কোয়ার্টার ফাইনালের আগে এ্যাথলেটিকোর দুজন করোনা শনাক্ত

স্প্যানিশ জায়ান্ট এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের দু’জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে আরবি লিপজিগের বিপক্ষে মাঠে নামার চারদিন আগে করোনার এই আঘাতে স্বাভাবিক ভাবেই এ্যাথলেটিকো শিবিরে দু:শ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। একইসাথে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আট-এর আগে একটি বাঁধা পড়লো।
ক্লাবের এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে অংশগ্রহণের আগে উয়েফার প্রোটোকল অনুযায়ী মূল দলের সকল খেলোয়াড় ও স্টাফদের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আজ আমরা রিপোর্টের ফলাফল হাতে পেয়েছি। ফলাফল অনুযায়ী দুজন খেলোয়াড়ের দেহে করোনার সংক্রমন ধরা পড়েছে এবং তাদেরকে নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে।’
যদিও এ্যাথলেটিকোর পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়নি যে পজিটিভ হওয়া দুজন খেলোয়াড় কিংবা ব্যাকরুম স্টাফ কিনা। এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ জানিয়েছে ইতোমধ্যেই বিষয়টি তারা উয়েফার পাশাপাশি স্প্যানিশ ও পর্তুগীজ ফুটবল এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জানিয়ে দিয়েছে। লিসবনে যাবার আগে নতুন করে আবারো খেলোয়াড় ও স্টাফসহ পুরো দলের পরীক্ষা করা হবে। তারা স্বীকার করেছে এর ফলে শেষ মুহূর্তে ট্রাভেল সিডিউলসহ পর্তুগালের আবাসন পরিকল্পনাও পরিবর্তন আনা হবে। বিবৃতিতে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘উয়েফার সাথে ইতোমধ্যেই নতুন সিডিউল নিয়ে সমন্বয় করা হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব সব কিছুই গণমাধ্যমে জানানো হবে।’ পজিটিভ হওয়া দুজনের পরিচয় জানানো নিয়েও যথাসম্ভব শ্রদ্ধাশীল হবার আহবান জানানো হয়েছে।
আগামী ১২ আগস্ট থেকে পর্তুগালের লিসবনে শুরু হতে যাচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বদলে যাওয়া ফর্মেটের শেষ পর্ব। ফাইনাল এইট নামে পরিচিত চূড়ান্ত পর্বে এবার সিঙ্গেল লেগ পদ্ধতিতে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। লিপজিগের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচ খেলতে সোমবার পর্তুগাল সফরে যাবার কথা ছিল এ্যাথলেটিকোর। সবগুলো ম্যাচই হবে দর্শকশুন্য স্টেডিয়ামে। আগামী ২৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে এবারের আসরের ফাইনাল ম্যাচ।
করোনা মহামারীতে এ পর্যন্ত ইউরোপের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দেখেছে স্পেন। দেশটিতে তিন লাখেরও বেশী আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ৫০০ জনের। যদিও এক মাস পুরো দেশ লকডাউন থাকার পর প্রায় সব ক্রীড়াই পুনরায় মাঠে ফিরেছে। নতুন করে দ্বিতীয় পর্যায়ে সম্প্রতি আবারো সংক্রমনের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি স্থানীয়ভাবে লকডাউনের আওতায় বাস্ক কান্ট্রি, ক্যাটালোনিয়া ও এ্যারাগোনাকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বেশ কিছু ব্যস্ত এলাকার মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
গত মাসে এ্যাথলেটিকোর নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ তাদের ফরোয়ার্ড মারিয়ানো দিয়াজের করোনা পজিটিভের খবর নিশ্চিত করেছিল। সেভিয়াও তাদের এক খেলোয়াড়ের দেহে করোনা সংক্রমনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে, যদিও তার নাম প্রকাশ করা হয়নি। রিয়াল ইতোমধ্যেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে গেলেও সেভিয়া এখনো ইউরোপা লিগে টিকে রয়েছে। আগামীকাল কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানীর ডুইসবার্গে সেভিয়ার প্রতিপক্ষ ইংলিশ ক্লাব উল্ফস।
মার্চ থেকে করোনার কারনে বন্ধ থাকার পর শুক্র ও শনিবার পুনরায় শেষ ১৬’র দ্বিতীয় লেগের বাকি থাকা ম্যাচগুলো দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মাঠে গড়িয়েছে।
রোববার দেয়া বিবৃতিতে এ্যাথলেটিকো নিশ্চিত করেছে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনেই তারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে যাবে। গত ১৯ জুলাই লা লিগা শেষ হবার পর ২৬ জুলাই ও ২ আগস্ট দুই ধাপে খেলোয়াড়দের করোনা পরীক্ষা করা হয়।
ফাইনাল এইটকে সামনে রেখে উয়েফা কঠোর স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশ দিয়েছে। প্রতিটি দলকে পর্তুগাল সফরের আগে টেস্টের ফলাফল দেখাতে হবে। এমনকি প্রথম ম্যাচের আগে আবারো তাদের পরীক্ষা করা হবে। প্রতিটি পজিটিভ খেলোয়াড়কে সেল্ফ আইসোলেশনে পাঠানো হবে।