এসএমই খাতে খেলাপী ঋণ বাড়ছে

এসএমই খাতে প্রতিবছরই ব্যাংকগুলোর অর্থছাড় বাড়ছে। তবে একই সঙ্গে বাড়ছে এ খাতের খেলাপী ঋণ। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসএমই খাতের অর্থছাড়ের প্রবৃদ্ধি ২০১৬ সালে ছিল ২১ শতাংশ। এ সময়ে মোট অর্থ ছাড় হয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে খাতটিতে একই সময়ে খেলাপী ঋণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা।
৫ নভেম্বর রোববার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে এক সেমিনারে ‘ইমপ্যাক্ট অফ এসএমই ফাইন্যান্সিং অন ব্যাংকস প্রফিটেবিলিটি: অ্যান ইনকোয়ারি এ্যাক্রোস ব্যাংকস ইন বাংলাদেশ’ বিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহকারি অধ্যাপক মো: মাসুদুল হক।
সেমিনারে ‘ইমপ্যাক্ট অব সোস্যাল সেফটি নেট প্রোগ্রামস অন দ্যা পারফরমেন্স অব এসওসিবিএস’ বিষয়কআরও একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক (ডিএসবিএম) এবং অধ্যাপক মো: মহীউদ্দিন ছিদ্দিকী।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, এসএমই খাতে অর্থায়ন ব্যাংকের মুনাফায় তেমন প্রভাব পড়ছে না। কিন্তু আজকের এসএমই আগামী দিনে বড় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। এ বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে এসএমই খাতে অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হবে।
ডেপুটি গভর্নর এ খাতে জামানত বিহীন ঋণ দেওয়ার জন্য ফ্যাক্টরিংয়ের মত নতুন সেবা গুলো চালু করার পরামর্শ দিয়েছেন।
‘ইমপ্যাক্ট অফ এসএমই ফাইন্যান্সিং অন ব্যাংকস প্রফিটেবিলিটি: অ্যান ইনকোয়ারি এ্যাক্রোস ব্যাংকস ইন বাংলাদেশ’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১০ সালে এসএমই খাতে খেলাপী ঋণ ছিল মাত্র ২ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। ২০১৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১১ হাজার ৬১ কোটি টাকায়। এর পরের বছর তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪২ কোটি টাকায়। ২০১৬ সালে আরও চার হাজার খেলাপী ঋণ যুক্ত হয়ে এর পরিমাণ
দাঁড়িয়েছে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা।
এদিকে ‘ইমপ্যাক্ট অব সোস্যাল সেফটি নেট প্রোগ্রামস অন দ্যা পারফরমেন্স অব এসওসিবিএস বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ব্যাংকগুলোর সমন্বয় জরুরী। অগ্রণী ব্যাংকের ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ শামসুল ইসলাম, বলেন ব্যাংকাররা গ্রামে পল্লীঋণের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেন, দারিদ্র দূরিকরণে এসএমই ঋণের গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি এসএমই সেক্টর ও এসএমই অর্থয়নে সঠিক কর্মপন্থার প্রতি গুরুত¦ আরোপ করেন।

এবি ব্যাংকের প্রসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান চৌধুরী বলেন, এসএমই-তে ঋণ দিতে পারলে বাংলাদেশ উন্নতি করবে। এসএমই-লোন কোন সেক্টরে ব্যবহার করা হচ্ছে-তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড এর ব্যাবস্থপনা পরিচালক আরিফ খান বলেন, এসএমই-তে খাতে তাদের ঋণের পরিমান ৩ হাজার কোটি টাকা। এই খাতে নন-পারফরমিং লোন ২% এর কম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিচালক (গবেষণা উন্নয়ন ও কনসালটেন্সি) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।
আজকের বাজার : সালি / ১৫ নভেম্বর ২০১৭