২০৪ রানের টার্গেট ছুড়েছে বাংলাদেশ

উইকেট থেকে যথেষ্ট সহায়তা পাচ্ছেন স্পিনাররা। বল ব্যাপক টার্ন ও স্কিড করছে। মাঝে মধ্যে লাফিয়ে উঠছে, কখনও নিচু হয়ে যাচ্ছে। টিকে থাকাই দায় হয়ে উঠেছে ব্যাটসম্যানদের।

এ অবস্থায় চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২০৪ রানের টার্গেট দিয়েছেন বাংলাদেশ। এ রান তাড়া করে জিততে হলে সাকিব, তাইজুল, মিরাজ ও নাঈমদের কাছে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে সফরকারীদের।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১১

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের দেয়া ৩২৪ রানের বিপরীতে দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে ব্যাট করতে নেমে ২৪৬ রানে থেমে যায় সফরকারীদের ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৮ রানে এগিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় দিন শেষে পাঁচ উইকেটে ৫৫ রান তোলে স্বাগতিকরা। তৃতীয় দিন সকালে সবকটি উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ ৩৫.৫ ওভারে তোলে ১২৫ রান।

দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের দুই ওপেনার আউট হয়ে ফেরেন দলীয় ১৩ রানেই। জোমেল ওয়ারিকানের বলে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ২ রানে ফেরেন ইমরুল কায়েস (১৩/১)। এরপর রোস্টন চেজের বলে ক্রেইগ ব্রাথওয়েইটের ক্যাচে সৌম্য সরকার ফেরেন ব্যক্তিগত ১১ রানে (১৩/২)। ইমরুল-সৌম্যের পর দলীয় ৩২ রানে ফেরেন প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা মুমিনুল হক। চেজের বলে এলবির শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ১২ রানে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান (৩২/৩)। দ্রুতই ফেরেন ইনজুরি থেকে ফেরা অধিনায়ক সাকিব (৩৫/৪)। ওয়ারিকানের বলে গ্যাব্রিয়েলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। আর তাতেই বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।

এরপর মুশফিকের সঙ্গে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন মোহাম্মদ মিথুন। তবে দলীয় ৫৩ রানে বিশুর বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই ব্যাটসম্যান (৫৩/৫)। তৃতীয় দিনের শুরুতেই বিদায় নেন মুশফিকুর রহিম। দলীয় ৬৯ রানের মাথায় গ্যাব্রিয়েলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিনি করেন ১৯ রান। এরপর ব্যক্তিগত ১৫ রানে স্লিপে ক্যাচ দিয়েও জীবন পান মাহমুদউল্লাহ। দলীয় ১০৬ রানের মাথায় বাংলাদেশ সপ্তম উইকেট হারায়। ব্যক্তিগত ১৮ রান করে দেবেন্দ্র বিশুর বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়েন মিরাজ। দলীয় ১২২ রানের মাথায় বিদায় নেন ৫ রান করা নাঈম হাসান, বাংলাদেশ হারায় অষ্টম উইকেট। একই ওভারে বিশু ফেরান মাহমুদউল্লাহকে (৩১)। দলীয় ১২৫ রানের মাথায় শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন তাইজুল ইসলাম। তাতে ক্যারিবীয়ানদের সামনে জয়ের জন্য টার্গেট দাঁড়ায় ২০৪ রান।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দিন শেষে ৮ উইকেটে ৩১৫ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নেমে ৯ রান যোগ করতেই বাকি দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। জবাবে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে স্পিনারদের তোপে ২৪৬ রানে থামে উইন্ডিজদের ইনিংস। বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস সর্বোচ্চ ৫টি উইকেট নেন অভিষিক্ত নাঈম হাসান। বাংলাদেশের অষ্টম বোলার হিসেবে অভিষেক টেস্টে ৫ উইকেট তুলে নিলেন ১৭ বছর বয়সী এই তরুণ স্পিনার।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ইনজুরি থেকে দীর্ঘদিন পর ফেরা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এই ম্যাচের মধ্যদিয়ে অভিষেক হয় নাঈম হাসানের। ৯৩তম বাংলাদেশি টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে এই ম্যাচে অভিষেক হয় নাঈম হাসানের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের পর এই সিরিজ থেকে বাদ পড়েছেন খালেদ আহমেদ, আরিফুল হক এবং লিটন দাস। তাদের জায়গায় এসেছেন নাঈম হাসান, সৌম্য সরকার এবং সাকিব আল হাসান।

টেস্ট র‌্যাংকিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আট নম্বরে আর বাংলাদেশ নয় নম্বরে। এর আগে সাতটি সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ-উইন্ডিজ। ১০টিতেই জয় পায় ক্যারিবীয়ানরা। দুটি ম্যাচে জয় পায় টাইগাররা। বাকি দুটি ম্যাচ ড্র হয়। সবশেষ ক্যারিবীয় সফরে গিয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। সবশেষ পাঁচ টেস্টের চারটিতেই হেরেছে মুশফিক-ইমরুল-মিরাজরা। আর নিজেদের খেলা সবশেষ পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে হেরেছে উইন্ডিজ।

বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান এবং নাঈম হাসান।

উইন্ডিজ একাদশ: ক্রেইগ ব্রাথওয়েইট (অধিনায়ক), কিয়েরন পাওয়েল, শাই হোপ, শিমরন হেটমেয়ার, সুনীল অ্যামব্রিস, রোস্টন চেজ, শেন ডরউইচ, দেবেন্দ্র বিশু, কেমার রোচ, জোমেল ওয়ারিকান এবং শ্যানন গ্যাব্রিয়েল।