আজ পবিত্র ঈদুল আজহা

মুসলমানদের ধর্মীয় দ্বিতৃয় সর্বোচ্চ উৎসব ঈদুল আজহা। যা বাঙালি মুসলানদের কাছে কোরাবানির ঈদ নামে বেশি মুখোরিত। পবিত্র হজ পালন শেষে গতকাল মঙ্গলবার সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচের বেশ কয়েকটি দেশে ঈদুল আজহা পালিত হয়েছে। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম দেশে আজ ঈদুল আজহা পালিত হচ্ছে।

আজ ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করবেন সামর্থ্যবান মুসলমানরা। ঈদুল আজহার সঙ্গে পবিত্র হজের সম্পর্ক রয়েছে। সোমবার মক্কার অদূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায় হজ পালন করেছেন।

স্থানীয় হিজরি মাস গণনা অনুযায়ী মঙ্গলবার সৌদি আরবে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। সকালে মুজদালিফা থেকে ফিরে হাজীরা মিনায় অবস্থান করে পশু কোরবানিসহ হজের অন্য কার্যাদি সম্পাদন করেছেন।

ঈদুল আজহা হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুত্র হজরত ইসমাইলের (আ.) সঙ্গে সম্পর্কিত। হজরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে পুত্র ইসমাইলকে আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানি করতে গিয়েছিলেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে এই আদেশ ছিল হজরত ইব্রাহিমের জন্য পরীক্ষা।

তিনি পুত্রকে আল্লাহর নির্দেশে জবাই করার সব প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ইসলামে বর্ণিত আছে, নিজের চোখ বেঁধে পুত্র ইসমাইলকে ভেবে যখন জবেহ সম্পন্ন করেন তখন চোখ খুলে দেখেন ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়েছে, যা এসেছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে।

সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি ধারণ করেই হজরত ইব্রাহিমের (আ.) সুন্নত হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কোরবানির বিধান এসেছে ইসলামী শরিয়তে। সেই মোতাবেক প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য পশু কোরবানি করা ওয়াজিব।

ইসলামে কোরবানি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে সুরা কাউসারে এ ব্যাপারে বলা হয়েছে, ‘অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন।’ রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ঈদুল আজহার দিন কোরবানির চেয়ে আর কোনো কাজ আল্লাহর কাছে অধিক পছন্দনীয় নয়।’ গরু, মহিষ, উট, ভেড়া. ছাগল, দুম্বাসহ যে কোনো হালাল পশু দিয়ে কোরবানি দেওয়া যায়।

আজ সকালে মুসল্লিরা নিকটস্থ ঈদগাহ বা মসজিদে ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করবেন। খতিব নামাজের খুতবায় তুলে ধরবেন কোরবানির তাৎপর্য। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনি-গরিব নির্বিশেষে সবাই একত্রে নামাজ আদায় ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

দেশবাসীকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। জাতীয় সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো ঈদ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে। ঈদের দিন সরকারিভাবে হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা ও শিশু সদনে উন্নত বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।

এদিকে রাজধানী ঢাকায় বেশ কয়েকটি ঈদের নামাজের জামাত হবে। ঈদের জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাব ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকবে।

ঢাকায় কোন মসজিদ বা ঈদগাহে কখন জামাত হবে, ইতিমধ্যে সেই তথ্য বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রকাশ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।

আজকের বাজার/এমএইচ