আপিল বিভাগে নতুন বিচারপতি নিয়োগের প্রয়োজন নেই: আইনমন্ত্রী

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা বহাল রেখে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করছে রাষ্ট্রপক্ষ। তবে এই শুনানির জন্য আপিল বিভাগে নতুন বিচারপতি নিয়োগের প্রয়োজন দেখছেন না আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, মামলাটির আপিল শুনানিতে থাকা যে পাঁচজন বিচারপতি বর্তমানে আপিল বিভাগে আছেন, তারাই শুনানি করতে পারবেন।

মঙ্গলবার ২৬ ডিসেম্বর সকালে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সরকারি আইন কর্মকর্তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ব্ক্তব্য দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘যতদূর সম্ভব যেই বেঞ্চ এটা শুনানি করেছিল, সে বেঞ্চই এটার শুনানি করবে। সে ক্ষেত্রে আমার মনে হয় না যে নতুন করে অ্যাপয়েনমেন্ট নেয়ার প্রয়োজন আছে।

তবে এর আগে রিভিউ আবেদন দায়ের করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছিলেন, মামলাটির শুনানিতে সাতজন বা তার বেশি বিচারক প্রয়োজন হবে।

এ ছাড়া নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির মাধ্যমে অধস্তন আদালত অধীনে নিয়ে সরকার উচ্চ আদালতও অধীনে নেওয়ার উদ্দেশ্যে ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউর আবেদন করেছে বলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির করা অভিযোগ নাকচ করে দেন আইনমন্ত্রী।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির সমালোচনার জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, উনারা তো পকেটে নিয়ে রেখেছিলেন। সেটার থেকে আস্তে আস্তে আমরা বের করে আজকে বিচার বিভাগকে একটা মর্যাদার আসনে বসাচ্ছি। সে জন্যই উনাদের এত গাত্রদাহ।

গত ৩ জুলাই ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখে সর্বসম্মতিক্রমে চূড়ান্ত রায়টি দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলও খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বর্তমান সরকারের আমলে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয়। এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

গত বছরের ৫ মে হাইকোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ গত ৪ জানুয়ারি আপিল করে। শুনানি শেষে ১৩ জুলাই আপিল বিভাগ সর্বসম্মতিতে ওই আপিল খারিজ করে রায় দেন। পূর্ণাঙ্গ রায় গত ১ আগস্ট প্রকাশিত হয়।

আজকের বাজার : এসএস/এলকে ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭