ভোলায় আউশ ধানের বাম্পার ফলন

জেলায় চলতি মৌসুমে আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ৯৭ হাজার ২২৩ হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদের টার্গেট থাকলেও আবাদ হয়েছে ৯৮ হাজার ৭৫৫ হেক্টর। যা লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৫৩২ হেক্টর জমি বেশি। ইতোমধ্যে কৃষকরা জমির শত ভাগ ধান কর্তন করেছেন। যা থেকে ২ লাখ ৭৮ হাজার ৫২৭ মে:টন চাল উৎপান হয়েছে। অন্যদিকে গত বছরের চেয়ে এবছর ১৫ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আউশের চাষ হয়েছে।

বৈশ্বিক মহামারি করোনা’র প্রভাবে যাতে দেশে খাদ্য সংকট সৃষ্টি না হয় সে কারণে এবার আবাদি জমির পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া আউশ আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করতে জেলায় ২২ হাজার প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের মাঝে উন্নত বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, সরকারিভাবে প্রত্যেক কৃষককে ৫ কেজি উচ্চফলনশীল জাতের বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার প্রদান করা হয়েছে। নির্ধারিত জমি থেকে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৫১১ মে:টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা থাকলেও তার থেকে ৪৪ হাজার মে:টন বেশি চাল হয়েছে। এর মধ্যে উফশী রয়েছে ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯০ ও স্থানীয় ৩০ হাজার ৬৩৭ মে:টন।

উপ-সহকারী উদ্বিদ সংরক্ষণ অফিসার মো: হুমায়ুন কবির বাসস’কে জানান, জেলার মোট আউশ আবাদের মধ্যে উফশীর আবাদ সবচে বেশি হয়েছে। কারণ ১ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আউশ আবাদ করলে ৩ থেকে সাড়ে ৩ মে:টন ধান উৎপাদন হয়। অপরদিকে সমপরিমাণ জমিতে উফশীর আবাদ করলে ৫ থেকে সাড়ে ৫ মে:টন ধান হয়। কাজেই বর্তমানে জেলায় উফশী (উচ্চ ফলনশীল) জাতের আউশ বেশি হচ্ছে।
তিনি জানান, এবছর ক্ষেতে পোকা-মাকড় দমনে রাসয়নিক কীটনাশক ব্যবহারের বিপরীতে পার্চিং ও আলোক ফাঁদ ব্যবহার অনেক বেড়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হরলাল মধু বাসস’কে বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় আউশের বাম্পার ফলন হয়েছে। বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলের মধ্যে এখানে আউশের আবাদ, উৎপদান ও শস্যের নিবিড়তা বেশি রয়েছে। গত বছর এ জেলায় ৮৩ হাজার হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ হলেও এবার তা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে যাতে দেশে খাদ্য সংকট দেখা না দেয় সে ব্যাপারটা আমাদের মাথায় রয়েছে। একইসাথে এবার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৫০০ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত আগস্ট মাস থেকে এখানে ফসল কর্তন শুরু হয়।

উপজেলা সদরের দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কোরালীয়া গ্রামের কৃষক হারুন মালতাই, আকবর আলী, রফিক আলী ও জাবেদ মিয়া বলেন, তারা ৫ একর জমিতে আউশের আবাদ করছেন। ইতোমধ্যে ধান কাটা শেষ হয়েছে। বর্তমানে ঝাড়াই-মাড়াই’র কাজ চলছে। ভালো ফলনে খুশি তারা।

তারা বলেন, জমিতে পোকা-মাকর দমনে পার্চিং ব্যবস্থা করেছেন। কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের পরামর্শ সেবা পেয়েছেন। আশা করছেন ভালো দাম পেয়ে তারা লাভবান হবেন।

উপ-পরিচালক হরলাল মধু আরো বলেন, এবছর ব্রী-ধান-৪৮ এর ফলন সবচে ভালো হয়েছে। আউশের শতভাগ জমি পাচিং পদ্ধতির আওতায় আনা হয়েছে। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা কৃষকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করেছে। ফলে বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও কৃষকদের নিরলস পরিশ্রমে ব্যাপক ফলন হয়েছে। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান