এলাকার মানুষের পাশে থাকতে চান সাইদুর রহমান

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ওয়ার্কার্স পার্টি মনোনিত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ সাইদুর রহমান। নির্বাচিত হলে এলাকার জনগনের সেবায় কিভাবে নিজেকে নিয়োজিত করতে চান,কোন কোন সমস্যাকে অগ্রাধিকার দিয়ে সমাধান করতে চান,সে সব বিষয় তুলে ধরেছেন আজকের বাজারের কাছে। তার পরিচিতি, চিন্তা-চেতনা ও কর্মপরিকল্পনার উল্লেখযোগ্য অংশ,তারই ভাষায় পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো।

নির্বাচিত হলে এলাকার মানুষের জন্য যে কাজগুলো সবার আগে গুরুত্ব দেয়া হবেঃ জনগনের মূল্যবান ভোটে আসন্ন নির্বাচনে উপজেলা চেয়াম্যান পদে নির্বাচিত হলে,এলাকার সকল সমস্যা চিন্হিত ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা তো থাকবেই,তবে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দেব তরুনদের কর্মসংস্থানের প্রতি। উপজেলার কৃষি ও মৎস সম্পদে সমৃদ্ধ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে কিভাবে বেকারত্ব ও হতাশা লাঘব করা যায় তার পথ খুঁজে বের করবো। পাশাপাশি চেষ্টা থাকবে তরুন উদ্যোক্তা তৈরি করার। তারপর গুরুত্ব দিতে চাই শিক্ষার মান উন্নয়ন ও কর্মমূখী শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠানের পরিবেশের দিকে। বাড়ী-ঘর, হাট-বাজার ও রাস্তা-ঘাটসহ অবকাঠামো পরিকল্পিতভাবে উন্নয়নে আমি গুরুত্ব দিতে চাই। সামাজিক নিরাপত্তা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা থাকবে নিরন্তর।

এলাকার সমস্যা চিহিৃতকরণ ও সমাধানে গুরুত্ব আরোপঃ গোদাগাড়ীকে মাদক ব্যবসা ও করিডোর হিসাবে ব্যবহারের কেন্দ্র থেকে বের করে সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা। সরকারের পাশাপাশি উপজেলাবাসী সকলে মিলে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলব। বাল্য বিবাহ রোধে আমার অবস্থান হবে কঠোর। একজন শিক্ষিত সুস্থ ‘মা’ জাতি গঠনে সবচেয়ে বড় আবদান রাখে। তাই বাল্য বিবাহ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত। ইভটিজিংয়ের মত সামাজিক সমস্যা রোধে সোস্যাল ক্যাম্পেইনের পাশাপাশি সংশোধনমূলক উদ্দ্যোগ নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি নির্মূলে প্রসাশনকে সর্বাত্বক সহায়তা করতে আমার ভূমিকা হবে নির্ভিক।

কেন আমি ব্যতিক্রমঃ প্রতিটি সমস্যাকে সূক্ষ ও গভীরভাবে অনুধাবনের করতে চেষ্টা করি।আর অনুকুল এবং প্রতিকুল উভয় পরিস্থিতিতে আল্লাহর রহমতে নিজেকে আমি সমানভাবে সামলাতে পারি। অনুকুলে যেমন স্রোতে গা ভাসাই না, আবার প্রতিকূলে ভেঙ্গেও পড়িনা।

আমার সক্ষমতাঃ একজন সৎ ও নির্ভীক মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আমার যে ভাবমুর্তি প্রতিষ্ঠা পেয়েছে তাকে কাজে লাগিয়ে নিষ্ঠা এবং একাগ্রতা দিয়ে, জনগনকে সাথে নিয়ে এলাকার সর্বাত্বক উন্নয়নে আমি ভালো বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হব, ইনশাআল্লাহ।

জনগনের কাছে প্রত্যাশাঃ সারাটা জীবন ধরে সততা,নিষ্ঠা এবং ন্যায়নীতি সমুন্নত রেখে কাজ করার চেষ্টা করেছি। তাই আমার নির্বাচনী এলাকার সকল মানুষের কাছে আবেদন থাকবে, সৎ, নির্ভীক, শিক্ষিত এবং অধিক যোগ্য প্রার্থী নির্বাচিত করুন। আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে সততার সাথে জনগনের আরও পাশে থেকে কাজ করার সুযোগ দিন। আমি কৃতজ্ঞচিত্তে সততার সাথে আমার চিন্তা-চেতনা ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব ইনশাল্লাহ।

মো. সাইদুর রহমানের আরও কিছু কর্মপরিকল্পনাঃ

১. জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দূর্নীতি, হানাহানি, ঝগড়াটে, বখাটে নির্মূলে প্রশাসন ও আইন-শৃংখলা বাহিনী তথা সরকারকে সার্বিক সহযোগীতা প্রদানের মাধ্যমে আদর্শ উপজেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।

২. পরিচ্ছন্ন ও পরিকল্পিত বাড়ি, গ্রাম সাজানো-গোছানো উপজেলা বিনির্মাণ। সামাজিক পরিবেশ রক্ষার্থে বহিরাগতদের এবং স্থানীয়দের স্থায়ী বাড়িঘর বা অবকাঠামো নির্মাণে পরিষদের অনুমতি গ্রহণের ব্যবস্থা চালু করা।

৩. স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল – তাই পরিচ্ছন্ন উপজেলা বিনির্মাণের মাধ্যমে জনগণের নিজস্ব উদ্যোগে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সরকারি সুযোগ সুবিধার যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরন।

৪. শিক্ষায় জাতীর মেরুদন্ড – তাই উপজেলার সকল স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে শিক্ষার মান বাড়ানোর মাধ্যমে শিক্ষার জন্য শহরে গমনে নিরুৎসাহ করা।

৫. পদ্মা বিধৌত বরেন্দ্র এলাকার জমি ও পুকুরসমূহ স্বর্ণখনি বিবেচিত হতে পারে। আশি’র দশকে পিরিজপুর- হিজলগাছী সেচ প্রকল্প যাতে পদ্মা নদী থেকে ১০০০ কিউসেক পানি ডাবল লিফ্টের মাধ্যেমে গোটা বরেন্দ্র এলাকাতে ১০০ ভাগ সেচ সুবিধা প্রদানের প্রকল্প সমীক্ষা করা হয়। নিজস্ব তহবিলের অভাব ও বিদেশী সাহায্যের অনীহার কারনে যৌথ নদী কমিশন বাংলাদেশ এর চাহিদায় পদ্মার পানি ব্যবহারের মাধ্যমে ফারাক্কায় বেশি পানি প্রাপ্তির দর কষাকষিতে সুবিধাজনক অবস্থা সৃষ্টির পরিকল্পনা আলোর মূখ দেখেনি। বর্তমান আর্থিক সচ্ছল অবস্থায় সরকারের নিকট সম্মিলিত দাবিনামা পেশের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ।

৬. তরুণ প্রজন্ম দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার। বর্তমানে তারা কর্ম ও উদ্যোক্তা না হয়ে চাকুরির প্রত্যাশায় বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিয়ে নিস্ফল সময় ব্যয় করছে এবং গভীর হতাশায় ভূগছে। কৃষি ও মৎস্য সম্পদে সমৃদ্ধ সম্পদের উপর ভিত্তি করে তরুনদের কর্মী ও উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠার সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

৭. রাস্তাঘাট নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে নতুন কৌশল অবলম্বন করা হবে যাতে মা তার শিশুকে কোলে নিয়ে রাস্তায় নির্ভয়ে চলাচল করতে পারে।

৮. হাট বাজারে ভেজাল খাদ্য বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং খাবার হোটেলগুলিকে পরিচ্ছন্ন ও মান সম্মত ভাবে উন্নত করা হবে।

৯. হাট বাজারে মানুষকে প্রায় প্রতিদিন যেতে হয়। সেগুলি বর্ষায় কাদামুক্ত ও শুকনার সময় ধুলিমুক্ত থাকে তার পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে।

১০. শুধু মাত্র মেয়েদের জন্য উপজেলার পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের সুবিধাজনক স্থানে দুইটি ক্রীড়া কমপ্লেক্স স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে যাতে উপজেলার মেয়েরা বাইরে খেলাধুলার পরিবেশ পায়।

মো. সাইদুর রহমানের পরিচিতি:

বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. সাইদুর রহমান একজন সৎ, নির্ভীক, অভিজ্ঞ, উচ্চ শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ৭ নং সেক্টরের আওতায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

দীর্ঘ ৩৫ বছর বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, ঢাকায় কর্মরত থেকে পরিচালক পদ হতে অবসর নিয়েছেন। কর্ম জীবনে পরিকল্পনা, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরন কেন্দ্র, যৌথ নদী কমিশন, বাংলাদেশ ও কল্যাণ পরিদপ্তরে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে প্রশাসন ও কারিগরি ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করেছেন।

শিক্ষা জীবনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় বি.এস.সি(অনার্স) এম.এস.সি ডিগ্রী অর্জন করেন। কম্পিউটার কমিউনিকেশন বিষয়ে এশিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (AIT), ব্যাংকক থাইল্যান্ড ও ড্যানিশ হাইড্রোলিক ইন্সিটিটিউট (DHI) ডেনমার্ক (কোপেনহেগেন) থেকে ম্যাথামেটিক্যাল মডেলিং ও বন্যা পূর্বাভাস বিষয়ে প্রশিক্ষিত।

ঢাকা বা অন্য কোনো শহরে তাঁর বাড়ি নেই। উপজেলার প্রেমতলীর নিকটবর্তী হরিণবিস্কা গ্রামে পরিবার নিয়ে তিন তলা বাড়ির ২য় তলায় স্থায়ী ভাবে বসবাস করছেন। তিনি এক মেয়ে ও এক ছেলের জনক। মেয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার-এ এম,এস,সি (গ্রীনউইচ ইউনিভার্সিটি, লন্ডন) লন্ডনে সরকারী কলেজের আইটি বিষয়ে লেকচারার। ছেলে এ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক ও মিলিটারী ইনিস্টিটিউট অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি, ইউনিভারসিটি অব প্রফেশনাল্স, মিরপুর ক্যান্ট্যনমেন্টে লেকচারার হিসাবে কর্মরত।

স্ত্রী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিষয়ে বি.এস.সি (অনার্স) সহ এম.এস.সি এবং ঢাকা হোমিও মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডিপ্লোমা গ্রহণ করেন। বর্তমানে হরিণবিস্কা গ্রামে নিজ বাড়ীতে স্থায়ী চেম্বারে হোমিও চিকিৎসা সেবা প্রদানে নিয়োজিত।