উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি : মৃতের সংখ্যা ৩৭

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এবং ভারী বর্ষণের ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বন্যার কবলে গত দুই দিনে মোট ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ১৩ আগস্ট রোববার ১৯ জনের মৃত্যু হয়। ১৪ আগস্ট সোমবার মৃত্যু হয় আরও ১৮ জনের। এদের মধ্যে দিনাজপুরে পাঁচজন, কুড়িগ্রামে সাতজন, লালমনিরহাটে তিনজন ও নীলফামারীতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

উত্তরের পাঁচ জেলায় সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ২৩টি স্থানে বাঁধ ভেঙে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নদ-নদীর পানি ২৭ টি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী তিন দিন দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর পাঁচ থেকে সাত দিনের মাথায় বন্যার পানিতে ডুবতে পারে পদ্মা অববাহিকার কয়েকটি জেলা।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী ধরলা, তিস্তা, যমুনেশ্বরী, ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, ধলেশ্বরী, গুর, ধলেশ্বরী, ইছ-যমুনা, পুনর্ভবা, টাঙ্গন, আত্রাই,পদ্মা, সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, যদুকাটা, সোমেশ্বরী ও কংস নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে বয়ে যাচ্ছে । এই নদীগুলোর দেশের নদ-নদীগুলোর ৯০টি পর্যবেক্ষণ পয়েন্টের ৬৯টিতে পানি বাড়ছে। ২৭টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপরে আছে।

বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বন্যা হয়েছিল ১৯৮৮ সালে। তখন যমুনার পানি বিপৎসীমার ১১২ সেন্টিমিটার উপরে উঠেছিল। এরপর এটি গত বছর ১২১ সেমি বিপদসীমার উপরে উঠে। এবার সেটি ১২৬ সেন্টিমিটার উঠে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এছাড়া কাজিপুর, সিরাজগঞ্জ ও সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যমুনা নদী বিপদসীমার ৯৬-১০০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে।

গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মাও বিপদসীমা ছাড়িয়েছে; এখন ১৬ সেন্টিমিটার উপরে। এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ১০০ বছরের মধ্যে তিব্বতের ব্রহ্মপুত্রে সবচেয়ে বেশি পানি বেড়েছে। ৯৮ বছরের মধ্যে তিস্তা অববাহিকা ও ৭৫ বছরের মধ্যে গঙ্গা অববাহিকায় সবচেয়ে বেশি পানি বেড়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, সাধারণত ব্রহ্মপুত্র-গঙ্গা ও যমুনা অববাহিকার পানি একযোগে বাড়লে বড় বন্যা হয়। এ বছর ওই তিন অববাহিকা ছাড়াও তিস্তা নদীর পানিও বাড়ছে। এবারের বন্যা ১৯৮৮ সালের বন্যাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

আজকের বাজার: এমএম/ ১৫ আগস্ট ২০১৭