কাশ্মীর: ১০০ দিন পর কতোটা স্বাভাবিক হয়েছে এই ভূস্বর্গের জনজীবন

ভারত-শাসিত কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে নেওয়ার দিন থেকেই সেখানে যে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল, মঙ্গলবার তার একশো দিন পূর্ণ হলো।

এই তিনমাসের কিছুটা বেশি সময়ে নিষেধাজ্ঞা অনেকটা শিথিল করা হলেও সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় নি বলেই সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন।

শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা এই ১০০ দিন ধরেই আটক হয়ে আছেন। জারি রয়েছে ১৪৪ ধারাও। ৩৬ লক্ষ প্রিপেইড মোবাইল এখনও চালু হয় নি – নেই ইন্টারনেটও। তবে চালু হয়েছে ল্যান্ডলাইন ফোন আর পোস্ট পেইড মোবাইল ফোন।

ইন্টারনেট চালুর দাবিতে মঙ্গলবারই শ্রীনগরে বিক্ষোভ করেছেন সেখানকার সাংবাদিকরা।

অগাস্টের ৫ তারিখের সঙ্গে ১০০ দিন পরের কাশ্মীরের সব থেকে বড় তফাৎটা হল তখন যে জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যটা ছিল, সেটাই এখন আর নেই। আনুষ্ঠানিক মানচিত্রও বদলে গেছে এই ১০০ দিনে।

এখন লাদাখ অঞ্চলকে আলাদা করে দিয়ে জম্মু কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তাই প্রশাসন সবটাই দিল্লি থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়।

শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা নেত্রী- এমন কি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীরাও আটক হয়ে আছেন। একই সঙ্গে বহু কাশ্মীরীও সেখানকার জেলে এবং উত্তর প্রদেশের জেলে আটক রয়েছেন।

আবার কাশ্মীরের যে প্রধান আয়ের উৎস, সেই পর্যটন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে আছে। পর্যটনের ওপরে নির্ভরশীল হাজার হাজার মানুষের কোনও রোজগার নেই।

তবে প্রথম দিকে যেরকম কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল রাস্তায় চলাচলের ওপরে, সেসব শিথিল করা হয়েছে। এখন শুধুমাত্র ১৪৪ ধারায় চারজনের বেশী একসঙ্গে চলাফেরার ওপরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

দোকানপাট, বাজারঘাট সকালে ঘণ্টা তিনেকের জন্য খোলা হয়।

কাশ্মীর থেকে বিবিসির সাংবাদিক রিয়াজ মাসরূর জানিয়েছেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ওই তিনঘণ্টার মধ্যেই কিনতে হয়।

মঙ্গলবার থেকেই ট্রেন চালু হয়েছে শ্রীনগর আর বারামুলার মধ্যে।

স্কুল খোলা আছে, তবে শুধু শিক্ষক শিক্ষিকারাই যান। ক্লাস টেন এবং টুয়েলভের যেহেতু বোর্ড পরীক্ষা আছে — তাদের পরীক্ষাগুলো হচ্ছে, অন্য ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে অভিভাবকদের সামনে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।

এই নতুন রুটিনে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু মাঝে মাঝেই বিক্ষোভের মাধ্যমে এটা টের পাওয়া যায় যে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ এখনও কমেনি। তথ্য-বিবিসি বাংলা

আজকের বাজার/এমএইচ