৬ আসনের সব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে: ইসি সচিব

আগামী একদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ছয়টি আসনের সব কেন্দ্রের ভোট ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশন সচিব (ইসি) হেলালুদ্দীন আহমদ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইভিএম ব্যবহার সংক্রান্ত কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা জানান।

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ৩০০ আসনের মধ্যে ছয়টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। তবে কোন কোন আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে তা আগামী ২৮ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের সামনে দৈবচয়নের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে। তবে আসনগুলো সিটি করপোরেশন ও শহর এলাকায় হবে বলে জানান তিনি।

৩৫টি রাজনৈতিক দল ও অংশীজনরা ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করা সত্ত্বেও কেন ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি কমিশনের সিদ্ধান্ত। ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় যেহেতু বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে, মানুষ অনেক শিক্ষিত হয়েছে। সামনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনাও আছে। বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করে সফলতা পেয়েছি। সবদিক বিবেচনা করে কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ থেকে আর সরে আসার সুযোগ নেই।

এর আগে কমিশনার মাহবুব তালুকদার ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করেছিলেন। আজকের বৈঠকে তার ভূমিকা কী ছিল, তিনি কি সম্মতি দিয়েছেন- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি আজকের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এর বিরোধিতা করেননি। তাই ধরে নিতে হবে উনার সম্মতি আছে।

এত প্রস্তুতি, এত বাজেট, এত প্রশিক্ষণ থাকা ‘সত্ত্বেও কেন ছয়টি আসনে ইভিএম ব্যবহার হচ্ছে- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছয়টি আসন কিন্তু কম নয়। গড়ে যদি প্রত্যেকটি আসনে ১৫০টি কেন্দ্র হয়, তাহলে প্রায় ৯’শ কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।

এই ছয়টি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করার জন্য কত জনবল লাগবে- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন যে সমস্ত আসন নির্ধারণ করা হবে, সেসব আসনে কতগুলো কেন্দ্র আছে, সবকিছু বিবেচনা করেই জনবল নির্ধারণ করা হবে।

তিনি জানান, এই ছয় আসনে ইভিএমের পাশাপাশি ব্যালট বাক্স ও পেপার রাখার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

ইভিএম কী?

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোট প্রয়োগে মেশিন বা ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি অণুসৃত হয় বলে সামগ্রিক প্রক্রিয়াটি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম নামে পরিচিত। এর অন্য নাম ই-ভোটিং। এতে একটি মেশিনে প্রায় চার হাজারটি পর্যন্ত ভোট দেয়া যায়। সর্বোচ্চ ৬৪ জন প্রার্থীর তালিকা থাকে। বাটন চাপ দিয়ে অক্ষরজ্ঞানহীন ব্যক্তিও ভোট দিতে পারে। একটি ভোট দিতে আনুমানিক ১৪ সেকেন্ড সময় লাগে।

একজন ভোটারের কোনভাবেই একটির বেশি ভোট দেয়ার সুযোগ থাকে না। সাধারণ ব্যালট ভোটের মতো কেন্দ্রেও সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে পোলিং এজেন্টরা, নেতাকর্মীরাসহ পর্যবেক্ষকরাতো থাকবেই। মেশিনটিতে একটি পূর্ব-প্রোগ্রামিং করা মাইক্রোচিপ থাকে যা প্রতিটি ভোটের ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে হিসেব করে প্রদর্শন করে। এতে ব্যালট কাগজে সিল মারার পরিবর্তে ভোটার পছন্দের প্রতীকের পাশের সুইচ টিপে ভোট দিতে পারেন।

আজকের বাজার/এমএইচ