আজ ভারতে ২য় দফায় ভোট

প্রথম দফায় হামলা, ইভিএম ভাংচুর ও হতাহতের ঘটনা সত্ত্বেও ফের জমে উঠেছে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। বানচাল হওয়া দূরের কথা আরও সরগরম হয়ে ওঠে দ্বিতীয় দফার প্রস্তুতি। আর বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সেই দিন।

আগের দিন বুধবার (১৭ এপ্রিল) শেষ সময় পর্যন্ত প্রচারণা চালিয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো। নেতারা ছুটে বেড়িয়েছেন দেশের একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্তে।

প্রথম দফার পরই প্রচার কৌশলে পরিবর্তন এনে জাতীয় ইস্যুর বদলে আগের সেই উন্নয়নমন্ত্র জঁপেই ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছেন বিজেপি শিবিরের কর্ণধার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বিপরীতে ক্ষমতাসীনদের কট্টর হিন্দুত্ব জাতীয়তাবাদ ও বিভাজনের রাজনীতিকে দূরে ঠেলে অসাম্প্রদায়িক ভারত গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধীরা।

এনডিটিভি জানায়, নির্বাচন কমিশনের নিয়মানুযায়ী, প্রথম ধাপের সাত দিন পরই দ্বিতীয় ধাপের ভোট। সকাল ৭টা থেকে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ১২টি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত এলাকা মিলে মোট ৯৭টি আসনে ভোটগ্রহণ হচ্ছে।

আসনগুলোর বিপরীতে লড়ছেন ১ হাজার ৫৯০ জন প্রার্থী। এদের ৪২৭ জনই কোটিপতি। তাই শঙ্কা আছে ভোট কেনাবেচার। এ দফায় তামিলনাড়ুর ৩৯টি আসনের ৩৮টি আসনে ভোট হচ্ছে।

এ রাজ্যের ভেলোরে দ্রাবিড় মুনেত্রা কাজাগাম (ডিএমকে) প্রার্থীর ডেরা থেকে ১১ কোটি ৮০ লাখ রুপি উদ্ধারের পর ভোট বাতিল করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।

এখানে লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে ১৮টি বিধানসভা আসনে বাই-ইলেকশনের ভোট হচ্ছে। উভয় নির্বাচনেই ক্ষমতাসীন অল ইন্ডিয়ান দ্রাবিড় মুনেত্রা কাজাগাম (এআইএডিএমকে) ও বিজেপি জোটের সঙ্গে বিরোধী ডিএমকে ও কংগ্রেস জোটের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে তামিলনাড়–র ৩৮টি আসন ছাড়া আসাম রাজ্যের পাঁচটি, বিহারের পাঁচ, ছত্তিশগড়ের তিন, জম্মু-কাশ্মীরের দুটি, কর্নাটকের ১৪, মহারাষ্ট্রের ১০, মনিপুরের এক, ওড়িশার পাঁচ, ত্রিপুরার এক, উত্তরপ্রদেশের আট, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের তিন ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পন্ডিচেরির একটি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে গত ১১ এপ্রিল রাজ্যের ও কেন্দ্রশাসিত ৯১টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়।

এর মধ্যে রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশের ২৫, অরুণাচল প্রদেশের দুই, আসামের পাঁচ, বিহারের চার, ছত্তিশগড়ের এক, জম্মু-কাশ্মীরের দুই, মহারাষ্ট্রের সাত, মনিপুরের এক, মেঘালয়ের দুই, মিজোরামের এক, নাগাল্যান্ডের এক, ওড়িশার চার, সিকিমের এক, তেলেঙ্গানার ১৭, ত্রিপুরার এক, উত্তরপ্রদেশের আট, উত্তরাখণ্ডের পাঁচ, পশ্চিমবঙ্গের দুই, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের এক ও লাক্ষাদ্বীপের একটি আসনে ভোট হয়।

নির্বাচনে দেশজুড়ে ৬৯.৪৩ শতাংশ ভোট পড়ে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দুটি আসনে ভোট পড়েছিল ৮০ শতাংশেরও বেশি। আর সবচেয়ে কম ভোট পড়েছিল বিহারে।

এবারের লোকসভা নির্বাচনকে ঐতিহাসিক বলছেন বিশ্লেষকরা। তাদের কয়েকজনের মতে, এ নির্বাচনেই প্রমাণিত হবে, মোদি তার হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা নিয়ে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসবেন নাকি প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে পরাজিত হয়ে ভারতে নতুনধারার রাজনীতির সূচনা হবে।

সাত ধাপের নির্বাচনের প্রথমটিতে অন্ধ্রপ্রদেশের তাড়িপত্রি এলাকার একটি ভোট কেন্দ্রের বাইরে টিডিপি ও ওয়াইএসআরসিপির কর্মীদের সংঘর্ষে অন্তত দুজন নিহত হন। এ নির্বাচনে কোনো কোনো রাজ্যে ৭০ ও ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে। লোকসভায় ১৯ মে পর্যন্ত ভোট হবে। ফল গণনা ও প্রকাশ হবে ২৩ মে।