কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে ২১৯টি পদের মধ্যে ১২৪টিই শূন্য

কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে জনবল সংকট চরমে পৌঁছেছে। বোর্ডের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ের ২১৯টি পদের মধ্যে ১২৪টি পদই শূন্য। যা অর্ধেকেরও বেশি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অনেক বছর ধরে লোকবল নিয়োগ না দেওয়ায় এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অবসরে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

বোর্ডের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে লোকবলের সংকটের মধ্যে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে বোর্ডের বর্তমান কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের। তারপরও স্বাভাবিক কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। সময় মতো সেবা পাচ্ছে না বোর্ডের অধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগ নিয়ে (১৫টি জেলা) ১৯৬২ সালে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি কক্সবাজার জেলা নিয়ে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ২০০১ সালে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলা নিয়ে সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড স্থাপিত হয়। এভাবে এক সময়ের বৃহৎ এলাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড সময়ের প্রয়োজনে তিন টুকরো হয়ে এর অধীভুক্ত এলাক হ্রাস পেয়ে ছোট হয়ে যায়। বর্তমানে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষীপুর- এ ৬টি জেলা নিয়ে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের কার্যক্রম চলছে।

বোর্ড সূত্র জানায়, বর্তমানে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীর অনুমোদিত পদের সংখ্যা ২১৯টির মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে ১২৮টি পদ শূন্য রয়েছে। শূন্য পদগুলোর প্রথম শ্রেণির ২৪টির মধ্যে ৬টি, দ্বিতীয় শ্রেণির ১৯টি পদের মধ্যে ১১টি, তৃতীয় শ্রেণির ১১৫টি পদের মধ্যে ৮১টি এবং চতুর্থ শ্রেণির ৬১টি পদের মধ্যে ২৬টি পদ শূন্য রয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, প্রথম শ্রেণির পদগুলোর মধ্যে অডিট অফিসার, তথ্য কর্মকর্তা, ক্রীড়া কর্মকর্তা, প্রোগ্রামার, সহকারী প্রোগ্রামার ও সহকারী মেইনটেনেন্স ইঞ্জিনিয়ারের ১টি করে পদ শূন্য। দ্বিতীয় শ্রেণির পদের মধ্যে সহকারী সচিব, সহকারী কলেজ পরিদর্শক, চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব, সহকারী ক্রীড়া কর্মকর্তা, নিরাপত্তা কর্মকর্তা, সহকারী গ্রস্থাগ্রারিক, উপসহকারী প্রকৌশলী ও ডাটা এন্ট্রি কম্পিউটার অপারেটরর ১টি করে পদ শূন্য রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা জানান, প্রকৌশলী, তথ্য, ক্রীড়া, একান্ত সচিব, নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও সহকারী গ্রস্থাগারিকের পদগুলো শূন্য থাকার কারণে বোর্ডের সার্বিক কাজের উপর চাপ পড়েছে। একজন উপসচিব (একাডেমিক) দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত ক্রীড়া কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। তথ্য কর্মকর্তার পদ শূন্য থাকায় বোর্ডে সেবা নিতে আসা লোকজন বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়লেও এখানে ডাটা অপরেটরসহ কম্পিউটার শাখায় জনবল সংখ্যা কম।

তাই অবিলম্বে সকল শূন্য পদ পূরণ করে সেবা প্রত্যাশীদের ভোগান্তি কমানোর আহ্বান জানান সংশ্লিষ্টরা।

কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অবসরে যাচ্ছেন, তাই প্রতি বছরই লোকবল কমছে, বহু পদ শূন্য হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। তথ্যসূত্র-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ