বন্ড সুবিধা পাবেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা: এনবিআর চেয়ারম্যান

রফতানির উদ্দেশ্য কাঁচামাল হিসেবে সোনা আমদানি করলে ব্যবসায়ীদের বন্ড সুবিধা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া।

তিনি বলেন, ‘আমরা রফতানি পণ্য বহুমূখীকরণ করতে চাই। এজন্য তৈরি পোশাক,চামড়া ও প্লাস্টিকের মত স্বর্ণ শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতেও বন্ড সুবিধা দেব। তবে যারা রফতানি করার শর্তে সোনা আমদানি করবে কেবলমাত্র তারাই এই সুবিধা পাবেন।’

রোববার রাজধানীতে পাঁচতারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে তিন দিনব্যাপী ‘স্বর্ণ কর মেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব একথা বলেন। এনবিআর ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) যৌথভাবে মেলার আয়োজন করেছে।

এনবিআর সদস্য (আয়কর নীতি) কানন কুমার রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাজুস সভাপতি গঙ্গা চরণ মালাকার ও সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগারওয়ালা, করাঞ্চল-১ এর কমিশনার নাহার ফেরদৌস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘যারা বন্ড সুবিধা পাবেন তাদের আমদানি করা সব স্বর্ণ রফতানি করতে হবে। কাঁচামাল হিসেবে যেটুকু সোনা আমদানি করবেন, তার সবটুকু রফতানির কাজে লাগাবেন। আমরা আমদানি-রফতানির সব হিসাব রাখব। বন্ড সুবিধায় আনা সোনা কোনভাবেই খোলা বাজারে বিক্রি করা যাবে না।’

তিনি জানান, তবে অলংকার আমদানিতে বন্ড সুবিধা দেয়া হবে না, কেননা অলংকার চূড়ান্ত (ফিনিশড) পণ্য।

স্বর্ণ নীতিমালা ব্যবসাবান্ধব হয়েছে উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই শিল্পের বিকাশ এবং স্বর্ণ ব্যবসাকে আরো জনপ্রিয় করতে সরকার বদ্ধপরিকর। এজন্য জুয়েলার্স ব্যবসায়ীদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে স্বর্ণ নীতিমালা করা হয়েছে। সরকার এখানে কোন কিছু চাপিয়ে দেয়নি।’

তিনি ব্যবসায়ীদের এই নীতিমালা মেনে বৈধভাবে ব্যবসা করার আহবান জানান।

স্বর্ণ মেলার আয়োজন প্রসঙ্গে মোশাররফ হোসেন বলেন, সাধারণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের করভীতি রয়েছে। সেটা আমরা দূর করতে চাই। যাতে ব্যবসায়ীরা রাজস্ব কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে স্বতস্ফূর্তভাবে কর প্রদান করতে পারেন।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, করমেলার ন্যায় স্বর্ণ মেলায় ব্যবসায়ীরা স্বতস্ফূর্তভাবে কর প্রদান করবেন।

তিনি বলেন, সাধারণ সোনা ব্যবসায়ীরা চোরচালানের সঙ্গে জড়িত নয়। এর সঙ্গে একটি বিশেষ গোষ্ঠী জড়িত। তবে স্বর্ণ নীতিমালা হয়ে যাওয়ায় এখন আর সোনা চোরাচালানকারীরা সুবিধা করতে পারবে না।

উল্লেখ্য, মেলায় মজুদকৃত কাগজপত্রবিহীন বা অঘোষিত সোনা নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।সোনা বৈধকরণে গতমাসে এনবিআর একটি পরিপত্র জারি করে। পরিপত্র অনুযায়ী-অঘোষিত প্রতি ভরি সোনা ও সোনার অলংকারে ১ হাজার টাকা, হীরায় ৬ হাজার টাকা ও রুপায় ৫০ টাকা আয়কর প্রদান করে বৈধ করা যাবে।মেলায় ব্যবসাযীরা এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারছেন। মেলায় ব্যাংকের বুথসহ কর পরিশোধের আনুযঙ্গিক সুবিধাদি রয়েছে।

এনবিআর সদস্য কানন কুমার রায় জানান, পরিপত্র অনুযায়ী আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা অঘোষিত সোনা বৈধ করার সুযোগ পাবেন। তিনি ব্যবসায়ীদের এই সময়ের মধ্যে অপ্রদর্শিত সোনা ঘোষণা দিয়ে বৈধ করার আহবান জানান।

ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রামে তিন দিনব্যাপী মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরে মেলা চলবে দুই দিন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মেলা চলবে। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/এমএইচ