এক বছরে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ৩০ কোটি টাকা নীট মুনাফা অর্জন

গত এক বছরে লোকসান কাটিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট মোট ৩০ কোটি টাকা নীট মুনাফা অর্জন করেছে। কল্যাণ ট্্রাস্টের জমি ভাড়া, দোকান ও মার্কেট থেকে মাসিক ভাড়া আদায় এবং ট্রাস্টের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভাড়া দিয়ে এই মুনাফা অর্জিত হয়।
মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইফতেখারুল ইসলাম খান বাসসকে জানান, চরম অব্যবস্থাপনা আর অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কারণে এই প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন যাবৎ লোকসানের কবলে ছিল।
তিনি বলেন, আগের অর্থবছরে কল্যাণ ট্রাস্টের নীট লোকসান ছিল ১০ কোটি টাকা। সেই লোকসান কাটিয়ে বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠানটিকে লাভের মুখ দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। ইফতেখারুল ইসলাম ২০১৮ সালে মার্চ মাসে এই প্রতিষ্ঠান যোগদান করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, একটি বিশেষ মহলের সঙ্গে ট্রাস্টের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যোগসাজশের কারণে এই প্রতিষ্ঠানটি কোটি কোটি টাকার আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষ করে রাজধানী সুপার মার্কেট ও গুলিস্থান কমপ্লেক্স থেকে প্রতিবছর যে পরিমাণ অর্থ আয় হয় তার মাত্র এক দশমাংশ কল্যাণ ট্রাস্ট পায়। বাকী টাকা এই বিশেষ প্রভাবশালী মহল কল্যাণ ট্রাস্টের তহবিলে জমা না দিয়ে নিজেরা ভাগবাটোরা করে নিয়ে যায়।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, ১৯৭২ সালে প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট সঠিক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা করার মাধ্যমে পরিচালিত হলে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে আরো কয়েকগুণ বেশি আয় করে ট্রাস্ট লাভবান হতে পারে। অতীতে একটি বিশেষ মহল রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এই ট্রাস্টের জমি ও প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে দখল করে নানাভাবে লাভবান হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের জমি, মার্কেট ও দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জোরপূর্বক দখল করে ব্যক্তিগতভাবে অনেকে লাভবান হচ্ছে। রাজধানী সুপার মার্কেটের প্রতিটি দোকান থেকে দশ হাজার টাকা করে মাসিক ভাড়া আদায় করা হয় অথচ কল্যাণ ট্রাস্টের তহবিলে জমা দেয়া হয় মাত্র এক হাজার টাকা। রাজধানী সুপার মার্কেটে মোট প্রায় দুই হাজার দোকান রয়েছে। যা থেকে কল্যাণ ট্রাস্ট পায় প্রতিমাসে ২০ লাখ টাকা আর ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা প্রভাবশালীরা নিয়ে যায়।
শুধু রাজধানী সুপার মার্কেট থেকেই কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিবছর ২১ কোটি ৬০ লাখ টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান। এছাড়া গুলিস্থান কমপ্লেক্স থেকে প্রতি মাসে কল্যাণ ট্রাস্টের তহবিলে জমা হয় মাত্র ১৫ লাখ টাকা। অপরদিকে এখান থেকে প্রতিমাসে ভাগা আদায় হয় প্রায় ১কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রভাবশালীরা এখান থেকে নিয়ে যায় ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। এভাবে প্রতিবছর প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১৬ কোটি ২০ লাখ টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ইফতেখারুল ইসলাম খান জানান, এভাবে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করলে দেখা যায় মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতি বছর কয়েকশ’ কোটি টাকার আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সূত্র – বাসস