কর সেবা সহজ করতে ‘ভ্যাট ইস্ট’ অ্যাপ চালু

করদাতাদের জন্য মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট সেবা সহজ করতে ‘ভ্যাট ইস্ট’ নামে মোবাইল অ্যাপস চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা (পূর্ব)। এই অ্যাপ দিয়ে দেশের জনগণ, করদাতা ও ভ্যাট কর্মকর্তা জরুরি কার্যক্রম নিঃখরচায় দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন।

ভ্যাট কর্মকর্তারা বলছেন, মোবাইল অ্যাপ-ভিত্তিক কার্যক্রম জনপ্রিয়তা পাওয়ায় অ্যাপ-ভিত্তিক প্লাটফরমকে কাজে লাগিয়ে সেবা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে করদাতা-বান্ধব ও সেবাধর্মী পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।

এই আ্যপ ব্যবহার করে করদাতা তার বিআইএন সঠিক আছে কিনা তা যাচাই পরবেন। এছাড়া ভ্যাট অফিস বা কোন ভ্যাট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা দাখিল করা যাবে। একইসঙ্গে ভ্যাট অফিসকে কর ফাঁকির তথ্যও প্রদান করা যাবে।

এ বিষয়ে ভ্যাট কমিশনারেট পূর্বের অতিরিক্ত কমিশনার মো. জাকির হোসেন বলেন, এই উদ্ভাবনী উদ্যোগ করদাতা সেবার পরিবেশকে সহজ ও দ্রুততর করেছে। একইসাথে ভ্যাট অফিসের সাথে কায়িক যোগাযোগ হ্রাস পেয়েছে। যা মূলত করদাতার ব্যবসায়িক খরচ কমাচ্ছে।

এই আ্যপের মাধ্যমে করদাতা দেশের যেকোন জায়গায় বসে দ্রুততার সঙ্গে সেবা গ্রহণ করতে পারেন বলে তিনি জানান।

এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া বাসসকে বলেন, ভ্যাট ইস্ট অ্যাপ করদাতা সেবার মান বৃদ্ধি ও ব্যাক-অফিসের কর্মপরিবেশের উন্নতি করছে। ফলে তা ডুয়িং বিসনেস ইন্ডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান আরো জোরালো করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

জাকির হোসেন বলেন, নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তিমাত্রই তাকে প্রতি করমেয়াদের দাখিলপত্র পরের মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট অফিসে দাখিল করতে হয়। কোন করদাতা যাতে তার এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ভুলে না যান সে জন্য ১০ তারিখের মধ্যে পর্যায় ক্রমে সকল করদাতাকে এসএমএস এবং অ্যাপস নোটিফিকেশনের মাধ্যমে মনে করিয়ে দেয়া হয়। ১৫ তারিখের মধ্যে দাখিলপত্র পেশে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি অবহিত করা হবে।

তিনি জানান, যেকোন ব্যক্তি অ্যাপের বিন চেক (ইওঘ ঈযবপশ) আইকনে গিয়ে বিআইএন নম্বর দিলে, সেটি সঠিক কিনা তা যাচাই করতে পারবেন।

এর মাধ্যমে দেশের সকল ভ্যাট, কাস্টম ও আয়কর অফিসের ঠিকানা, ফোন নম্বরসহ ঢাকা ইস্ট কমিশনারেটের বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। দাখিলপত্র পেশ করার পর এসএমএস ও নোটিফিকেশনের মাধ্যমে প্রাপ্তিস্বীকার করা হবে।

এছাড়া ভ্যাট কর্মকর্তারা অ্যাপ ব্যবহার করে জরিপ প্রতিবেদন সিস্টেমে আপলোড করতে পারেন। যেমন: করদাতার নাম ও ছবি, তার প্রতিষ্ঠানের নাম ও ছবি, ভৌগলিক অবস্থান, নাম ঠিকানা, ব্যবসার প্রকৃতি, ব্যবসায়ের আকার, কর প্রদানের তথ্য, ইত্যাদি তাৎক্ষণিকভাবে পরিদর্শনের সময় সিস্টেমে আপলোড করতে পারেন। এতে করদাতা জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা ও তথ্য সংরক্ষণ, মনিটরিং সহজ ও অধিক কার্যকরি হচ্ছে।

স্পট এসেসমেন্ট অপশনটি ব্যবহার করে ভ্যাট কর্মকর্তাগণ স্পট এসেসম্যান্টের কাজটি সুনিপুণভাবে সম্পন্ন করতে পারেন।

জাকির হোসেন বলেন, করদাতার তথ্য হালনাগাদ, ভ্যাট ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে নির্ভুলভাবে ভ্যাটের পরিমাণ নির্ধারণ, আইন-কানুন, বিধিবিধান, ফরম ইত্যাদি ডাউনলাড করতে পারবেন।

তিনি জানান, অ্যাপটি বর্তমানে শুধু অ্যান্ড্রয়েড প্লাটফরমে পরিচালিত হচ্ছে। খুব দ্রুত তা আইওএস এবং উইন্ডোজ ফোন ব্যবহারকারীগণ অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তথ্যসূত্র-বাসস

আজকের বাজার/এমএইচ