সাহায্যেই শক্তি তৈরি করতো। তবে তারা অক্সিজেন বা শর্করা তৈরি করতে পারতো না।

এমনকি, রেটিনাল ব্যবহার করে এমন এককোষী জীব এখনো পৃথিবীতে আছে। বিশেষ করে বিভিন্ন সাগরে এর অস্তিত্ব দেখা যায়।

ঠিক কোন সময় পৃথিবীতে এই বেগুনী এককোষী জীব ছিল তার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় না। তবে ৪০০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে প্রাণের উৎপত্তি হবার পর পরই সম্ভবত এদেরকে দেখা যায়। এরপর আবার ২৩০ কোটি বছর আগে পৃথিবী সবুজ অর্থাৎ ক্লোরোফিলযুক্ত এককোষী জীব দিয়ে ভরে যায়, ফলে ওই বেগুনী জীবের সংখ্যা কমে আসে। সবুজ এসব জীব প্রচুর অক্সিজেন উৎপাদন করে, একে বলা হয় দ্যা গ্রেট অক্সিজেনেশন ইভেন্ট।

প্রথমে বেগুনী অণুজীব, এরপর সবুজ অণুজীব এবং এক পর্যায়ে আরও জটিল ইউক্যারিওটিক শৈবাল ও উদ্ভিদের উদ্ভব ঘটে পৃথিবীতে। কিছু সময় বেগুনী ও সবুজ অণুজীব পাশাপাশি অবস্থান করে। গবেষক দাস শর্মা মনে করেন, রেটিনাল ও ক্লোরোফিল একে ওপরের সাহায্য নিয়েই বিবর্তিত হয়।

সূত্র: আইএফএলসায়েন্স

আজকের বাজার/এএল