কে হবে বিশ্বসেরা?

লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোদের পেছনে ফেলে এবারের ব্যালন ডি অর জিতেছিলেন লিভারপুলের ভার্জিল ভ্যান ডাইক। ফিফার বর্ষসেরা হওয়ার দৌড়েও এগিয়ে আছেন এই ডাচ ডিফেন্ডার

২০১৬ সাল থেকে ‘বেস্ট ফিফা অ্যাওয়ার্ডস’ দেওয়া শুরু করে ফিফা। প্রথম দুইবার এই পুরস্কার জেতেন রোনালদো। গতবার এটা উঠেছিল লুকা মদ্রিচের হাতে। তিনবারই এই পুরস্কার জিতেছেন ওই বছরের ব্যালন ডি অর জয়ী ফুটবলার।

দেখে নেওয়া যাক, ‘ফিফা বেস্ট’ হওয়ার দৌড়ে কে কোথায় আছেন!

লিওনেল মেসি

অনেকের মতেই গতবার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা মৌসুম কাটিয়েছেন মেসি। পুরো মৌসুমে ৫১ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ৫০টি। অনেক ম্যাচে বার্সেলোনাকে বিপদের হাত থেকে উদ্ধার করছেন। স্বীকৃতিস্বরূপ লা লিগা ও ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার উঠেছে তাঁর শোকেসে। ব্যক্তিগত দিক দিয়ে মৌসুমটা উজ্জ্বল কাটলেও দলগত দিক দিয়ে তেমন সফলতা পাননি এ আর্জেন্টাইন তারকা। সেটি ক্লাব বা আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই।

গত মৌসুমের শুরুতে সুপার কাপ জেতা বার্সেলোনা ‘ট্রেবল’ জয়ের স্বপ্নে বিভোর থাকলেও সন্তুষ্ট থাকতে হয় লিগ নিয়েই। মেসির অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের সুফল শুধু লিগেই নিতে পেরেছে বার্সা, চ্যাম্পিয়নস লিগ আর কোপা ডেল রে আর জেতা হয়নি। আর্জেন্টিনাও কোপা আমেরিকার সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়েছে এ বছর। জাতীয় দলের হয়ে ট্রফি–খরা এবারও ঘোচাতে পারেননি মেসি। এত কিছুর পরও মেসি যদি ইউরোপের বর্ষসেরা খেলোয়াড় হতে না পারেন, তাহলে সেটি হবে এ ট্রফিগুলো জিততে না পারার জন্য। গতবার এই পুরস্কার পাওয়ার দৌড়ে পঞ্চম অবস্থানে ছিলেন মেসি।

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো

ট্রফির বিচারে মেসির চেয়ে ভালো মৌসুম কাটিয়েছিলেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদো। জুভেন্টাসের হয়ে সুপার কাপ জিতে মৌসুম শুরু করে পরে মেসির মতো লিগ জিতেছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মেসিকে আবার ছাড়িয়েও গেছেন এই পর্তুগিজ তারকা। নতুন চালু হওয়া উয়েফা ন্যাশনস লিগ জিতেছেন পর্তুগালের জার্সিতে। দলগত দিক দিয়ে সফল মৌসুম কাটালেও ব্যক্তিগত দিক দিয়ে কিন্তু অত দুর্দান্ত ছিলেন না রোনালদো। গোটা মৌসুমে ৪৩ ম্যাচ খেলে ২৮টা গোল করেছিলেন। গত এক দশকে এই প্রথম ত্রিশের কম গোল করলেন পর্তুগিজ তারকা। গতবার দ্বিতীয় হওয়া রোনালদো এবার এ কারণেই হয়তো একটু পিছিয়ে আছেন!

ভার্জিল ফন ডাইক

ডিফেন্ডার হিসেবে প্রিমিয়ার লিগের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন ফন ডাইক। লিভারপুলের জার্সিতে কী অসাধারণ মৌসুম কাটিয়েছেন এই ডিফেন্ডার, এই একটা তথ্যেই যথেষ্ট। দেড় বছর আগে লিভারপুলে যখন যোগ দিলেন, অল রেডদের রক্ষণভাগ নিয়ে সবাই হাসাহাসি করত। সে অবস্থা থেকে লিভারপুলের রক্ষণভাগ যে আজকে তর্কযোগ্যভাবে ইউরোপের সেরা, তার পেছনে মূল কৃতিত্ব এই ডাচ সেন্টারব্যাকের। ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে গত ৬৪ ম্যাচে ফন ডাইককে ড্রিবলে পরাস্ত করে কেউ গোল করতে পারেননি, ভাবা যায়!

একটুর জন্য লিগ শিরোপা জেতা না গেলেও গত মৌসুমে ফন ডাইক লিভারপুলকে জিতিয়েছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ। কিছুদিন আগে জিতলেন উয়েফা সুপার কাপও। বিশ্বকাপ না খেলতে পারা নেদারল্যান্ডসকে ন্যাশনস লিগের ফাইনালে ওঠানোর পেছনে অধিনায়ক ফন ডাইকের ভূমিকা ছিল অনেক। কিছুদিন আগে পেয়েছেন উয়েফার বর্ষসেরার পুরস্কার। ইউরোপ সেরা হওয়ার দৌড়ে মেসি-রোনালদোর চেয়ে তাই কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই ফন ডাইক।

আজকের বজার/লুৎফর রহমান