করোনার মধ্যেই বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেই ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আমফান। দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে যাচ্ছে বলে আভাস দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।

থাইল্যান্ড ওই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়েছে আমফান। আগামী মঙ্গলবার অথবা বুধবারে এটি স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। ভারতীয় আবহাওয়া কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার এ খবর জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়, গত বছরের নভেম্বরে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের গতিপথ অনুসরণ করে বাংলাদেশের ওপরও আছড়ে পড়তে পারে নতুন এই ঘূর্ণিঝড়।

এ ব্যাপারে শনিবার রাত ৮টায় আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ৮০ শতাংশ। বর্তমানে নিম্নচাপটির যে গতিমুখ রয়েছে, তা পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশে ঢোকার পথ নির্দেশ করছে। তবে গতিপথ যে কোনো সময় পরিবর্তন করতে পারে। আর যে গতিতে এগোচ্ছে সেই গতি ধরে রাখলে ১৯ কিংবা ২০ মের দিকে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে।

গত বছরের ১০ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিকে আগানোর পরও বাঁক বদল করে সুন্দরবনের ওপর দিয়ে বাংলাদেশে আঘাত হানে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। ৮১ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানা ঝড়ের প্রভাবে প্রচণ্ড বর্ষণ ও জলোচ্ছ্বাসে বাংলাদেশ উপকূলের বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়। প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে খুলনা, বাগেরহাট ও পটুয়াখালীতে বেশ কয়েক জনের মৃত্যুর পাশাপাশি বহু ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে যায়, গাছাপালা উপড়ে পড়ে এবং কোথাও কোথাও বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে।

ভারতের আলিপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি রবিবার নাগাদ ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। মঙ্গলবার নাগাদ এর গতি ঘণ্টায় ১৭০ থেকে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তবে স্থলভাগের দিকে এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে এর গতি কমতে থাকবে।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, শনিবার দুপুরে ওই গভীর নিম্নচাপটি উড়িষ্যার পারাদ্বীপ থেকে এক হাজার ৬০ কিলোমিটার এবং পশ্চিমবঙ্গের দিঘা সমুদ্র উপকূল থেকে ১ হাজার ৩৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, আমফানের প্রভাবে উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র উপকূলে প্রবল জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এর প্রভাব পড়তে পারে গাঙ্গেয় উপকূলের সব এলাকায়। পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে এটি বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। তবে তা নির্ভর করছে ঘূর্ণিঝড়টি কোনদিকে বাঁক নেয় তার ওপর।

গত বছরের নভেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ উড়িষ্যার পারাদ্বীপের কাছ থেকে বাঁক নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পাশ দিয়ে সুন্দরবনের ওপর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আমফানের গতিপ্রকৃতিও সেই রকম বলে ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা মনে করলেও এটি বুলবুলের পথ অনুসরণ করবে কিনা তা এখনই নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

ভারতের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গভীর নিম্নচাপের কারণে ইতোমধ্যে জেলেদের সাগরে নামতে নিষেধ করা হয়েছে।