কৃষকদের উদ্যোক্তা বানাতে কাজ করে যাচ্ছে সিভিসিএফএল

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য সিভিসিএফএল। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান আজকের বাজার ও এবিটিভি’র সঙ্গে অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। আলোচনার চুম্বক অংশ তাঁরই ভাষায় আজকের বাজারের পাঠকের জন্য প্রকাশ করা হলো।

নন ব্যাংকিং আর্থিক খাতে আমাদের বর্তমান অবস্থার কথা যদি বলতে হয় তাহলে আমি বলবো এই মুর্হুর্তে বাংলাদেশে ৩৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্মরত আছে। আরো ১টি মাস খানেকের মধ্যে কাজ শুরু করবে। আমাদের প্রতিষ্ঠানটি নামটা একটু বড় বলে আমরা কাস্টমাইজ করে সিভিসিএফএল নামে এই সেক্টরে কাজ করছি। আমরা লাস্ট জেনারেশন এর প্রতিনিধি করে কাজ করছি। আমি ২৯ বছর আগে এই সেক্টরে কাজ শুরু করি। তখন ছোট্ট পরিসরে আমি কাজ শুরু করেছিলাম। তখথন কেউ আমাদের চিনও না, বুঝত না। আজ এই দীর্ঘ পরিক্রমায় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ইকোনমি সেক্টর হিসেবে দৃশ্যমান। আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের অবদান অনস্বীকার্য। আমাদের ইনভেস্টমেন্ট পোর্টফলিও বাড়ছে। আমরা যদি গত দুই বছরের বা তিন বছরের হিসাবের দিকে তাকাই যেটা সামগ্রীক ভাবে ব্যাংকিং বা এফআই সেক্টরে নতুন ইনভেস্টমেন্ট বাড়ছে, প্রত্যেকের পোর্টফোলিতও বাড়ছে। কিন্তু আমরা এখন কেনাবেচা নিয়ে ভাবছি। এই সেক্টরের সবচে বড় চ্যালেঞ্জ যেটা আমরা ১০ থেকে ১২ বছর ধরে দেখে আসছি, সেটা হলো আমাদের ডিরেক্ট সোর্স এর সীমাবদ্ধতা। একজন কায়েন্ট যখন ব্যাংক থেকে লিজ নেয় তখন ট্যাক্স বেনিফিট প্রথমে ছিল কিন্তু এখন নেই। যার ফলে ব্যাংকের সংঙ্গে সরাসরি আমাদের প্রতিযোগিতা হচ্ছে। এই কারণে আমরা মার্কেটে টিকতে পারিনা । আমরা যারা নতুন কোম্পানী তারা এখনো ডিপোজিটের ওপর কাস্টমারের আস্থা আনতে পারিনি। কাস্টমারের আস্থা আনতে আমরা কাজ করতে হচ্ছে। আমরা যখন ডিপোজিট অফার করি তখন আমাদের রেট বাড়াতে হচ্ছে। ব্যাংক রেট দেয় ৬ আর আমরা লিজিং কোম্পানী ৮ সাড়ে ৮ দিতে হচ্ছে। এর উপর আমাদের যাওয়ার সুযোগ নেই। সুতরাং আমাদের প্রতিযোগীতায় টিকতে এর বাইরে যেতে পারি না। সেকারণে ডিপোজিটের ওপর আস্থা তৈরি করতে পারিনি। আবার আমাদের ওপর নানান বিধি নিষেধ আছে। আমাদের কারেন্ট একাউন্ট বা অন্য কিছু নেই, কিন্তু ব্যাংকে কারেন্ট একাউন্টসহ আরো কয়েকটি অপশন থাকার ফলে ব্যাংক যে সুবিধাগুলো পাই আমরা তা পাই না। আমাদের এই সব সুবিধাগুলো দিলে আমরা মার্কেটে টিকে থাকতে পারবো। আমাদের সমস্যাগুলো নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলাপ করেছি, কিন্তু তারাও সরাসরি কিছু বলতে পারেনি। আমরা সরকারী ফান্ড পেলে আমাদের সুবিধা হয়।

বিজনেস গ্রোথকে ফিট করার জন্য আমার যে পরিমান ফান্ড দরকার সেই পরিমান ফান্ড আমরা মোবিলাইজ করতে পারছি না।

আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে আমরা আমরা কনভেশনাল ব্যবসার বাইরে নতুন কিছু করতে চাই। অনটারনেটিভ ইনভেন্টস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানীর করতে চাচ্ছি। যেটার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পারমিশনও পেয়েছি। এটার মাধ্যমে ভেনচার ক্যাপিটাল, ইনপ্যাক্ট ইনভেখসমেন্ট বাংলাদেশে বিশাল প্রসপেক্ট। একটা দেশের অর্থনীতি যতবেশি ডেভেলপ করবে তত বেশি তার ফিন্যালসিয়াল তত উন্নত হবে। অথচ বাংলাদেশে ভেনচার ইনভেসমেন্ট আইনটাই সরকার ২০১৫ সালে করেছে। ইতিমধ্যে কয়েখটি প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স পেয়েছে। দুনিয়া জোড়া ভেনচার ইনভেস্টমেন্টে কাজ হচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত তেমন করে কাজ হচ্ছে না। আমরা কৃষি সেক্টরে কাজ করতে চাই। উত্তর বঙ্গ দুটি জেলায় আমরা কাজ করবো। সার, জৈব সার, মাছ চাষ, কৃষককে ট্রক্টর দিয়ে সাহায্য করবো। এখানে আমরা ব্যবসায়ীক ভাবে আর্থিখ সফলতা না পেলে ১০ বছর পরে একটা পরিবর্তন দেখতে পাবো। সুফল পেলে জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়বে আমাদের উদ্যেগ। আমরা রুরাল ইকোনমিক্যাটাকে টার্গেক করেছি। যেখানে কৃষকই প্রধান। কৃষককে এমপাওয়ার করতে চাচ্ছি।  এরপর যাদের নতুন নতুন আইডিয়া আছে কিন্তু মূলধন নেই আমরা তাদের নিয়ে কাজ করবো।

আমরা শুনে থাকবো বিশ্বে লো কস্ট হাউজিং কনসেপ্ট কাজ করে, বাংলাদেশে গোছানো নেই। আমরা বাংলাদেশে এফোডেবল হাউজিং নামে কাজ করবো। ঢাকার আশে পাশে কাজ শুরু করবো।

বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির জন্য ফ্যাট কেনার সুযোগ করে দেবো। যাদের বেতদন ১৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা বেতন পায়। তারা ৯ থেকে ২৫ লাখে তারা ফ্্যলাট এর মালিক হবে। ২০ বছরের মধ্যে টাকা শোধ করতে পারবে। ঢাকার বাইরে অনেকের জমি আছে কিন্তু টাকার অভাবে, ব্যাংক লোন এর অভাবে তারা বাড়ি করতে পারছে না। আমরা এখানে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি। এখানে যে সব ফ্যাক্টরি আছে, বিশেষ করে গার্মেন্টস কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করতে চাচ্ছি। এখানে ব্যবসাই আমরা মূল হিসেবে দেখতে চাচ্ছি না। আমাদের দেশের গার্মেন্টস কর্মীদের জীবনে একটু স্বত্তির সুবাতাস দিতে চেষ্টা করতে পারছি।

এছাড়াও আমরা আরো কয়েকটি ইস্যু নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছি, যেমন সন্তানের ভার্সিটির টিউশন ফি জমার দেওয়ার নির্দিষ্ট টাইমের মধ্যে দিতে সহায়তা করবো। সন্তান কানাডায় পড়াশুনা করছে, এখানেও আমরা তাকে টিউশন ফি জমা দেওয়ার ব্যাপারে সহায়তা করবো। এ রকম আরো কিছু উদ্যেগ আমরা নিবো।
আমরা আশা করি, আমরা এই সেক্টরে সফল হতে পারবো। সেক্ষেত্রে আমরা লো কস্ট ফান্ড পাবো।

আজকের বাজার: আরআর/ ২৭ এপ্রিল ২০১৭