কুড়িগ্রামের কৃষকরা সূর্যমুখীর হাসিতে হাসছেন

কুড়িগ্রামে পতিত জমিতে সূর্যমুখীর চাষ স্থানীয় কৃষকদের আয় ও কর্মসংস্থানের এক নতুন পথ উন্মুক্ত করেছে। সূর্যমুখী ফুলের মাধ্যমে কোলস্টরেল মুক্ত তেল উৎপাদন করে ক্ষতিকর পামওয়েল ও সয়াবিনের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে ভোক্তারা রেহাই পেতে পারেন। স্থানীয়রা জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চর ও দ্বীপচরগুলোতে সহায়তার মাধ্যমে ব্যাপক জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনতে পারলে কৃষকদের ভাগ্য বদলে যাবে এবং স্থানীয় এলাকার চিত্র পাল্টে যাবে। শহরের সদর হাসপাতাল পাড়া এলাকার বাসিন্দা কৃষক আবু বকর সিদ্দিক ইউএনবিকে জানান, পতিত চরের জমিতে আগে তিনি কলা, বাঁধাকপি, ফুলকপি চাষ করেছেন। ‘এতে খরচও বেশি, কিন্তু সেই তুলনায় লাভ অনেক কম।’এবারই প্রথম কৃষি বিভাগের পরামর্শে ও সহযোগিতায় প্রথম সূর্যমূখী চাষ করেছেন। গত বছরের ২০ নভেম্বর সারি সারি করে চারা রোপন করেন। তিন মাসের মধ্যে ফুল দেয়া শুরু করেছে। চার মাসের মধ্যেই ফলন পাওয়া যেতে পারে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি সূর্যমুখী চাষে কৃষি বিভাগ থেকে ১০ কেজি বীজ ও সার হিসেবে ২৬ কেজি ইউরিয়া,২০ কেজি পটাশ, ২২ কেজি জিপসাম ও ২০ কেজি ড্যাপ পেয়েছেন। এছাড়াও জমি তৈরি, বীজ লাগানো, পরিচর্যা, পানি সরবরাহ করতে তার প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সূর্যমুখী চাষ দেখতে আসা কৃষক ওমর ফারুক, আবেদ আলী ও জামাল জানান, তারা খবর পেয়ে এখানে এসেছেন। ফলন দেখে তারা অভিভূত। লাভজনক ও স্বাস্থ্যসম্মত সূর্যমুখী চাষে তারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান প্রধান জানান, জেলার ১৬টি নদ-নদীকে ঘিরে ৫ শতাধিক চর ও দ্বীপচর রয়েছে। এসব চরে কৃষি বিভাগ পরীক্ষামূলকভাবে প্রতিবন্ধকতা সহনশীল ফসল চাষাবাদ করে পতিত জমিগুলোকে চাষাবাদের আওতায় আনার কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, ‘চলতি বছর কৃষকরা ৫৫ একর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমূখী চাষ করেছেন। ফলনও হয়েছে বাম্পার। সূর্যমুখী সয়াবিনের বিকল্প তেল হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে কোলস্টোরেল কম। এছাড়া পশুপাখির খাবারও সূর্যমুখী থেকে উৎপাদিত হতে পারে।’সূত্র-ইউএনবি

আজকের বাজার/আখনূর রহমান