কুমিল্লায় নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি

রমজানের শুরুতে নিত্যপণ্যের বাজারে দাম বাড়ার যে উত্তাপ ছড়িয়ে ছিল তা এখন কমতে শুরু করেছে। কিছুদিন আগের তুলনায় এখন বাজারে পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ বেড়েছে। দ্রব্যমূল্য কমে আসায় স্বস্তি ফিরে এসেছে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে কুমিল্লার বিভিন্ন হাটবাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের তৎপরতা বন্ধে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতরের ভ্রাম্যমাণ মোবাইল কোর্টের অভিযান প্রতিদিনই চালানো হচ্ছে।
কুমিল্লার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহ আগে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, দাম কমে এখন তার ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। একইভাবে আদার দাম কমে ১৪০-১৫০ টাকা, প্রতিকেজি চিনিতে ৪ টাকা কমে ৫৫-৬০, ভোজ্যতেলে প্রতি লিটারে ৫ টাকা এবং ডালে মানভেদে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত দাম কমে গেছে।
এবার কুমিল্লায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধান কাটা প্রায় শেষ হয়ে আসায় চালের বাজারেও স্বস্তি ফিরে এসেছে। করোনাভাইরাসের শুরুতে প্রতি কেজি চালে ৮-১২ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে যায়। এখন চালের দাম কমতে শুরু করেছে। সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় স্বর্ণা ও চায়না ইরি খ্যাত মোটা চাল মানভেদে কেজিতে ২-৪ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। এছাড়া মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা ৪৮-৫৪ এবং সরু নাজিরশাইল ও মিনিকেট ৫৫-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে।
কুমিল্লা রাজগঞ্জ বাজারের চাল ব্যবসায়ী মো. তফাজ্জল বাসস’কে বলেন, সরবরাহ বাড়ায় চালের দাম কমে গেছে। বিশেষ করে নতুন ধান উঠায় এর একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাজারে। এবার ফলন ভাল হওয়ায় চালের দাম আরও কমবে।
এছাড়া আজ কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরবরাহ বাড়ায় সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার নাগালে এসে কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে শাক-সবজির দাম। প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা, করলা ২০ থেকে ৩০ টাকা, গাজর বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কচুরলতি ৩৪ থেকে ৪০ টাকা, বড় কচু ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, বেগুন (প্রকারভেদে) ৪০ থেকে ৬০ টাকা। শসা বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে, কেজিতে ২০ টাকা কমে প্রতিকেজি ধনিয়া পাতা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, কেজিতে ৪০ টাকা কমে পুদিনা পাতা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। নিম্নমুখী দেখা গেছে মাছ ও মুরগির বাজারে।
শহরের বাদশা মিয়া বাজাওে দেখা গেছে, দাম কমেছে মাছের বাজাওে, ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমে প্রতিকেজি কাঁচকি ৩০০ টাকা কেজি দরে, মলা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, ছোট পুঁটি (তাজা) ৫০০ টাকা, শিং (আকারভেদে) ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ২৩০ থেকে ৩৫০ টাকা, মৃগেল ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঙ্গাস ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, কাতল ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
তবে বাজারে গরু ও খাসির মাংসের দাম না কমলেও কমেছে মুরগির দাম। বাজারে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংস। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৭০০ টাকা কেজি দরে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়, সাদা লেয়ার ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। প্রতি কেজি সোনালিকা মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা।
কুমিল্লা বাজারে খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকা লিটার, সাদা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা লিটার। ৫ লিটারের ক্যান ৪৯০-৫২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত রয়েছে সরিষার তেল। খোলা সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা লিটার।
কুমিল্লার রাণীর বাজারের ক্রেতা আলমগীর হোসেন বাসস’কে বলেন, কাঁচা বাজারের বর্তমানে সবজিসহ অন্য নিত্যপণ্যের দাম কমায় ভাল লাগছে। ঈদের আগে যেন আবার পণ্যদাম না বাড়ে সেদিকে সরকারের মনিটরিং বাড়ানো প্রয়োজন।