শহীদ মিনারে ভাষা সৈনিক হালিমা খাতুনকে শেষ শ্রদ্ধা

শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ভাষা সৈনিক হালিমা খাতুনের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়েছে।

বুধবার (৪ জুলাই) সকাল ১১টায় তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়।

এরপর বাদ যোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।

হৃদরোগ, রক্তদূষণ, কিডনি সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতা নিয়ে গত শনিবার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন ভাষা সৈনিক হালিমা খাতুন।

মঙ্গলবার (৩ জুলাই)তিনি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

কলেজ জীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় ভাষা আন্দোলনের প্রস্তুতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন হালিমা খাতুন। এরপর ১৯৫১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। সেসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রোকেয়া খাতুন ও সুফিয়া খানের সঙ্গে হালিমা খাতুন যোগ দেন ‘হুইসপারির ক্যাম্পেইনে’। এ ক্যাম্পেইনে ছাত্রীদের কাজ ছিলো ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া এবং ছাত্রীদেরকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করা।

১৯৫২’র সেই ঐতিহাসিক দিনে সবাই আমতলায় সমবেত হন। আর এই দিনে ছাত্রীদের দায়িত্ব থাকে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রীদের আন্দোলনে শামিল করা। এই দিনে হালিমা খাতুনের ওপর দায়িত্ব থাকে মুসলিম গার্লস স্কুল ও বাংলা বাজার গার্লস স্কুলের ছাত্রীদের আমতলায় নিয়ে আসার।

১৪৪ ধারা ভাঙার পক্ষে বক্তব্য দেয়ার পরপরই ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগানে স্লোগানে কেঁপে ওঠে চারদিক। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৪৪ ধারা ভেঙে প্রথম বের হয় মেয়েদের একটি দল। আর এই দলের সদস্য থাকে চারজন। জুলেখা, নূরী, সেতারার সঙ্গে ছিলেন হালিমা খাতুনও।

হালিমা খাতুন ১৯৩৩ সালের ২৫শে আগস্ট বাগেরহাটের বাদেকাড়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

১৯৫৩ সালে খুলনা করোনেশন স্কুল এবং আরকে স্কুলে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। এর কিছুদিন পর রাজশাহী গার্লস কলেজে অধ্যাপনার পর যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে। সেখান থেকে ১৯৯৭ সালে অবসর নেন হালিমা খাতুন। জাতিসংঘের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন এই ভাষা সৈনিক।

ভাষা আন্দোলনে সাহসী ভূমিকা এবং সাহিত্যে তাঁর অবদানের স্বীকৃতির জন্য বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি থেকে ভাষা সৈনিক সম্মাননা দেয়া হয় তাকে। এছাড়া লেখিকা সংঘ পুরস্কারসহ বিভিন্ন সময় নানা সম্মানে ভূষিত হন হালিমা খাতুন।

আরজেড/