এনু-রুপনের তিন মামলার চার্জশিট গ্রহণ

পুরান ঢাকার আলোচিত দুই ভাই এনামুল হক এনু ও রূপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে তিন মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত।
রাজধানীর সুত্রাপুর থানার মানি লন্ডারিং আইনের পৃথক তিন মামলায় আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এসব চার্জশিট গ্রহণ করেন।

গত ২২ জুলাই আদালতে তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। পৃথক তিন মামলার চার্জশিটে ৩ কোটি ৫ লাখ টাকার মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।

জানা গেছে, এনু-রুপনের নামে ব্যাংকে ১৯ কোটি টাকা এবং পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ১২৮টি ফ্ল্যাটের খোঁজ মিলেছে। ক্যাসিনো ব্যবসার মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন এ দুই ভাই।

২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়াদের পুরান ঢাকার বানিয়ানগরের বাসায় এবং তাদের দুই কর্মচারীর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। সেখান থেকে পাঁচ কোটি টাকা এবং সাড়ে সাত কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে সূত্রাপুর ও গেন্ডারিয়া থানায় ছয়টি মামলা হয়।

পরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এনু-রুপনের লালমোহন সাহা স্ট্রিটের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। ওই বাড়ি থেকে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা জব্দ করা হয়। আর পাঁচ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআরের কাগজ এবং এক কেজি স্বর্ণ জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় দুই ভাইয়ের নামে আরও দু’টি মামলা হয়।

অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনও এনু-রুপনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক দু’টি মামলা করে। মামলায় এনুর বিরুদ্ধে ২১ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের এবং রুপনের বিরুদ্ধে ১৪ কোটি ১২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৮২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। তবে দুদক এখনো এ বিষয়ে আদালতে কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। এনু-রুপনের আয়ের বড় উৎস ছিল মতিঝিলের ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসা।

স্থানীয় লোকজন ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, কয়েক বছর ধরে ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসার মাধ্যমে রাতারাতি টাকার কুমির বনে যান দুই ভাই। নগদ টাকায় বাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমি কেনা তাদের নেশায় পরিণত হয়।
সিআইডির তদন্তে ১২৮টি ফ্ল্যাট, ছয়টি গাড়ি ও কয়েক বিঘা জমির খোঁজ মিলেছে।

সিআইডি তদন্ত করে দেখেছে, বাসায় নগদ টাকা ও স্বর্ণ রাখার পাশাপাশি ব্যাংকেও বিপুল পরিমাণ টাকা জমা রাখেন এনু ও রুপন ভূঁইয়া।
সিআইডির তদন্ত অনুযায়ী, তাদের ব্যাংক হিসাবে জমা রয়েছে ১৯ কোটি ১১ লাখ ৩৬ হাজার ৩৯৪ টাকা। আদালতের আদেশে এসব টাকা জব্দ রয়েছে।

তারা পুরান ঢাকার বংশাল, ইংলিশ রোড, নয়াবাজার, মতিঝিল, শান্তিনগর, গুলশান, ধোলাইখাল ও নবাবপুর এলাকায় সাতটি বেসরকারি ব্যাংকে এসব টাকা জমা রাখেন।
চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের একটি ভবন থেকে এক সহযোগিসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।