করপোরেট করহার না কমায় হতাশ এমসিসিআই, ব্যাংকিং কমিশন বাস্তবায়নের আহ্বান

আসছে বাজেটে করপোরেট কর না কমানোয় হতাশা প্রকাশ করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)। পাশাপাশি ব্যাংকিং কমিশন বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট-পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার এ আহ্বান জানায় এমসিসিআই।

এখন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির বিদ্যমান করহার ২৫ শতাংশ এবং অতালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য এই হার ৩৫ শতাংশ। এই হারকে উচ্চ দাবি করে কমানোর দাবি জানিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা।

এমসিসিআই বলেছে, এ উচ্চ করপোরেট করহার এবং লভ্যাংশের ওপর কর বাংলাদেশকে ব্যবসার গন্তব্য হিসেবে আকর্ষণহীন করে তুলবে। তবে পুঁজিবাজারকে চাঙা করার সরকারের ইচ্ছাকে সাধুবাদ জানিয়েছে এমসিসিআই। যদিও স্টক ডিভিডেন্ডের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। কারণ, এ উদ্যোগ তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে মূলধন তৈরি ও পুনর্বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করতে পারে বলে মনে করে এমসিসিআই।

এমসিসিআই মনে করে, বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সেই অগ্রগতি সত্যিকার সম্ভাবনার অনেক নিচে। অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি স্বল্পতা এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বর্তমানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বড় বাধা। সেই সঙ্গে রাজস্ব সংগ্রহে ঘাটতি এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) দুর্বল বাস্তবায়ন অর্থনীতির জন্য দুশ্চিন্তার বিষয়। যদি বাংলাদেশ ২০২১ সাল নাগাদ মধ্য আয়ের দেশের অবস্থান নিশ্চিত করতে চায়, তাহলে বৈদেশিক বিনিয়োগসহ সব ধরনের বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

সংগঠনটি জানিয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বর্ধিত লক্ষ্য ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অর্জনই সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে। এবারের রাজস্ব লক্ষ্য ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ বেশি। এ রাজস্ব লক্ষ্য বর্তমান করদাতাদের ওপর অতিরিক্ত চাপের কারণ হতে পারে বলে উদ্বেগ জানিয়েছে এমসিসিআই।

এমসিসিআই বলছে, আমাদের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পরিপূর্ণ করতে এডিপিতে বেশি বরাদ্দ প্রয়োজন। এজন্য সরকারকে এডিপি তহবিলের কার্যকর ও ফলপ্রসূ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

ভ্যাট আইনের বিষয়ে এমসিসিআই জানায়, ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে নতুন মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ কার্যকর হতে যাচ্ছে। এটি কার্যকর করতে গিয়ে যাতে ব্যবসা কার্যক্রম জটিলতার সম্মুখীন না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সেই সঙ্গে করদাতারা যাতে সামান্য ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য হয়রানির শিকার না হন, সেদিকেও নজর রাখতে হবে।

ব্যবসা সহজীকরণের জন্য সরকারের পদক্ষেপগুলোর প্রশংসা করে সংগঠনটি বলেছে, এসব পদক্ষেপের সুফল তখনই পাওয়া যাবে যদি সেগুলো যথাসময়ে ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হয়।

করজাল বাড়ানোর প্রস্তাবিত পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে এমসিসিআই এটি অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো বিশেষ করে কর প্রশাসনের ডিজিটালাইজেশনে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

বাজেটে সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী শিক্ষা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও গ্রামে প্রয়োজনীয় সব সুবিধা নিশ্চিত করতে পরিকল্পিত নগরায়নে গুরুত্ব দেওয়ায় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানায় এমসিসিআই।

আজকের বাজার/এমএইচ