কাশ্মীর ইস্যুতে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসছে নিরাপত্তা পরিষদ

জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করার ভারতের সিদ্ধান্ত নিয়ে শুক্রবার রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।

এক কূটনীতিক জানিয়েছেন, ওই বৈঠকের জন্য একটি চিঠিতে অনুরোধ করে চীন এবং বুধবার নিরাপত্তা পরিষদ বিষয়টি নিয়ে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নেয়। চীনের পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে বৈঠক করার প্রস্তাব দেয় পাকিস্তানও। খবর এনডিটিভির।

ভারতের সংবাদসংস্থা আইএএনএসকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক কূটনীতিক জানিয়েছেন, জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে ওই বৈঠকের জন্য একটি চিঠিতে অনুরোধ করে চীন এবং নিরাপত্তা পরিষদ বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার রুদ্ধদ্বার বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেয়। বুধবারই এই বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করা যায় কিনা তা নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা হয়, তারপরেই শুক্রবার এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেয় জাতিসংঘ। তবে জানা গেছে, রুদ্ধদ্বার বৈঠক হওয়ায় এই বৈঠকে নাক গলাতে পারবে না পাকিস্তান।

নিরাপত্তা পরিষদের ওই কর্মকর্তা জানান, ওই বৈঠকের কোনও সরাসরি সম্প্রচার হবে না এবং কোনও সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিকেও বৈঠক চলাকালীন ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়ায় হবে না। চূড়ান্ত গোপনীয়তা রক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৈঠকটির বিষয়ে।

ওই কূটনীতিক আরও জানান, জম্মু ও কাশ্মীর সংক্রান্ত বৈঠকটি ১৫ আগস্ট বৃহস্পতিবারই হোক, তা চেয়েছিল চীন। কিন্তু ওইদিনের কর্মসূচি আগেই নির্ধারিত থাকায় শুক্রবার সেটি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে।

পোল্যান্ডে অবস্থিত নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট জোয়ানা রোনেক্কার কার্যালয় ওই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করে।

ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ ও ৩৫-এ ধারা রদ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা অবলুপ্ত করার বিষয়ে মোদি সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে আগেই আপত্তি জানায় পাকিস্তান। এমনকি তারা বিষয়টিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠক করুক ও ওই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করুক এমনটাও দাবি করে।

চীন ছাড়া, নিরাপত্তা পরিষদের অন্য চার স্থায়ী সদস্য প্রকাশ্যে নয়াদিল্লির অবস্থান সমর্থন করে এবং জানায় এটি নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধ দ্বিপাক্ষিক বিষয়, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও বলেছে যে, কাশ্মীরের উন্নয়ন নিয়ে ভারতের এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরিই তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

অন্যান্য সূত্র জানিয়েছে, কাশ্মীর ইস্যুতে কীভাবে আলোচনা করা উচিত সে বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদে হওয়া বৈঠকে ফ্রান্স ও চীন দ্বিমত পোষণ করে।

জম্মু ও কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে চীন এই ইস্যুটি নিয়ে মূল আলোচনা করতে চাইলেও, ফ্রান্স চেয়েছে এই ইস্যুকে বেশি গুরুত্ব না দিয়ে এটিকে ‘অন্যান্য বিষয়’ হিসেবে নিম্ন স্তরে গ্রহণ করা উচিত।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ভারত সরকার কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা তুলে নেয়ার ঘোষণা দেয় এবং একে রাজ্য থেকে অবনমন করে অঞ্চলে পরিণত করে। এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সহিংস প্রতিক্রিয়া রোধে কাশ্মীরে টানা কারফিউ জারি ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে রেখেছে ভারত। অঞ্চলটিতে মানুষজন ঘরে বন্দী হয়ে আছেন।