করোনাভাইরাস: সাভারে দুটি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সাভারে দুটি তৈরি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার দুপুরে সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের রাজফুলবাড়িয়া এলাকার ভরারীতে অবস্থিত ডার্ড গ্রুপের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ডার্ড গার্মেন্টস ও দক্ষিণ শ্যামপুরে একই গ্রুপের দীপ্ত এ্যাপারেলস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় মালিকপক্ষ। প্রতিষ্ঠান দুটিতে আট হাজারের বেশি শ্রমিক ও কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডার্ড গ্রুপের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল জানান, স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনায় বর্তমান পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাক শিল্প কারখানা চালু রাখা ঠিক হবে না মনে করেই মালিকপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি জানান,সরকার যেখানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষকে ঘরে থাকার আহ্বান জানাচ্ছে সেখানে কারখানা চালু রাখাটা নিরাপদ মনে করছে না কর্তৃপক্ষ।

আট হাজার মানুষের বিশাল কর্মযজ্ঞের পরিবেশ থেকে কারো কারো মাধ্যমে এই সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমন স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত বলেও জানান মোস্তফা কামাল। এর আগে ডার্ড গ্রুপের কারখানায় সকাল থেকেই মোতায়েন করা হয় শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য। শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আউয়াল হোসেন খান কারখানা দুটি বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান,পরিস্থিতির উন্নতি হলে কারখানা খুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মালিকপক্ষ।

যোগাযোগ করা হলে, শিল্প পুলিশ-১ এর পরিচালক পুলিশ সুপার সানা শামিনুর রহমান জানান, কারখানা দুটি বন্ধের বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কবে নাগাদ শ্রমিকদের বেতন দেয়া হবে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ পরে তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে বলেও জানান সানা শামিনুর রহমান। এদিকে সাভারে কোয়ারেন্টাইন না মেনে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শতাধিক প্রবাসী। আরও দুই শতাধিক প্রবাসীর হদিস নেই। প্রশাসন বলছে,প্রবাসীদের সামলাতেই তাদের গলদঘর্ম হতে হচ্ছে। কোয়ারেন্টাইন না মেনে কেউ বিয়ের পিড়িঁতে বসছেন কেউ বা পাড়ার দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন কেউ বা ঘুরে বেড়াচ্ছেন শ্বশুরবাড়িতে।

তৃতীয় দিনের অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত সোমবার আলী নেওয়াজ নামে এক ইতালি প্রবাসীকে চার হাজার টাকা জরিমানা করেছে। আশুলিয়া থানার নিরিবিলি হাউজিং এলাকায় কোয়ারেন্টাইন না মেনে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তিনি। সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজুর রহমান জুমনের নেতৃত্বে একটি দল তাকে বাইরে ঘোরাঘুরি করতে দেখে জরিমানা আদায় করে সতর্ক করে আসেন। এদিকে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ধামরাই থেকে আসা এক রোগীকে ভর্তি না করে ঢাকায় স্থানান্তরের পরামর্শ দিয়েছেন সাভারে একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক।

সোমবার দুপুরে সাভারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে জ্বর, সর্দি,কাশি, শ্বাসকষ্ট,হাঁচির চিকিৎসা নেবার জন্য ধামরাই থেকে আসেন ৫০ বছর বয়সী এক রোগী। পরে তাকে করোনা রোগী সন্দেহে ঢাকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর)পাঠিয়ে দেয়া হয়। সূত্র-ইউএনবি

আজকের বাজার/শারমিন আক্তার