ভারতের নাগরিকত্ব হারালেন তেলেঙ্গানা রাজ্যের বিধায়ক

আসামের মতোই ভারতের সব রাজ্যে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার আগেই দেশের নাগরিকত্ব হারলেন তেলঙ্গানার টিআরএস বিধায়ক রমেশ চেন্নামানেনি। এ দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তরফে একটি ১৩ পাতার রিপোর্ট দাখিল করে বলা হয়েছে, রমেশ আর এ দেশের নাগরিক নন। দাবি করা হয়েছে, অতীতে ভারত সরকারকে নাগরিকত্ব বিষয়ে ভুয়ো তথ্য দিয়েছেন তিনি।

গত সন্ধেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘রমেশ চেন্নামানেনির ভারতীয় নাগরিকত্ব থাকাটা জনহিতকর নয়।’ কেন্দ্রের অভিযোগ, রমেশ জার্মান নাগরিক। ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্যে আবেদন করার আগে এক বছরের বিদেশ সফর করেছিলেন তিনি। অথচ আবেদনপত্রে বিষয়টি সম্পূর্ণ গোপন করে গিয়েছিলেন রমেশ। এই নিয়মবিরুদ্ধ কাজের জন্যেই নাগরিকত্ব হারতে হচ্ছে তাঁকে।এ খবর জানিয়েছে কলকাতার প্রভাবশালী সংবাদপত্র আনন্দবাজার পত্রিকা।

রমেশের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে ২০১৭সালেই। কেন্দ্র তাঁর নাগরিকত্ব খারিজ করে দিলে রমেশ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট থেকে কেন্দ্রকে বিষয়টি পুনরায় যাচাই করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। বুধবার সেই বিষয়ে ফের রিপোর্ট দাখিল করে কেন্দ্র।

ওই রিপোর্ট বলছে, ২০০৯ সালে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্যে আবেদন করেন রমেশ। তখন বৈধ নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য ভুল তথ্য দিয়ে সরকারকে বিভ্রান্ত করেন তিনি। ওই নির্দেশিকায় লেখা হয়েছে, ‘রমেশের অপব্যাখ্যা ভুল পথে চালিত করেছিল কেন্দ্রকে। আবেদনপত্রে তিনি উল্লেখই করেননি যে, এই আবেদন জমা দেওয়ার আগে এক বছর তিনি ভারতে ছিলেন না। এ কথা তিনি জানালে তখনই তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যেত।’

কেন প্রশ্ন রমেশ চেন্নামানেনির নাগরিকত্ব নিয়ে

ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্যে আবেদন সংক্রান্ত যে নির্দেশিকা তাতে স্পষ্ট বলা আছে, যে কোন অভারতীয় (অনুপ্রবেশকারী নয়) এই নাগরিকত্ব পেতে পারেন যদি তিনি ১২ বছর ভারতবর্ষে থাকেন। এই সময়কালের মধ্যে মোট ১১ বছর এই দেশে থাকতেই হবে। আবেদন করার আগে অন্তত ১২ মাস দেশ ছাড়া চলবে না। রমেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আবেদনপত্র জমা দেওয়ার আগে ১২ মাস দেশে ছিলেন না। সে তথ্য তিনি গোপনও করেছেন।

রমেশের দল তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি রাজ্যে ক্ষমতাসীন। হায়দরাবাদ থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে ভেমুলাওয়াড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন রমেশ। তাঁর বিধায়ক পদ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্রের রিপোর্টে। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, তিনি যে অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি, সেই অঞ্চলের মানুষের কাছে তাঁর কাজ উদাহরণ হিসেবে থাকার কথা। কয়েক লক্ষ মানুষের ওপরে প্রভাব রয়েছে যাঁর, তিনি ভুয়ো তথ্য দেবেন এমনটা কাম্য নয়।

আজকের বাজার/লুৎফর রহমান