মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তিতাস

নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ বিভাগে জমা দিয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপক আব্দুল ওহাবের নেতৃত্বাধীন কমিটি বায়তুস সালাত মসজিদের বেসমেন্টের নিচে পুরাতন ও পরিত্যক্ত পাইপলাইনে গ্যাসের লিকেজ শনাক্ত করেছে।

মসজিদটি নির্মাণের সময় গ্যাসের পাইপলাইনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং সেখানে পরে লিকেজের সৃষ্টি হয়। ওই লিকেজ থেকেই গ্যাস বের হয়েই মসজিদে প্রবেশ করছিল।

আগুন লাগার কারণ ব্যাখ্যা করে ওহাব বলেন, ‘মসজিদটিতে দুটি বিদ্যুতের লাইন রয়েছে- একটি বৈধ এবং একটি অবৈধ। এশার নামাজ আদায়ের সময় বিদ্যুৎ চলে গেলে মোয়াজ্জেম এক লাইন থেকে আরেকটি লাইন চালু করতে গেলে স্পার্ক তৈরি হয়। যা থেকে পরবর্তীতে অগ্নিকাণ্ড এবং এসিগুলো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।’

তিতাস গ্যাসের কোনো কর্মচারী গ্যাস লিকেজ মেরামত করার জন্য ৫০,০০০ টাকা ঘুষ দাবি করার অভিযোগের কোনো প্রমাণ খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি। তবে তারা একজন তিতাস গ্রাহককে অভিযুক্ত করেছেন, যিনি তার লাইন থেকে গ্যাস রাইজার খুলে ফেলেছেন।

এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, কমিটির অনুসন্ধান ও সুপারিশে যাই থাক না কেন মন্ত্রণালয় এখন এই প্রতিবেদনটি পরীক্ষা করবে এবং বিস্ফোরণের জন্য দাযী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করবে।

‘দোষী সাব্যস্ত হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আমরা এখনও রিপোর্ট দেখতে পারিনি। তবে রিপোর্টটি দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে সহায়তা করবে,’ বলেন তিনি।

তবে মসজিদে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় তিতাস গ্যাস ও তাদের গ্রাহক উভয়েরই দায় রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, মসজিদটি কিভাবে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছে সে ব্যাপারে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) তদন্ত করছে।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে প্রকাশের মাধ্যমে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ৪ সেপ্টেম্বর এশার নামাজ আদায়ের সময় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাণ্ড হয়। এ ঘটনায় দগ্ধ ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দগ্ধ অবস্থায় ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩১ জনের মৃত্যু হয়।