প্রতি মণ বেগুন মাত্র ১৫০ টাকা

বিক্রয় না করতে পারায় নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকগণ তাদের উৎপাদিত শাক-সবজি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। ক্ষেতেই নষ্ট হতে চলেছে স্বপ্নের ফসল। উপযুক্ত ক্রেতার অভাবে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। বারহাট্টা উপজেলার কৃষকগণ বরাবরই ধানচাষে অধিক আগ্রহী। কৃষি বিভাগের উৎসাহে এ বছর বিস্তর জমিতে শাক-সবজি চাষ করেন।

অনুকূল পরিবেশ ও কৃষি বিভাগের নিয়মিত তদারকি থাকায় বাম্পার ফলন হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে মূল্য কমে যাওয়ায় এখন তারা দুশ্চিন্তায় সময় পাড় করছেন।

উপজেলার বাসাউড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল ওয়াহাব জানান, ‘আমি ৪০ শতক জমিতে বেগুনের চাষ করি। ফলন খুব ভালো হয়। দামও ভালো ছিলো। এক মাস আগে প্রতি মণ ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি শুরু করি। তারপর দাম কমতে থাকে। এখন কেউ কিনতেই চায় না। দুই দিন আগে প্রতি মণ বেগুন ১৫০ টাকা দরে বেইচ্যা দিছি। নষ্ট অওনের চেয়ে মাইনসে খাউক।’

বারহাট্টা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাইমিনুর রশিদ বলেন, বারহাট্টার জনসাধারণ সবজির তুলনায় ধান চাষকেই অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। সরকারি নির্দেশে এ বছর সবজিচাষে তাদের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। ক্ষেত্র বিশেষে বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক সরবরাহ করা হয়। চলতি বছর উপজেলায় অনেক কৃষক বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করেছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৩৫০ জন কৃষক ১৩০ একর জমিতে বেগুনের চাষ করেন। ফলনও বেশ ভালো হয়। কৃষকগণ তাদের ক্ষেতের বেগুন ট্রাক বোঝাই করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করতে শুরু করেন। সবাই হাসি-খুশি। উৎপাদিত পণ্যের ভালো মূল্য পাওয়ায় তারা স্বপ্নের জাল বুনেন।

কিন্তু বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে এখন তাদের মাথায় হাত। অনেক কৃষক জানিয়েছেন, একমাস আগে প্রতি মণ (৪০ কেজি) বেগুনের বিক্রি হয়েছে ৭৫০ থেকে ১ হাজার টাকা দরে। এখন সেই বেগুনের মূল্য নেমে এসেছে প্রতি মন ১৫০ টাকায়। সময়মতো ক্রেতাও পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি আমাদেরও উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

আজকের বাজার/ লুৎফর রহমান