এনসিএল:আগামীকাল মাঠে নামবে ঢাকা-রাজশাহী-রংপুর-খুলনা প্রথম জয়ের সন্ধানে !

আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ২১তম জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) দ্বিতীয় রাউন্ড। প্রথম স্তরের ম্যাচে কাল মুখোমুখি হবে ঢাকা বিভাগ-রংপুর বিভাগ এবং খুলনা বিভাগ-রাজশাহী বিভাগ। এই স্তরে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে জয় পায়নি কোন দলই। চার দলই নিজেদের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে ড্র করেছিলো। ঢাকা বিভাগের সাথে রাজশাহী এবং রংপুরের বিপক্ষে ড্র করেছিলো খুলনা। তাই এবারের আসরে প্রথম জয়ের স্বাদ নিতে কাল মাঠে নামবে চার দলই।
প্রথম রাউন্ডে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে রংপুরের বিপক্ষে খেলতে নামে স্বাগতিকরা। কিন্তু বৃষ্টির কারণে এ ম্যাচের প্রথমদিন টস ছাড়াই পরিত্যক্ত হয়ে যায়। দ্বিতীয় দিন মাঠে গড়ায় ম্যাচটি। সেখানে টস জিতে প্রথমে রংপুরকে ব্যাটিং-এ পাঠায় খুলনা। ব্যাট হাতে নেমে তানবীর হায়দার ও সোহরাওয়ার্দি শুভ‘র জোড়া হাফ-সেঞ্চুরির পরও প্রথম ইনিংসে ২২৭ রানেই অলআউট হয় রংপুর। তানবীর ৬৪ ও শুভ ৫০ রান করেন। খুলনার অভিজ্ঞ স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক ৮১ রানে ৪ উইকেট নেন।
এরপর নিজের ইনিংসে রানের পাহাড় গড়ে খুলনা। দুই ওপেনার রবিউল ইসলাম রবি ও ইমরান উজ্জামান ১৩৬ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন। দু’জনই হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নিজেদের ইনিংস বড় করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। রবি ৭৬ ও ইমরান ৭১ রানে আউট হন।
এরপর দলকে একাই রানের পাহাড়ে তুলেছেন জাতীয় দলের বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস। সেঞ্চুরি তো তুলেছেনই, ডাবল-সেঞ্চুরির স্বাদও নিয়েছেন তিনি। ৪০৬ মিনিট ব্যাটিং করে ৩১৯ বল খেলে অপরাজিত ২০২ রান করেন ইমরুল। ১৯টি চার ও ৬টি ছক্কা হাঁকান ইমরুল। ফলে ৯ উইকেটে ৪৫৪ রানে ইনিংস ঘোষনা করে খুলনা। ফলে এই ইনিংস থেকে ২২৭ রানের লিড পায় খুলনা।
বড় লক্ষ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে ম্যাচের চতুর্থ ও শেষ দিনে ৯ ওভার ব্যাট করে ১ উইকেটে ৩৩ রান তুলতে পারে রংপুর। এরপরই ম্যাচটি ড্র হয়। ম্যাচ ড্র করায় খুলনার পয়েন্ট ৪ দশমিক ০১। আর রংপুরের ২ দশমিক ৫। এই স্তরে পয়েন্ট টেবিলে সবার উপরে রয়েছে খুলনা। টেবিলের তলানিতে রংপুর।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে বোলিং বেছে নেয় রাজশাহী বিভাগ। ব্যাটিং-এ নেমে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৪০ রানে গুটিয়ে যায় ঢাকা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৮৮ রান করেন তাইবুর রহমান। তার ১২৩ বলের ইনিংসে ৯টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো। এছাড়া ওপেনার রনি তালুকদার ১১৪ বলে ৬৩ রান করেন। রাজশাহীর স্পিনার তাইজুল ইসলাম ৯২ রানে ৪ উইকেট নেন।
জবাবে ঢাকার ডান-হাতি পেসার সুমন খানের বোলিং তোপে ১৯৭ রানেই গুটিয়ে যায় রাজশাহী। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ৭৫ ও অধিনায়ক জহিরুল ইসলাম ৬৪ রানের ইনিংস খেলেও রাজশাহীকে লিড এনে দিতে পারেননি। ঢাকার সুমন ৫০ রানে ৫ উইকেট নেন।
প্রথম ইনিংসে ৪৩ রানের লিডকে সাথে নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৪ রানের সংগ্রহ পায় ঢাকা। এবার দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেন তাইবুর। প্রথম ইনিংসের মত এবারও ৮৮ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন তিনি। তার সাথে রাকিবুল হাসানের ৬৫ রান ছিলো গুরুত্বপূর্ণ। রাজশাহীর পক্ষে এই ইনিংসে সেরা বোলার ছিলেন তাইজুল। ১০৫ রানে ৫ উইকেট নেন।
ম্যাচ জয়ের জন্য রাজশাহীকে ২৯৮ রানের টার্গেট দেয় ঢাকা। ৫৫ ওভারে ৯৯ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে রাজশাহী। এতে ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন দেখছিলো ঢাকা। কিন্তু অধিনায়ক জহিরুলের টেস্ট মেজাজের ব্যাটিং রাজশাহীকে হার থেকে রক্ষা করে। ২৭৪ মিনিট ক্রিজে থেকে ১৮১ বল মোকাবেলা করে অপরাজিত ৪০ রান করে ম্যাচটি ড্র‘তে পরিণত করেন জহিরুল। দুই ইনিংসেই ৮৮ রান করায় ম্যাচ সেরা হয়েছেন ঢাকার তাইবুর। ম্যাচ ড্র করায় ঢাকা-রাজশাহী পয়েন্ট সমান ৩ দশমিক ৫ করে। পয়েন্ট টেবিলে ঢাকা দ্বিতীয় ও রাজশাহী তৃতীয়।