কর্মক্ষেত্রে নারীর ড্রপআউটের সংখ্যা বাড়ছে, সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন

রাজধানীতে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণে নারীর ড্রপআউটের সংখ্যা বাড়ছে। এই ঝরে পড়া রোধে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। আজ রাজধানীর ধানমন্ডির বিলিয়া হাউজ অডিটোরিয়ামে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতি আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। তারা বলেন, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি, কর্ম পরিবেশ না থাকা, সন্তান জন্মদান, পর্যাপ্ত ডে-কেয়ার সেন্টার না থাকা, বেতন বৈষম্যসহ নানা কারণে নারী যোগ্যতা থাকা স্বত্ত্বেও নারীরা কর্মক্ষেত্র থেকে ঝরে পরছে। এই ঝরে পড়া রোধ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নিশ্চিতে সকলকে কাজ করতে হবে। বক্তারা বলেন, বিভিন্ন সূচকে নারীর সার্বিকভাবে উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন যেমন নিশ্চিত হয়েছে তেমনি নীতিনির্ধারনী পর্যায়েও নারীর মেধা ও যোগ্যতার মূল্যায়ন হচ্ছে না। এটিও এক পর্যায়ে নারীর কর্মক্ষেত্র থেকে ঝরে পরার একটি কারণ।

তারা বলেন, এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে নীতিনির্ধারণী পর্যায়সহ সবক্ষেত্রে নারীর এগিয়ে আসা, কর্মক্ষেত্রে আরো উপস্থিতি বা অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, নারীর পিছিয়ে পরার কারণ ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে গবেষণা করে এর সমাধান বের করতে হবে বলেও জানান তারা। সংগঠনেরসহ সভাপতি সেলিনা খন্দকারের সভাপতিত্বে সেমিনারে ‘জেনারেশন ইকুয়ালিটি: রিয়েলাইজিং উইমেন’স পার্টিসিপেশন ইন ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) রিসার্চ ফেলো ড. আজরিন করিম এবং ‘হ্যাসেল অব উইমেন ইন পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ’শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রাকের জেন্ডার স্পেশালিষ্ট হোসনে আরা বেগম।

প্রবন্ধ দু’টিতে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান সরকার নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। অন্যদিকে বেসরকারি উদ্যোগেও নারীর ক্ষমতায়ন এবং আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু নারীর নিরাপত্তা তার ক্ষমতায়নের একটা বড় সূচক, সেই সূচকে নারীকে আরো বেশি এগিয়ে আসা দরকার। নানা খাতে নারীর উন্নয়ন হলেও তার অগ্রগতি আরো সুদূর প্রসারি হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া কর্মক্ষেত্রে নারীর পারিশ্রমিক নিশ্চিত হলেও গৃহে তার কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে না। এক্ষেত্রে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশে রাষ্ট্রের নারীর জন্য ওয়েলফেয়ার ফান্ড ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিষয়টি উঠে এসেছে। প্রবন্ধে আরো উল্লেখ করা হয়, নারীদের বড় একটা অংশ প্রতিদিনগণ পরিবহনে যাতায়াত করে থাকে। অথচ এই পাবলিক ট্রান্সপোর্টে নারীর নিরাপত্তার বিষয়টি গ্রাহ্য করা হচ্ছে না। নারীর হয়রানী বন্ধে পরিবহনে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, নারীবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং সর্বোপরি মানসিক দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন প্রয়োজন। পাশাপাশি, গণধর্ষণসহ নারীর প্রতি সকল ধরনের হয়রানি বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়তে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করা হয়। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান