‘কঠোর জবাব দেবে রাশিয়া’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্সসহ ২৫টি দেশ সম্মিলিতভাবে নিজ নিজ দেশ থেকে ১২৫ জনের বেশি রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করার ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের সলসবেরি শহরে পক্ষত্যাগী এক রুশ গুপ্তচর ও তার মেয়েকে বিষ প্রয়োগের ঘটনার জের ধরে সোমবার ও মঙ্গলবার এই সমন্বিত পদক্ষেপ নিয়েছে দেশগুলো।

ইতিহাসে একযোগে সবচেয়ে বেশি সংখ্যার কূটনীতিক বহিষ্কারের ঘটনা এটি। সম্মিলিত এই কূটনীতিক বহিষ্কারের পাল্টা জবাব দেয়ার হুমকি দিয়েছে রাশিয়া। আলাদাভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রুশ কূটনীতিক বহিষ্কার করতে অন্যান্য রাষ্ট্রের ওপর চাপ সৃষ্টির অভিযোগ এনেছে রাশিয়া।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ যুক্তরাষ্ট্র থেকে কূটনীতিক বহিষ্কারের ঘটনাকে একটি ‘বিশাল আকারের ব্ল্যাকমেইল’ বলে আখ্যায়িত করে বলেছেন, রাশিয়াও কঠোর জবাব দেবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর প্রকাশ করেছে।

খবরে বলা হয়, ৪ মার্চ যুক্তরাজ্যের সলসবেরি শহরে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায় পক্ষত্যাগী রুশ গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়ে ইউলিয়াকে।

পরবর্তীতে জানা যায়, তাদের ওপর সামরিক পর্যায়ের নার্ভ এজেন্ট ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়েছে। যুক্তরাজ্য জানায়, নার্ভ এজেন্টটির উৎপত্তিস্থল রাশিয়ায়। বিষ প্রয়োগের ঘটনায় রাশিয়া জড়িত, এমন অভিযোগ এনে ১৪ই মার্চ যুক্তরাজ্য থেকে বহিষ্কার করা হয় ২৩ রুশ কূটনীতিককে।

পাল্টা জবাবে রাশিয়াও বহিষ্কার করে বৃটিশ কূটনীতিকদের। এরপর শুক্রবার ইইউ নেতাদের এক বৈঠকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

পরবর্তীতে রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করার ঘোষণা দেয় জার্মানি, ফ্রান্সসহ অন্যান্য ইইউভুক্ত দেশ। তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে নিজ নিজ দেশ থেকে কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউক্রেন ও অস্ট্রেলিয়া। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া কূটনীতিক বহিষ্কারসহ রাশিয়ায় অনুষ্ঠেয় ফুটবল বিশ্বকাপেও অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকবে বলে জানিয়েছে।

যুক্তরাজ্য থেকে বহিষ্কৃত কূটনীতিকসহ সবমিলিয়ে ১৪০ জন রুশ কূটনীতিক বহিষ্কৃত হতে চলেছেন।
রাশিয়া জানিয়েছে, তারা এই সম্মিলিত পদক্ষেপের কঠোর জবাব দেবে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমরা এরকম বেহায়াপনা সহ্য করবো না। তিনি আলাদাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে দোষ দেন।

তিনি বলেন, যখন অমুক বা তমুক দেশ থেকে একজন বা দুইজন কূটনীতিক বহিষ্কৃত হয় তখন সবাই আমাদের কানে ফিসফিস করে ক্ষমা চাইতে থাকে। আমরা নিশ্চিতভাবেই জানি যে, এটি একটি বিশাল আকারের চাপ সৃষ্টি, বিশাল আকারের ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এগুলোই এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র হাতিয়ার।

সের্গেই ল্যাভরভ জানান, রাশিয়া বেশ কয়েকটি প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের কথা চিন্তা করছে।

আজকেরবাজার/আই/এস/