এবার প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাবে ‘কুইক ট্রেসিং প্রিন্ট’

প্রশ্ন ফাঁস এখন দেশের অন্যান্য সব সমস্যার মধ্যে অন্যতম। কোনভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না এই চক্রকে। সব নিরাপত্তা বেষ্টনী বেদ করে ফাঁস হচ্ছে প্রশ্ন। তবে সেই যন্ত্রণা থেকে এবার মুক্তি মিলতে যাচ্ছে। এর জন্য আবিস্কার হয়েছে ‘কুইক ট্রেসিং প্রিন্ট’। এটি আবিস্কার করেছেন চট্টগ্রামের তরুণ শিক্ষার্থী মো. রকিবুল ইসলাম ।

মো. রকিবুল ইসলামের আবিস্কৃত পদ্ধতিটির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘কুইক ট্রেসিং প্রিন্ট’। এতে বিদ্যুৎ, কম্পিউটার, ইন্টারনেট কিংবা কোনো প্রযুক্তির প্রয়োজন হবে না। এ পদ্ধতির মাধ্যমে পরীক্ষা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রেই প্রশ্নপত্র ছাপানো যাবে। প্রযুক্তির সাহায্য লাগে না বলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের পরীক্ষা কেন্দ্রেও পদ্ধতিটি ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র প্রিন্ট করা সম্ভব।

মো. রকিবুল ইসলাম জানান, ধরুন শিক্ষামন্ত্রণালয় নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্রের এক থেকে দশটি সেটের ট্রেসিং প্রিন্ট তৈরি করে তা কেন্দ্রে পৌঁছে দিল। এখন পরীক্ষার দিন সকালে কিংবা আগের রাতে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিল যে, চট্টগ্রামের ২০ নম্বর কেন্দ্রে ৯ নম্বর সেটের প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা হবে।  তখন ওই কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা কেন্দ্র সচিব ৯ নম্বর সেটের ট্রেসিং প্রিন্টটি কোনো নিরাপদ রুমে নিয়ে যাবে। সেখানে ম্যাজিস্ট্রেট বা প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার উপস্থিতিতে কেন্দ্রের শিক্ষার্থী অনুযায়ী প্রশ্নপত্র ছাবে।

যেভাবে কাজ করবে:
পরীক্ষার সেটের নির্দেশনা পাওয়ার পর তৈরি করা ট্রেসিং প্রিন্টটি ফ্রেমের সঙ্গে সংযোজন করতে হবে। সংযোজনের পর একজন ব্যক্তি প্রতি এক ঘণ্টায় ৫০০-এর বেশি প্রশ্নপত্র প্রিন্ট করতে পারবে। একটি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা যদি দুই হাজার হয়, তাহলে সেখানে চারজন মানুষ দিয়ে এক ঘণ্টায় এই সংখ্যক প্রশ্নপত্র প্রিন্ট করা যাবে।

তকে কেন্দ্রে প্রিন্ট করতে ফ্রেম থাকতে হবে। আর ফ্রেম বানাতে চার টুকরো কাঠ, একটা স্ট্ক্রিন কাপড় ও পেরেক লাগবে। প্রিন্ট করতে লাগবে কালি, কাঠের তৈরি হাতল এবং একটা সাদা কাচের গ্লাস। প্রশ্নপত্রের ট্রেসিং প্রিন্টটা ফ্রেমের সঙ্গে যুক্ত করে কাগজের ওপর ছাপ দিয়ে যত কপি প্রয়োজন, প্রশ্ন প্রিন্ট করা যাবে।

রকিবুল ইসলাম চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার শোভনদণ্ডী ইউনিয়নের রশিদাবাদ গ্রামের কাজী মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম ছেলে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স চতুর্থ বর্ষে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়ন করছেন।

শিক্ষাবিদদের মতে, একজন শিক্ষার্থীর এমন উদ্ভাবন অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। তার উদ্ভাবিত এ পদ্ধতি নিয়ে নীতিনির্ধারণের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া দরকার।

আরএম/