বীমা প্রসঙ্গ: বীমা দাবি নিষ্পত্তি নিয়ে অভিমত

বীমা দাবি (ক্লেইমস) বীমা পলিসির শর্তানুযায়ী কোন অনিশ্চিত সম্ভাবনা বা আকস্মিক ঘটনা সংঘটিত হলে প্রদত্ত প্রিমিয়ামের বিনিময়ে বীমা কোম্পানি কর্তৃক প্রদেয় ক্ষতিপূরণ প্রদানই বীমা দাবি। বীমা গ্রাহক (বা বীমাকৃত ব্যক্তি বা মূল পলিসির সাথে পৃষ্ঠাঙ্কৃত নমিনী) বীমা পলিসির শর্তানুসারে পলিসিতে উল্লিখিত বা আচ্ছাদিত কোন ক্ষতির সম্মুখীন হলে বীমা কোম্পানির নিকট বীমাবৃত ঘটনার ক্ষতিপূরণের জন্য বীমাবৃত অর্থ প্রদানের জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধ বা আবেদনই হলো বীমা দাবি। বীমা দাবির প্রাপ্যতা বীমা গ্রাহকের আইনসিদ্ধ অধিকার। বীমার দাবি একমাত্র আইনগত দাবীদারকে পরিশোধ করা হয়। অনুরোধ প্রাপ্তির পরে বীমা কোম্পানি বীমা দাবির বৈধতা পর্যালোচনা করে ও অনুমোদনের পরে দাবীদারকে তার প্রাপ্য অর্থ প্রদান করে। বীমা কোম্পানি দাবির পরিস্থিতিগুলির উপর নির্ভর করে দাবিটি প্রত্যাখ্যান করতে বা কম পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে পারে। বীমা দাবির আবেদনের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজাদি অবশ্যই দাখিল করতে হবে। বীমা দাবি সংক্রান্ত সকল নথি ও চিঠিপত্র ই-মেইল অথবা বীমা কোম্পানি কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে মাধ্যমে দাখিল বা আদান প্রদান করা য়ায়।

বীমা কোম্পানি বীমা পলিসির ধরণ অনুযায়ী ০২ (দুই) ক্ষেত্রে বীমা দাবি পরিশোধ করে থাকে –

১) পলিসির মেয়াদপূর্তিতে বীমা পলিসির ধরণ অনুয়ায়ী বীমাকৃত অর্থ আংশিক বা সম্পূর্ণ অংশ বীমা গ্রাহককে পরিশোধ করা হয়।

২) বীমা চুক্তির নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বীমা গ্রাহকের (বা বীমাবৃত ব্যক্তির) মৃত্যু অথবা মেয়াদপূর্তির পূর্বে বীমা গ্রাহকের মৃত্যুতে নমিনীকে বা স্বত্ব নিয়োগকারীকে পরিশোধ করা হয়।

আসুন এবার উপরে উল্লিখিত দুইটি ক্ষেত্র নিয়ে আলোচন করা যাক –

১। পলিসির মেয়াদপূর্তিতে বীমা পলিসির ধরণ অনুয়ায়ী বীমা দাবি পরিশোধ/নিষ্পত্তি বীমা গ্রাহকের জীবদ্দশায় বীমা পলিসির ধরণ অনুযায়ী পলিসির নির্ধারিত সময়সীমা/মেয়াদ অতিক্রান্ত হলে বীমাকৃত অর্থ প্রদানযোগ্য হওয়াই মেয়াদপূর্তি দাবি। বীমা আইন ২০১০ এর ৫৭ (৫) ধারায় বলা আছে যে, বীমা পলিসি গ্রাহকের জীবদ্দশায় পলিসির মূল্য পরিশোধের জন্য পরিপক্ক হলে পলিসি দ্বারা নিশ্চিত অর্থ বীমা গ্রহিতাকে প্রদান যোগ্য হবে। পলিসির মেয়াদপূর্তিতে বীমা গ্রাহক জীবিত থাকলে বীমা দাবি নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজাদির তালিকা সাধারণত বীমা কোম্পানির নিজস্ব পলিসির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তাই প্রয়োজনীয় কাগজাদির তালিকা কোম্পানি থেকে কোম্পানি ভিন্নতর হতে পারে। তবে বীমা গ্রাহকের মৃত্যুতে বীমা দাবির ক্ষেত্রে দাবীদারকে নিম্নোক্ত কাগজাদি বীমা কোম্পানির নিকট দাখিল করতে হয়:

১) মূল বীমা পলিসি দলিল।

২) স্বত্বের প্রমাণ (যদি স্বত্ব আরোপিত থাকে)

৩) বীমা কোম্পানি কর্তৃক সরবরাহকৃত দাবিপত্র, সনাক্তপত্র সহ (প্রযোজ্য অন্যান্য ফরম) পূরণপূর্বক দাখিলকরণ।

৪) বীমা গ্রাহকের জাতীয় পরিচয় পত্রের (এন.আই.ডি) ফটোকপি।

৫) ব্যাংক অ্যাকউন্টের বিবরণ (প্রমাণসহ)।

বীমা গ্রাহক কর্তৃক প্রয়োজনীয় সকল কাগজাদি প্রাপ্তির পর বীমা কোম্পানি বীমা দাবি নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া শুরু করে এবং কাগজাদির সঠিকতা নির্ণয়ের পর যথাযথ ও ইতিবাচক হলে বীমা গ্রাহকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অ্যাকাউন্ট পেয়ী চেক/ পে-অর্ডার/ ইএফটি এর মাধ্যমে সরাসরি টাকা প্রেরণ করে বীমা দাবি নিষ্পন্ন করা হয়।

২। মৃত্যুজনিত বীমা দাবি (ডেথ ক্লেইমস) পরিশোধ/নিষ্পত্তি পলিসির মেয়াদকালীন সময়ে বীমা গ্রাহকের (বা বীমাকৃত ব্যক্তির) মৃত্যু হলেই কেবল পলিসির আবেদনপত্রে উল্লিখিত নমিনী (বা মূল পলিসির সাথে পৃষ্ঠাঙ্কৃত নমিনী) পলিসি দ্বারা নিশ্চিত অর্থ প্রাপ্যের অধিকারী হবেন, অন্যথায় হবেন না। বীমা আইন ২০১০ এর ৫৭ (৬) ধারায় বলা আছে যে, মনোনীত ব্যক্তি বা একাধিক মনোনীত ব্যক্তির ক্ষেত্রে, মনোনীত ব্যক্তিগণ যদি বীমা পলিসি গ্রাহকের মৃত্যুকালে জীবিত থাকেন তবে পলিসি দ্বারা নিশ্চিত অর্থ উক্ত জীবিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণকে প্রদেয় হবে। মৃত্যুজনিত বীমা দাবির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজাদির তালিকা সাধারণত বীমা কোম্পানির নিজস্ব পলিসির মাধ্যমে পারিচালিত হয়। তাই প্রয়োজনীয় কাগজাদির তালিকা কোম্পানি থেকে কোম্পানি ভিন্নতর হতে পারে। বীমা গ্রাহকের মৃত্যুতে বীমা দাবির ক্ষেত্রে দাবীদারকে নিম্নোক্ত কাগজাদি বীমা কোম্পানির নিকট দাখিল করতে হয়:

১) বীমা দাবির আবেদন পত্র।

২) বীমা গ্রাহকের মৃত্যুর প্রমাণপত্র (চিকিৎসক অথবা ইউনিয়ন পরিষদ/ পৌরসভা/ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক প্রদত্ত মৃত্যুর সনদপত্র, এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে গোরস্থানের দাফন/শ্মশানের দাহ/ চার্চইয়ার্ড সনদ)। যদি হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু হয়, তাহলে হাসপাতালে চিকিৎসাকালীন চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র ও অন্যান্য ডায়াগস্টিক রিপোর্ট।

৩) মূল বীমা পলিসি দলিল।

৪) বীমা কোম্পানি কর্তৃক সরবরাহকৃত দাবিপত্র, সনাক্তপত্র সহ প্রযোজ্য অন্যান্য ফরম পূরণপূর্বক দাখিলকরণ।

৫) দাবীদার/নমিনী-দের জাতীয় পরিচয় পত্রের (এন.আই.ডি) ফটোকপি।

৬) ব্যাংক অ্যাকউন্টের বিবরণ (প্রমাণসহ)।

বীমা গ্রাহকের বৈধ দাবীদার/নমিনী কর্তৃক প্রয়োজনীয় সকল কাগজাদি প্রাপ্তির পর বীমা কোম্পানি মৃত্যুজনিত দাবির নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। তবে বীমা কোম্পানি প্রয়োজনে সরবরাহকৃত কাগজাদি সঠিকতা নির্ণয়ের জন্য সরেজমিনে তদন্ত করে তদন্ত রিপোর্ট যথাযথ ও ইতিবাচক হলে পলিসির আবেদনপত্রে উল্লিখিত নমিনী বা পৃষ্ঠাঙ্কৃত নমিনীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অ্যাকাউন্ট পেয়ী চেক/ পে-অর্ডার/ ইএফটি এর মাধ্যমে টাকা প্রেরণ করে বীমা দাবি নিষ্পন্ন করা হয়।

আসুন এবার বীমা দাবি নিষ্পত্তির সময় বীমা কোম্পানি কি কি ধরণের সমস্যার পরতে পারে এবং তা সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা করা যাক

১। বীমাযোগ্য স্বার্থের অনুপস্থিতি: বীমা দাবি নিষ্পিত্তির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি হলো- ‘বীমাযোগ্য স্বার্থ’। যেখানে বীমাযোগ্য স্বার্থ নেই, সেখানে বীমা পলিসি করা সম্ভব নয়। যেমন- মানুষের নিজের জীবনের ওপর তার বীমাযোগ্য স্বার্থ থাকে। স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জীবনের ওপর বীমাযোগ্য স্বার্থ থাকে। বীমা পলিসির ক্ষেত্রে বীমা গ্রাহকের বীমাকৃত বিষয় বা বস্তুর সাথে যে অর্থনৈতিক স্বার্থ জড়িত থাকে তাকেই বীমাযোগ্য স্বার্থ বলে। সাধারণ বীমার ক্ষেত্রে সম্পদ বিনষ্ট হওয়া এবং জীবনবিমার ক্ষেত্রে বীমা গ্রাহক বা বীমা পলিসি গ্রাহকের মৃত্যুর পর অর্থনৈতিক ক্ষতি বিবেচনায় বীমাযোগ্য স্বার্থ বিবেচিত হয়। বীমাযোগ্য স্বার্থসহ অন্যান্য তথ্য সঠিক থাকলে বীমা গ্রাহকের অবর্তমানে বীমা দাবির অর্থ পেতে নমিনির কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু বীমাযোগ্য স্বার্থের অনুপস্থিতিতে বীমা দাবি পেতে সমস্যা হতে পারে। বীমা গ্রাহক (বা বীমাকৃত ব্যক্তি) মৃত্যুতে, বীমা গ্রাহকের জীবদ্দশায় পলিসির মূল আবেদনপত্রে উল্লিখিত (বা মূল পলিসির সাথে পৃষ্ঠাঙ্কৃত) নমিনিকে বীমা দাবির স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজাদি/প্রমাণাদি প্রদান সাপেক্ষে ও সঠিকতা নির্ণয় করার পরে বীমা কোম্পানি কর্তৃক বীমা দাবি পরিশোধ করা হয়।

২। পলিসি পরিপক্ক হওয়ার পর বীমা গ্রাহকের মৃত্যু হলে: বীমা পলিসি গ্রাহকের জীবদ্দশায় পলিসির মূল্য পরিশোধের জন্য পরিপক্ক হওয়ার পরে বীমা গ্রাহকের মৃত্যুতে পলিসি দ্বারা নিশ্চিত অর্থ বীমা গ্রহীতার উত্তরাধিকারী বা আইনসম্মত প্রতিনিধি বা উত্তরাধিকার সনদ ধারক ব্যক্তিকে প্রদান যোগ্য হবে। (বীমা আইন ২০২০ এর ৫৭ (৫) ধারা)

৩। পলিসি পরিপক্ক হওয়ার পূর্বে মনোনীত ব্যক্তি/গণএর মৃত্যু হলে বীমা পলিসি গ্রাহকের জীবদ্দশায় পলিসির মূল্য পরিশোধের জন্য পরিপক্ক হলে বা মনোনীত ব্যক্তি বা একাধিক মনোনীত ব্যক্তির ক্ষেত্রে, সকল মনোনীত ব্যক্তি পলিসি পরিপক্ক হওয়ার পূর্বে মারা গেলে, পলিসি দ্বারা নিশ্চিত অর্থ বীমা গ্রহীতা প্রাপ্য হবেন। (বীমা আইন ২০২০ এর ৫৭ (৫) ধারা)। অর্থাৎ পলিসি গ্রাহকের জীবদ্দশায় যদি পলিসির আবেদনপত্রে উল্লিখিত নমিনী মৃতুবরণ করেন কিংবা একাধিক নমিনীর ক্ষেত্রে কোন নমিনী মৃত্যুবরণ করেন এবং অন্য নমিনী জীবিত থাকলেও পলিসির অধীনে প্রদেয় নিশ্চিত অর্থ বীমা গ্রহিতাই প্রাপ্য হবেন, অন্য কোন নমিনী প্রাপ্য হবেন না।

৪। পলিসিতে নমিনী নির্ধারণ করা না থাকলে বীমা দাবি কিভাবে নিষ্পত্তি করা হবে?

অনেক সময়ই দেখা যায় যে, ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত ক্রেডিট কার্ডের সাথে ইন্স্যুরেন্স সুবিধা প্রদান করা হয়। কিন্তু পলিসির আবেদনপত্রে নমিনীর জন্য নির্ধারিত ঘর পূরণ করা হয় না অর্থাৎ নমিনী নির্ধারণ করা হয় না। এরূপ ক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ড গ্রহিতার মৃত্যুতে কিভাবে বীমা দাবি নিষ্পত্তি করা হবে?

পলিসিতে নমিনী নির্ধারণ করা না থাকলে এবং এক্ষেত্রে পলিসি গ্রাহকের মৃত্যুতে পলিসির অধীনে উদ্ভূত সুবিধা মৃতের ওয়ারিশগণ পাবেন। উল্লিখিত সমস্যার ক্ষেত্রে বীমা কোম্পানি বীমা দাবির পরিমাণের উপর ভিত্তি করে নিজস্ব পলিসি মোতাবেক দাবীদার কর্তৃক প্রয়োজনীয় কাগজাদি দাখিল পূর্বক বীমা দাবি নিষ্পত্তি করে থাকে। তবে কোন কোন বীমা কোম্পানি পরবর্তীতে আইনগত ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকার জন্য দাবীদারকে ১৯২৫ সালের উত্তরাধিকার আইন মোতাবেক বিজ্ঞ আদালত (যুগ্ম জেলা জজ আদালত) থেকে প্রাপ্ত উত্তরাধিকার সনদ দাখিল করতে অনুরোধ করে এবং সনদপত্রের অনুলিপি প্রাপ্তি সাপেক্ষে বীমা কোম্পানি উক্ত উত্তরাধিকার সনদ অনুযায়ী বীমা দাবি নিষ্পত্তি করে।

৫। নমিনী নাবালক কিংবা এক বা একাধিক নমিনী নাবালক অনেক সময়ই দেখা যায় যে, বীমা গ্রাহক তার নাবালক সন্তান/সন্তানদের পলিসিতে নমিনী করেন এবং পরবর্তীতে পলিসির মেয়াদকালে বীমা গ্রাহকের অনাকাঙ্খিত মৃত্যুতে পলিসির আবেদনপত্রে উল্লিখিত নমিনী/নমিনীগণ বীমা দাবি প্রাপ্যের দাবিদার হন। যদি বীমা দাবি নিষ্পত্তির সময় কোন নমিনী সাবালকত্ব বয়সে উপনীত হন তাহলে পলিসির আবেদনপত্রে বিবৃত তার হিস্যাংশ অনুযায়ী সাবালক নমিনীর বরাবরে বীমা দাবি নিষ্পত্তি করা হবে।

কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায় যে, বীমা গ্রাহকের মৃত্যুর সময়ও কোন কোন নমিনীর সাবালকত্ব বয়সে উপনীত হন নাই, এক্ষেত্রে যেসব সমস্যার উদ্ভব হতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে যেমন-

) বীমা গ্রাহক যখন মাতা যখন বীমা গ্রাহক যখন মাতা এবং পলিসিতে নমিনী তার নাবালক সন্তান। এক্ষেত্রে বীমা গ্রাহকের মৃত্যুতে নাবালকদের পিতা অভিভাবক বিধায়, নাবালকদের পক্ষে তিনি বীমা দাবি নিষ্পত্তির জন্য আবেদন করতে পারেন এবং বীমা কোম্পানি পিতার আবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় কাগজাদি দাখিল করলে বীমা দাবি নিষ্পত্তি করতে পারে। এতে আইনত কোন বাধা নেই।

) বীমা গ্রাহক যখন পিতা যখন বীমা গ্রাহক যখন পিতা এবং পলিসিতে নমিনী তার নাবালক সন্তান। এক্ষেত্রে বীমা গ্রাহকের মৃত্যুতে নাবালকদের পক্ষে দাদা, যদি জীবিত থাকেন তাহলে, তিনিই আইনগত অভিভাবক। দাদা আইনগত অভিভাবক হওয়ায়, নাবালকদের পক্ষে তিনি বীমা দাবি নিষ্পত্তির জন্য আবেদন করতে পারেন এবং বীমা কোম্পানিও বীমা দাবি নিষ্পত্তি করতে পারে এবং এরূপ করলে তাও আইনসিদ্ধ হবে।

নাবালকের পক্ষে অভিভাবক নিযুক্তির জন্য কোন আইনের অধীনে আবেদন করতে হবে?

মাতা নাবালকের পক্ষে আইনগত অভিভাবক নন এবং পিতার অবর্তমানে দাদা, যদি জীবিত থাকেন, তাহলে দাদা নাবালকের আইনগত অভিভাবক। আবার দাদার অনুপস্থিতিতে কিংবা দাদা যদি নাবালকের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করতে অপারগ হন (বয়স কিংবা অন্য কোন কারণে) এরূপ ক্ষেত্রে নাবালকের মাতা কিংবা অন্য কোন আত্মীয় বা হিতাকাঙ্খী (রক্তের সম্পর্কীয়) বিজ্ঞ আদালতে নাবালকের শরীর ও সম্পত্তির আইনগত অভিভাবক হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন। বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করার সময় অবশ্যই যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে-

১) নাবালকের শরীর ও সম্পত্তির উপর অভিভাবক নিযুক্তির জন্য আবেদন করতে হবে।

২) আবেদনের সময় আর্জির তপসিলে অবশ্যই বীমা কোম্পানির নাম, ঠিকানা সহ পলিসি নম্বর, টাকার পরিমাণ ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে।

৩) গার্ডিয়ানশীপ এন্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট ১৮৯০ অনুযায়ী নাবালকের শরীর ও সম্পত্তির অভিভাবক হওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে।

অনেক সময় দেখা যায় নাবালকের অভিভাবক হওয়ার জন্য পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৮৫ অনুযায়ী আবেদন করা হয়। মূলত এই আইনের এখতিয়ার অনুযায়ী নাবালকের অভিভাবকত্ব এবং হেফাজত অর্থাৎ নাবালকের শরীরের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত করার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালত হতে আদেশ লাভ করা যায়, সম্পত্তির বিষয়ে নয়।

৪) বিজ্ঞ আদালতের আদেশের কপি বীমা কোম্পানিতে দাখিল করতে হবে।

অতএব, বিজ্ঞ আদালতের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বীমা কোম্পানি বীমা দাবি নিষ্পত্তি করতে পারবে।

৬। পলিসি গ্রাহক ৭ বছরের অধিক সময় পর্যন্ত নিখোঁজ পলিসি গ্রাহক যদি ৭ বছরের অধিক সময় পর্যন্ত নিখোঁজ হন এবং সর্ব প্রকার চেষ্টা করেও যদি পলিসি গ্রাহকের কোন সন্ধান পাওয়া না যায় এবং সংশ্লিষ্ট থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হলে কিংবা পুলিশকে অবহিত করার পরেও যদি পলিসি গ্রাহককে পুলিশ খুঁজে না পায় কিংবা পলিসি গ্রাহককে খুঁজে পাওয়া যায় নাই মর্মে পুলিশ যদি প্রতিবেদন প্রদান করে এবং এছাড়াও দৈনিক সংবাদপত্রে নিখোঁজ সংবাদ/বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার পরেও যদি কোন ফল পাওয়া না যায় এবং এরূপ অবস্থা যদি ৭ (সাত) বছরের অধিক সময় পর্যন্ত চলমান থাকে, তবে এক্ষেত্রে পলিসি গ্রাহকের উত্তরাধিকারী(গণ) কিংবা নমিনি দেওয়ানী আদালতে এই মর্মে মামলা দায়ের করতে পারেন যে, পলিসি গ্রাহকের ‘সিভিল ডেথ’ হয়েছে এবং বিজ্ঞ আদালতের আদেশের উপর ভিত্তি করে বীমা কোম্পানি বীমার দাবি পরিশোধ করতে পারবে।

৭। নমিনী নাবালক, নমিনীর পিতা বীমা পলিসি গ্রাহক নিখোঁজ এবং নমিনীর মাতা মৃত – যখন বীমা গ্রাহক তার ক্রয়কৃত পলিসিতে নমিনী হিসেবে তার নাবালক সন্তানকে মনোনীত করেন এবং পলিসি চলমান থাকাবস্থায় পলিসি গ্রাহকের স্ত্রী অর্থাৎ নাবালকের মাতা মৃত্যুবরণ করেন এবং একই সাথে পলিসি গ্রাহক দীর্ঘদিন যাবত নিখোঁজ থাকেন এবং পরিবারের ব্যক্তিগণ কোথাও তাকে খুঁজে পাচ্ছেন না এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা নিয়েও পলিসি গ্রাহকের কোন সন্ধান পাওয়া না গেলে; অর্থাৎ নাবালক নমিনীর মাতা মৃত এবং পিতা নিখোঁজ এমতাবস্থায় নাবালকের ভরণপোষন ও দেখভালের জন্য আত্মীয়দের মধ্য থেকে কেউ একজন (দাদা ব্যতীত কিংবা দাদা মৃত) নাবালকের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত এবং তিনি বীমাকারীর নিকট সার্বিক পরিস্থিতি বর্ণনা করে পলিসি গ্রাহককে মৃত বিবেচনা করে পলিসি হতে উদ্ভূত সুবিধা নমিনী হিসাবে নাবালক সন্তানকে প্রদান করার জন্য আবেদন করেন। এরূপ ক্ষেত্রে বীমা কোম্পানি নাবালকের পক্ষে কিভাবে বীমা দাবি নিষ্পত্তি করবে কিংবা এমন পরিস্থিতিতে বীমা কোম্পানির কি করা উচিত?

এক্ষেত্রে যিনি অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত আছেন তিনি বিজ্ঞ আদালতের শরনাপন্ন হয়ে নিজেকে নাবালকের পক্ষে অভিভাবক নিযুক্ত করার দাবি করতে পারেন (পদ্ধতি সম্পর্কে পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে)। বিজ্ঞ আদালতের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বীমা কোম্পানি বীমা দাবি নিষ্পত্তি করতে পারবে।

৮। স্বামীস্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে কিন্তু স্বামী বা স্ত্রী পলিসিতে নমিনী হিসেবে বর্তমান থাকলে – পলিসি করার সময় স্বামী তার স্ত্রীকে অথবা স্ত্রী তার স্বামীকে তার পলিসিতে নমিনী করেছেন। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির ফলে তাদের পরস্পরের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। কিন্তু স্বামী বা স্ত্রী তাদের ক্রয়কৃত বীমা পলিসিতে সাবেক স্ত্রী বা স্বামীর নাম পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেননি বা নমিনী অপরিবর্তিত আছে; এবং এমতাবস্থায় স্বামী বা স্ত্রী মারা গেলে পলিসি হতে উদ্ভূত সুবিধা কে পাবে?

বীমার নীতি অনুযায়ী বীমা পলিসির অধীনে প্রাপ্য সুবিধাদি পলিসি গ্রাহকের মৃত্যুতে তার নমিনীই পাবেন। কারণ পলিসি করার সময় তাদের মধ্যে বীমাযোগ্য স্বার্থ বিদ্যমান ছিল। তবে যদি দেখা যায় যে, বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার কারণে স্বামী বা স্ত্রীর মধ্যে নমিনী হিসেবে, যিনি জীবিত, তিনি পলিসি হতে উদ্ভূত সুবিধা নিতে অপারগতা প্রকাশ করতে পারেন এবং তিনি কোন প্রকার না-দাবী দিতেও অপারগতা প্রকাশ করতে পারেন, এরূপ ক্ষেত্রে বীমা কোম্পানি কিভাবে বীমা দাবি নিষ্পত্তি করবে?

বীমা কোম্পনি পলিসির অধীনে প্রাপ্য সুবিধাদি পলিসি গ্রাহকের মৃত্যুতে তার নমিনীকে প্রদান করতে বাধ্য। তবে উল্লিখিত ক্ষেত্রে মৃত নমিনীর ওয়ারিশগণ বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করে দিকনির্দেশনা চাইতে পারেন এবং বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বীমা কোম্পানি বীমা দাবি নিষ্পত্তি করবে।

৯। নমিনী বীমা গ্রাহককে খুন করলে বীমা হতে উদ্ভূত সুবিধা কে প্রাপ্য হবেন? (হিন্দু ও মুসলিম আইন অনুযায়ী)

মুসলিম শরীয়া আইন অনুযায়ী হত্যাকারীকে মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয় এবং হিন্দু আইন (দায়ভাগা পদ্ধতিতে) অনুযায়ী হত্যাকারী ও তার ওয়ারিশ মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। নমিনী কর্তৃক বীমা গ্রাহককে খুন করা হলে এবং বিজ্ঞ আদালতের রায়ে দোষী প্রমাণিত হলে নমিনী পলিসির অধীনে উদ্ভূত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। এক্ষেত্রে পলিসির অধীনে উদ্ভূত সুবিধা মৃত পলিসি গ্রাহকের ওয়ারিশগণ পাবেন এবং মৃত পলিসি গ্রাহকের ওয়ারিশগণকে ১৯২৫ সালের উত্তরাধিকার আইন মোতাবেক বিজ্ঞ আদালত (যুগ্ম জেলা জজ আদালত) থেকে উত্তরাধিকার সনদ গ্রহণ করতে হবে এবং উক্ত সনদের অনুলিপি প্রাপ্তি সাপেক্ষে বীমা কোম্পানি উক্ত উত্তরাধিকার সনদ অনুযায়ী বীমা দাবি নিষ্পত্তি করতে পারবে।

১০। বীমা গ্রাহক আত্মহত্যা করলে পলিসি হতে উদ্ভূত সুবিধা কে প্রাপ্য হবেন?

প্রকৃতিস্থ বা অপ্রকৃতিস্থ যে-কোন অবস্থাতেই, যদি পলিসি গ্রাহক (বা বীমাকৃত ব্যক্তি) পলিসি ইস্যুর তারিখ অথবা পুর্নবহালের তারিখ থেকে ২ (দুই) বছরের মধ্যে আত্মহত্যা করেন, তাহলে পলিসির অধীনে বীমা কোম্পানির দায় হবে পরিশোধিত প্রিমিয়াম হতে যাবতীয় দায় এবং আংশিক উত্তোলন বাদ দেয়ার পর যে পরিমাণ অর্থ অবশিষ্ট থাকে তা বীমা গ্রাহকের নমিনীকে ফেরত প্রদান করা। পলিসিতে বিবৃত সুবিধাসমূহ বীমা গ্রাহকের (বা বীমাকৃত ব্যক্তি) আত্মহত্যার ক্ষেত্রে প্রদান করা হয় না।

কখন বীমা কোম্পানি হতে বীমা গ্রাহকের মৃত্যু দাবি প্রত্যাখ্যাত হতে পারে – যেসব কারণে বীমা কোম্পানি বীমা গ্রাহকের মৃত্যু দাবি প্রত্যাখান করতে পারে তার মধ্যে অন্যতম হল- বয়স সম্পর্কে মিথ্যা বিবৃতি, শারীরিক অসুস্থতার তথ্য গোপন ইত্যাদি করে পলিসি ক্রয় করা হলে, পলিসির শর্তাবলী সাপেক্ষে এবং বীমা আইন ২০১০ এর ৬৮ ধারার বিধান সাপেক্ষে বীমা কোম্পানি যদি প্রমাণ করতে পারে যে, শারীরিক অসুস্থতার বিবরণী অতীব প্রয়োজনীয় বিষয় সংক্রান্ত ছিল এবং প্রকাশ করা গুরুত্বপূর্ণ ছিল এরূপ তথ্য গোপন করা হয়েছিল কিংবা পলিসি গ্রাহক জালিয়াতির আশ্রয়ে তা সম্পাদন করেছেন এবং বিবরণ প্রদানকালে পলিসি গ্রাহক জ্ঞাত ছিলেন যে, তা অসত্য অথবা প্রকাশ করা গুরুত্বপূর্ণ ছিল এরূপ তথ্য গোপন করা হয়েছে তাহলে ক্রয়কৃত পলিসিটি ভয়েড অ্যাব ইনিশিও (void ab initio) অর্থাৎ পলিসিটি শুরু থেকেই বাতিল বলে গণ্য করা হয়। এক্ষেত্রে বীমা কোম্পানি পলিসির অধীনে কোন কভারেজ (বা আর্থিক বীমা সুবিধা) প্রদান করবে না এবং মৃত্যু দাবি প্রত্যাখ্যাত হবে। আর বীমা কোম্পানির দায় হবে, প্রযোজ্য সার্ভিস চার্জ কর্তন করে, পলিসিতে জমাকৃত প্রিমিয়ামের টাকা ফেরত প্রদান করা।

ন্যায্য বীমা দাবি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পরিশোধ না করলে বীমা কোম্পানি কী হারে সুদ সহ দাবি পরিশোধ করবে?

বীমা আইন ২০১০ এর ৭২ ধারার বিধানে বলা আছে যে, দাবি প্রদানের জন্য সমস্ত কাগজাদি দাবীদার কর্তৃক দাখিল করা হয়েছে এরূপ ক্ষেত্রে বীমা কোম্পানি যদি দাবি পরিশোধের প্রাপ্য হওয়া বা দাবীদার কর্তৃক সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা পূরণের, যা পরে সংঘটিত হয়, ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে দাবি পরিশোধে ব্যর্থ হয়, তাহলে উক্ত আইনের ৭২ (২) ধারার বিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সুদ অর্থাৎ প্রচলিত ব্যাংক রেটের অতিরিক্ত শতকরা ৫ (পাঁচ) ভাগ হারে মাসিক ভিত্তিতে হিসাব করে বীমা দাবির অতিরিক্ত হিসেবে দাবীদারকে পরিশোধ করতে হবে।

বীমা গ্রাহক বীমা দাবি না পেলে অভিযোগ কোথায় করবেন?

দাবীদার অভিযোগ বিষয়ে প্রমাণাদিসহ সংশ্লিষ্ট বীমাকারীর ঠিকানায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক/প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর দাখিল করে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে সমাধানের জন্য অনুরোধ করতে পারেন; অথবা দাবীদার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট প্রদত্ত অভিযোগের কপি ও প্রমাণাদি সহ মাননীয় চেয়ারম্যান, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ, সাধারণ বীমা টাওয়ার (৯ম তলা), ৩৭/এ দিলকুশা বা/এ, ঢাকা-১০০০ এর বরাবরে দাখিল করতে পারেন। প্রয়োজনে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের ওয়েব সাইটে রক্ষিত নির্দিষ্ট অভিযোগ বক্সেও অভিযোগ দাখিল করা যেতে পারে।

বীমা গ্রাহক বা দাবিদার কী কী বিষয়ের অভিয়োগের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ দায়ের করতে পারেন?

বীমা গ্রাহক বা দাবিদার নিম্নোক্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ দায়ের করতে পারেন –

১। কোন লাইফ ইন্স্যুরেন্স বীমা কোম্পানি কর্তৃক ইস্যুকৃত ২৫,০০০ (পঁচিশ হাজার) টাকা ও তদুর্ধ্ব (গ্যারান্টিযুক্ত নহে এমন কোন লাভ ও বোনাস ব্যতিরেকে) লাইফ ইন্স্যুরেন্স পলিসির বিরোধ এবং নন-লাইফ বীমা কোম্পানি কর্তৃক ইস্যুকৃত ৫,০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ) টাকার সমপরিমাণ বা তদুর্ধ্ব পরিমাণের নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স পলিসি কোন বিরোধ। (বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটি) প্রবিধানমালা, ২০১২ এর ৬ (১) ও (২) বিধি মোতাবেক)।

২। বীমা কোম্পানির নিয়োজিত এজেন্টের দ্বারা বীমা গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্থ হলে এবং অভিযোগের বিষয়ে বীমা কোম্পানিকে অবহিত করার পরেও অভিযোগ বিষয়ে যুক্তিসঙ্গত সমাধান বা যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে সমাধান না করা হলে কিংবা যদি বীমা কোম্পানি ক্ষতিপূরণ প্রদান না করে, তাহলে উপযুক্ত প্রমাণ উপস্থাপন সহকারে কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।

নির্ধারিত ফি প্রদান অভিযোগ দায়েরের ক্ষেত্রে দাবীদার বা আবেদনকারীকে ২০১২ সালের প্রবিধানমালার ৮ (১) বিধি অনুযায়ী বিরোধীয় দাবির অনূর্ধ্ব ২ (দুই) শতাংশ পরিমাণ ফি পরিশোধ করে বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটি বরাবর আবেদন করতে হয় এবং বিধি ৮ (২) অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত কোন তফসিলী ব্যাংকে সংরক্ষিত বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ তহবিলের অনুকূলে উল্লিখিত নির্ধারিত ফি নগদ, ব্যাংক অর্ডার বা পে-অর্ডার এর মাধ্যমে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করত হয়।

কমিটির আদেশের বিরুদ্ধে আপীল কমিটির আদেশে কোন পক্ষ সংক্ষুব্ধ হলে ২০১২ সালের প্রবিধানমালার ৭ বিধি অনুযায়ী উক্ত আদেশের ৩০ (ত্রিশ) কার্য দিবসের মধ্যে উপযুক্ত আদালতে আপীল দায়ের করা যায়।

মোঃ মাসুম বিল্লাহ্
এলএল.বি (অনার্স), এলএল.এম
অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট।