পর্নোগ্রাফিযুক্ত ওয়েবসাইট ৬ মাস বন্ধ রাখার নির্দেশ

পর্নোগ্রাফিযুক্ত সব ওয়েবসাইট ছয় মাসের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিটিআরসি ও সব মোবাইল অপারেটরসহ সংশ্লিষ্ট নয়জনকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

পর্নোগ্রাফি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেয়।

এছাড়া, পর্নোগ্রাফিযুক্ত সব ওয়েবসাইট স্থায়ীভাবে কেন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। একইসাথে ফেসবুকসহ সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বয়স নির্ধারণের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর (এনআইডি) সংযুক্তি এবং মোবাইল অপারেটরগুলোর পক্ষ থেকে ইন্টারনেটের স্বল্প মেয়াদী লোভনীয় অফার বন্ধে কেন নির্দশনা দেয়া হবে না তাও রুলে জানতে চেয়েছে আদালত।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির পল্লব। সাথে ছিলেন অ্যাডভোকেট হাসান তারেক, ব্যারিস্টার মোজাম্মেল হক ও ব্যারিস্টার মাজেদুল কাদের।

হুমায়ূন কবির পল্লব জানান, শুধু পর্নোগ্রাফির সাইট নয়, অশ্লীল উপাদান আছে এমন সব ওয়েবসাইট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

রিটের শুনানিকালে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’র এক গবেষণা প্রতিবেদন আদালতে তুলে ধরা হয়। ওই প্রতিবেদনা বলা হয়, রাজধানীর ৭৭ শতাংশ স্কুলগামী শিক্ষার্থী পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এসময় আদালত বলে, এটা শুধু শিশুদের জন্য নয়, এর দ্বারা সমাজের অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত। এটি নতুন একটি বিষয়। তাই জাতির স্বার্থে এটিকে গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন।

পরে আদালত থেকে বেরিয়ে আইনজীবী হুমায়ূন কবির বলেন, ‘ইন্টারনেটে প্রবেশ সহজলভ্য হওয়ায় আমাদের যুবসমাজ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা এর দ্বারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা স্কুলে পড়াশোনা বাদ দিয়ে পর্নোগ্রাফি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দিকে ঝুঁকে পড়ছে, যা জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বয়ে আনবে। এছাড়াও পর্নোগ্রাফির ফলে তারা ধর্ষণসহ বিভিন্ন যৌন অপরাধে উদ্বুদ্ধ হয়। তাই এসব ওয়েবসাইট বন্ধ হওয়া অত্যন্ত জরুরি হওয়ায় আমরা রিট করি। রিটের শুনানিতে আদালতকে জানাই, ইতিমধ্যে ভারতে ৮৫৭টি পর্নো ওয়েবসাইট বন্ধ রাখা হয়েছে। ওই দেশের মোবাইল অপারেটরগুলোও পর্নোমুক্ত। আদালত আমাদের বক্তব্য শুনে রুলসহ আদেশ দিয়েছে।’

গত ১১ নভেম্বর মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন, চাঁদপুরের বাসিন্দা মো. রাসেল হোসেন ও ময়মনসিংহের খায়রুল হাসান সরকারের পক্ষে দেশের সব পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ