ঈদে আসছে জাভেরি গোল্ডের হায়দ্রাবাদি কঙ্কন: সঞ্জিত ঘোষ

বাংলাদেশের স্বর্ণালংকারের সুনাম অনেক পুরোনো। আমাদের এ শিল্পের কারিগরদের দক্ষতা সুবিদিত। তাদের হাতে গড়া ডিজাইনের অলংকার আমাদের ক্রেতা সাধারণকে বছরের পর ধরে সন্তুষ্ট করে এসেছে। ব্যবসায়ীরা চান সরকারের নীতি ও কৌশলগত সহায়তা। জুয়েলারি ব্যবসার খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠান জাভেরি গোল্ডের অন্যতম পরিচালক সঞ্জিত ঘোষ। আজকের বাজার ও এবি টিভির কাছে জুয়েলারি শিল্পের নানা বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। তার মতামত তারই ভাষায় প্রকাশ করা হলো।

আমাদের স্বর্ণ কারিগরেরা
আমাদের কারিগররা খুবই দক্ষ। জয়পুরি, হায়দ্রাবাদি ডিজাইনের অলংকার আমরা বানাতে পারি। আমাদের কারিগরদের যদি সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হয় তবে তারা আরও ভালো অলংকার বানাতে পারবে। তাদের সূক্ষ্ম হাতের নিত্য নতুন ডিজাইনে গড়া অলংকার আমরা গ্রাহকদের হাতে তুলে দিতে পারছি। কারিগরদের যদি আধুনিক যন্ত্রপাতি আর প্রশিক্ষণ  দেওয়া যায় তাহলে আমার বিশ্বাস আমরা আন্তর্জাতিক মানের অলংকার দিতে পারব। এতে আমাদের গ্রাহকরা সন্তুষ্ট হবে, বিদেশেও দিতে পারব। আমাদের কারিগরদের নিপুণ হাতে বানানো পাথরখচিত অলংকার যথেষ্ট উন্নতমানের। বিয়ের অনুষ্ঠান কিংবা বড় বড় পার্টিতে আমাদের  দেশিয় ডিজাইনের অলংকারই  বেশি চলে। জাভেরি গোল্ডের হাতের কঙ্কন, চুড়ি,  গলার চেইন একেবারেই আলাদা ডিজাইনের এবং এটা আমাদেরটা ছাড়া অন্য কোথাও পাওয়া যাবেনা। এগুলো আমাদের নিজস্ব ডিজাইনার ও কারিগররাই বানাতে সক্ষম। আমরা ভারত  থেকে খুব  বেশি কিছু আমদানি করিনা কারণ আমি মনে করি আমাদের ডিজাইনার আর কারিগররাই অনেক ভালোমানের অলংকার বানাতে পারে। এর পরও যদি সরকার আধুনিক যন্ত্রপাতি ওঅন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেয় তাহলে আরও ভালো কিছু আমরা পাবো।

জুয়েলারি সেক্টরে সমস্যা
ডিজাইনের ক্ষেত্রে আমাদের খুব একটা সমস্যা নেই। তবে গত প্রায় ২০ বছর ধরে আমরা  যে দাবি করে আসছি তা হলো এয়ারপোর্টে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত স্বর্ণ আনা যায়, এর পমিাণ বাড়ানো  গেলে আমাদের এই শিল্প দেশকে  আরও বেশি কিছু দিতে পারবে। আর সরকার আমাদের কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতি ও মেটাল জাতীয় জিনিসপত্র দিয়ে সহায়তা করতে পারে। এতে আমাদের আর পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে এগুলো আমদানি করতে হবে না।

হাতের না মেশিনের গয়না
বিদেশ থেকে আসা  মেশিনের  তৈরি গয়নার কাছে কি আমাদের কারিগরদের হাতে গড়া গয়না মার খাচ্ছে? না, একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী হিসেবে আমি তা মনে করছিনা। আমাদের কারিগররা অনেক উন্নতমানের গয়না বানাতে পারে। একটু সময়ের হেরফের ছাড়া আর বিশেষ পার্থক্য নেই মেশিন কিংবা হাতে গড়া গয়নার মধ্যে।  মেশিনে  যেটা দুই দিনে হয় হাতে  সেটা বড়জোড় ৫ দিন লাগতে পারে। আর  বেশি মেশিনের ফলে আমাদের অনেক দক্ষ কারিগর বেকার হয়ে যেতে পারে। তবে কাজে গতি আনতে কিছু কিছু মেশিনের দরকার আছে। আমাদের নিজস্ব ডিজাইন যখন ইমিটেশনের গয়নায় চলে যায় তখন কিছুটা খারাপ লাগে যে জিাইনইনটা ইমিটেশনে এসে গেল?

ঈদে গয়নার ব্যবসা
ঈদকে সামনে রেখে আমরা বেশ কিছু নতুন ডিজাইনের গয়না বাজারে আনবো। আশা করি ঈদে আমাদের ভালো ব্যবসা হবে। ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। আশা করি ১৫ রোজার মধ্যে আমরা এগুলো বাজারে দিতে পারব। নতুন  বেশ কিছু ডিজাইনের গয়না আমরা আনছি।এর মধ্যে রয়েছে হায়দরাবাদের ডিজাইন কিন্তু আমাদের এখানকার কারিগরদের বানানো  মেয়েদের হাতের কঙ্কন, জয়পুরি লকেট আর বোম্বের  ছোট ছোট কিছু গয়নার সেট। আমরা বলতে পারি এবারের ঈদে এদেশের মেয়েদের জন্য জাভেরি গোল্ডের নতুন উপহার হবে হায়দরাবাদি কঙ্কন। আর কিছু চেইন ও জয়পুরি ডিজাইনের বড় বড় আংটি থাকছে ঈদের আগে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও নতুনদের জন্য পরামর্শ
জাভেরি গোল্ডের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মধ্যে আছে, আমাদের আরও একটি শাখা স্থাপন। আটি গুলশান কিংবা  অন্য এলাকায়ও হতে পারে। আর আমরা চাই আমাদের জুয়েলার্সের গয়না থাকুক বাংলার ঘরে ঘরে। আমাদের সূè হাতের গয়নার অনন্যতা আমাদের মা-বোনদের যুগ যুগ তুষ্ট করুক।

নতুনদের প্রতি একটাই আমার উপদেশ সততা আর ধৈর্য্য নিয়ে ব্যবসা করুন সাফল্য আসবেই।

সঞ্জিত ঘোষ
পরিচালক, জাভেরি গোল্ড

আজকের বাজার:জেবা,নাজমুল/আরআর/২৯ মে ২০১৭