অর্থনৈতিক অঞ্চলের লাইন্সেস পেল সিটি গ্রুপ

সিটি ইকোনমিক জোন লিমিটেড নামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (স্পেশাল ইকোনমিক জোন) প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইন্সেস বা প্রাক যোগ্যতা সনদ পেয়েছে দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী সিটি গ্রুপ।

আজ ২২ মে সোমবার কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) সম্মেলন কক্ষে এ সনদপত্র প্রদান করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী। সনদপত্র গ্রহণ করেন সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান। এসময় সিটি গ্রুপের পরিচালক ও ফজলুর রহমানের ছেলে মো. হাসান, মেয়ে শম্পা রহমান, সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, সিটি গ্রুপ ৩টি ইকোনমিক জোন করার আবেদন করে। বোর্ড সভায় মাতুয়াইল ও রূপগঞ্জ এলাকার ২টি জোনের অনুমোদন দেয়া হয়। তিনি বলেন, যাচাই শেষে এখন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকার নোয়াগাঁও চরগন্ধপুর এলাকায় সিটি ইকোনমিক জোন লিমিটেডের প্রি-কোয়ালিফিকেশন সনদপত্র দেয়া হচ্ছে। ঢাকার অদূরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মাত্র ২ কিলোমিটার ভিতরে শীতলক্ষা নদীর তীরবর্তী অত্যন্ত ভালো জায়গায় এ জোন হচ্ছে। প্রায় ৮২ একর জায়গায় এ জোন করা হবে। এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সংযোগ রয়েছে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পানি শোধনাগার প্ল্যান্ট, নোংরা পানি অপসারণ, তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার প্ল্যান্ট, কঠিন বর্জ্য অপসারণ, অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থাসহ সকল পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা থাকবে।

পবন চৌধুরী আরও বলেন, প্রস্তাবিত এ জোনে ফুড ও বেভারেজ এবং রপ্তানি জাতীয় শিল্প কারখানা করা হবে। এখানে আর কি কি প্রতিষ্ঠান করা যায়- সে ব্যাপারেও পর্যবেক্ষণ করা হবে। আশা করি এ জোনে বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হবে। এ জোনে বাণিজ্যিক উৎপাদনের প্রথম বছর থেকে প্রায় ৩ হাজার দক্ষ-অদক্ষ নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে; যা পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যে ১৮ হাজারের অধিক হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এ জোনের জমি অধিগ্রহণ, মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ জোন দেশের সার্বিক আর্থ সামাজিক উন্নয়ন তথা শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও জিডিপিতে অবদান রাখবে।

“রাজধানীর অদূরে জমির দাম বেশি ও জোন করার ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সিটি গ্রুপের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের ঢাকার অদূরে এ জোন বেশ কর্মচাঞ্চল্য পরিবেশ সৃষ্টি করবে। বিনিয়োগ আর্কষণে সমস্যা হবে না। এ জোন করতে সিটি গ্রুপকে যেকোনো সহযোগিতা করা হবে।”

সিটি গ্রুপের প্রস্তাবিত মাতুয়াইলে সিটি গ্রুপের অপর ইকোনমিক জোন সর্ম্পকে তিনি বলেন, এ জোন এখনো লাইন্সেস পায়নি। তবে ঢাকার মধ্যে এমন উপযুক্ত জায়গার এ জোনে যাতে আইটি পার্ক করা যায় সেজন্য সিটি গ্রুপকে সহযোগিতা করা হবে। বিদেশি কোনো বড় প্রতিষ্ঠান যাতে বিনিয়োগ করতে পারে সেজন্যও সহযোগিতা করা হবে।

চেয়ারম্যান বলেন, ইতোমধ্যে ১৩টি প্রাইভেট ইকোনমিক জোনকে প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স ও ৪টি ইকোনমিক জোনকে চূড়ান্ত লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে জাপানের জন্য একটি ইকোনমিক জোন করা হচ্ছে। কেরানীগঞ্জ ও শ্রীনগরে ইকোনমিক জোন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পদ্মার দু’পাড়ে দুইটি বড় ইকোনমিক জোন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহসান বলেন, সিটি গ্রুপের ৫২ বছরের ব্যবসা। সিটি গ্রুপ এগ্রিমেন্ট থেকে কমিটমেন্টকে বেশি গুরুত্ব দেয়। আগামী দু’বছরের মধ্যে এ জোন দৃশ্যমান হবে। স্টাডি ও বেজার পরামর্শ অনুযায়ী এ জোনে উপযুক্ত শিল্প-কারখানা স্থাপন করা হবে।

তিনি বলেন, সরকার ৭৫ হাজার একর জমিতে আগামী ১৫ বছরে ১০০ ইকোনমিক জোন করার উদ্যোগ নিয়েছে। এর মাধ্যমে দেশে অকল্পনীয় উন্নয়ন হবে। অনেক শিল্প-কারখানা স্থাপিত ও কর্মসংস্থান হবে। এসব জোন দৃশ্যমান হলে অন্যান্য দেশ এর জন্য বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেবে।

অনুষ্ঠানে বেজার নির্বাহী সদস্য ড. এম এমদাদুল হক, মো. হারুনুর রশিদ, বেজা ও সিটি গ্রুপের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ২২ মে ২০১৭