এনসিএলে সর্বাধিক রান সংগ্রাহকের তালিকায় বিজয়-মেহেদিরা

শনিবার পর্দা নামলো ১৯তম জাতীয় ক্রিকেট লিগের। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম আকর্ষণ জাতীয় লিগের এবারের আসরে ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়াতে দেখা গেছে একাধিক ব্যাটসম্যানকে। যার মধ্যে সবচেয়ে প্রাপ্তির ছিল জাতীয় দলের পাইপলাইনে যে সকল ক্রিকেটারদের বিবেচনা করা হচ্ছে তাদের ব্যাটে রানের ফোয়ারা ছুটতে দেখা।

জাতীয় ক্রিকেট লিগের ২০১৭/১৮ আসরে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন এনামুল হক বিজয়। ৬ ম্যাচে অংশ নিয়ে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন আট ইনিংসে। আর তাতেই সর্বাধিক রান সংগ্রাহকের তালিকার শীর্ষস্থানটি নিজের দখলে নিয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। জাতীয় দলে আবারও প্রত্যাবর্তনের জন্য নির্বাচকদের দরজায় নিঃসন্দেহে তার এই পারফরম্যান্স কড়া নাড়বে।

সদ্য সমাপ্ত জাতীয় ক্রিকেট লিগে দুবার দ্বিশতকের ইনিংস খেলার পাশাপাশি প্রথম শ্রেণীর ক্যারিয়ারে নিজের সেরা স্কোর গড়ার আসরে ৭৭.৩৭ গড়ে মোট ৬১৯ রান করেছেন এনামুল। যার মধ্যে একটি অর্ধশতকের ইনিংসও ছিল।

এনামুলের পরে তালিকার দ্বিতীয়স্থানে অবস্থান তারই সতীর্থ মেহেদি হাসানের। তরুণ উদীয়মান এই ক্রিকেটারও এবারের এনসিএলে দেখা পেয়েছিলেন দুটি শতক ও একটি অর্ধশতকের। শেষ রাউন্ডের ম্যাচে ক্যারিয়ারের প্রথম দ্বিশতকের দিকে ছুটলেও থামেন ১৭৭ রানে। যা তাকে এবারের আসরে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫০০ রান করার অর্জন এনে দেয়। ১৯তম এনসিএলে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৮৩.৫০ গড়ে করেন ৫০১ রান।

মেহেদির পরবর্তী স্থানে রয়েছেন রাজশাহী বিভাগের হয়ে জাতীয় লিগ মাতানো মিজানুর রহমান। টানা তিন রাউন্ডে শতক হাঁকানো এই ব্যাটসম্যানের সংগ্রহ ৪৯২ রান। যা করতে তিনি সময় নিয়েছেন মাত্র সাত ইনিংস। ৮২ গড়ে এনসিএলে রান করা এই ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ছিল ১৭৫ রানের অনবদ্য ইনিংস। প্রসঙ্গত সদ্য সমাপ্ত জাতীয় লিগে সবচেয়ে বেশি শতক হাঁকান রাজশাহীর এই প্রতিভাবান ক্রিকেটারই। এক অর্ধশতকের সাথে তিন শতক হাঁকান তিনি।

তালিকার চতুর্থ রানে অবস্থান বাংলাদেশ ক্রিকেটের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার নাইম ইসলামের। বরাবরের মতো এবারের আসরেও উজ্জ্বল ছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। প্রতিযোগিতার ছয় ম্যাচের সবকয়টি ম্যাচে খেললেও অন্যদের চেয়ে কম ইনিংসে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। যার ফলে তালিকার চতুর্থ অবস্থানে থেকেই আসরটি শেষ করতে হয়েছে তাকে। এবারের জাতীয় লিগে দুটি শতকের পাশাপাশি একটি শতকের দেখা পেয়েছিলেন তিনি। যার মধ্যে একটি শতককে দ্বিশতকে পরিণত করতে সক্ষম হন তিনি। ২১৬ রানের ঐ ইনিংসটিই ছিল এবারের আসরে তার ব্যক্তিগত সেরা ইনিংস।
৩০ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার রংপুর বিভাগের হয়ে এবারের আসরে লড়ে ৬ ইনিংস থেকে সংগ্রহ করেন ৪২২ রান। এবারের প্রতিযোগিতায় তার গড় ছিল ৮৪.৪০। যা এবারের আসরে ৪০০কিংবা তার চেয়ে বেশি রান করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

সর্বাধিক রান সংগ্রাহকের তালিকার পঞ্চম অবস্থানে রয়েছেন মার্শাল আইয়ুব। ঘরোয়া ক্রিকেটের আরেক ধারাবাহিক ক্রিকেটার মার্শালের ব্যাটে বরাবরের মতো এবারও ছুটেছে রানের ফোয়ারা। ৯ ইনিংসে ব্যাট করে ৪১৬ রান সংগ্রহ করেছেন তিনি। এই রান করতে একটি শতকের ইনিংস খেললেও, অর্ধশতক করেছিলেন মোট তিন ইনিংসে। এবারের আসরে ১৩১ রান তার সর্বোচ্চ। যদিও এই রানকে ছাড়িয়ে যাওয়ার বেশ কিছু সুযোগ ধরা দিয়েছিল তার হাতে। তবে শেষ পর্যন্ত সফলতার মুখ না দেখায় ৫৯.৪২ গড়ে ৪১৬ রানেই থামে তার এবারের এনসিএল বা জাতীয় ক্রিকেট লিগের যাত্রা।

মার্শালের পরেই অবস্থান অর্থাৎ তালিকার ষষ্ঠস্থানে অবস্থান বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে বেশি রানের মালিক তুষার ইমরানের। নিজের নামের প্রতি সুবিচার না করতে পারলেও এবারের আসরে ৩৭৭ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। ৮ ইনিংসে ব্যাট করে এই রান করেছেন রেকর্ড শিরোপা নিজেদের দখলে নেওয়া খুলনা বিভাগের এই ব্যাটসম্যান। আসরে একটি মাত্র শতক হাঁকালেও, সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অর্থাৎ চারটি অর্ধশতকের ইনিংস এসেছে তার ব্যাট থেকে।

আজকের বাজার: সালি / ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭